Pankaj Tripathi

অন্যের কথা আগে ভাল করে শুনি: পঙ্কজ ত্রিপাঠী

চলতি বিতর্কের মাঝে শান্ত জবাব পঙ্কজ ত্রিপাঠীর।

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০২:৫০
Share:

পঙ্কজ ত্রিপাঠী।

লকডাউন তাঁকে এনে দিয়েছিল কাঙ্ক্ষিত ছুটি। টানা কাজ করে হাঁপিয়ে ওঠা পঙ্কজ ত্রিপাঠী গত ক’মাস বাড়িতে অবসর উপভোগ করেছেন চুটিয়ে। সামনেই মুক্তি পাচ্ছে ‘মির্জ়াপুর’-এর দ্বিতীয় সিজ়ন। সিরিজ়ের ‘কালীন ভাইয়া’ লকডাউনেই সেরেছিলেন পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ। ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস’-এর পরের সিজ়নের শুটিংও। বাড়ি থেকে খাবার আর জল নিয়েই সেটে যাচ্ছেন অভিনেতা। ‘‘আমার কাছে নিজের ও বাকি সকলের সুরক্ষাটাই সবচেয়ে আগে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মেনে চলাই ভাল,’’ কাজে ফেরা প্রসঙ্গে বললেন পঙ্কজ।

Advertisement

দ্বিতীয় সিজ়নে ‘মির্জ়াপুর’ আরও জটিল, তাঁর চরিত্রের দ্বন্দ্ব ও গভীরতাও বেশি— জানালেন অভিনেতা। গল্পে যে জায়গা দেখানো হয়, তার ২-৩ কিলোমিটারের মধ্যেই পঙ্কজের গ্রামের বাড়ি। ‘‘কালীন ভাইয়ার মতো মানুষদের চোখের সামনে দেখে, সংবাদপত্রে তাঁদের কথা পড়ে বড় হয়েছি। তাই চরিত্রটা আমার খুব চেনা।’’ নিত্যদিনের ‘স্লাইস অব লাইফ’ হোক কিংবা কমেডি— এমন চরিত্রই করতে পছন্দ করেন পঙ্কজ, যা তাঁকে ‘এনগেজড’ রাখবে। তাঁর পারফরম্যান্স কি অন্যদের কোণঠাসা করে দেয়? ‘‘আমাকে সকলে ভালবাসেন বলে এমনটা বলেন। আমি তো নিজের কাজ করি। আর সকলে মিলে সিনেমা হয়, কোনও একজনের পারফরম্যান্সের উপরে ভিত্তি করে নয়,’’ বিনয় তাঁর গলায়।

খবরের কাগজ নিয়মিত পড়া হয় না তাঁর, স্বীকার করলেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনিয়মিত। ‘‘লকডাউনের শুরুতে ফ্যানদের অনুরোধে লাইভে আসতাম, গল্প শোনাতে। এমনিতে এ সবের চেয়ে আমি শতহস্ত দূরে,’’ বললেন তিনি।

Advertisement

ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে একের পর এক বিতর্কের আঁচ থেকেও দূরে পঙ্কজ। ‘নেপোটিজ়ম’ বিতর্ক প্রভাবিত করেছিল তাঁর সাম্প্রতিক রিলিজ় ‘গুঞ্জন সাক্সেনা’কে। আসন্ন ‘মির্জ়াপুর টু’ও নেটিজ়েনদের একাংশের বয়কটের মুখে, আলি ফজ়লের সিএএ বিরোধী মন্তব্যের জেরে। ‘‘এখন শোরগোল বড্ড বেশি। সকলে চিৎকার করছে, নিজের বক্তব্য গলা ফাটিয়ে জাহির করছে। ডিবেট করতে গেলেও যুক্তি লাগে, শান্ত হয়ে তর্ক করা যায়। এখন সে সবের বালাই নেই। মানুষের কাজ কমে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভিটি বেড়ে গিয়েছে। এখানে অন্যকে বোঝা যেমন মুশকিল, বোঝানো তার চেয়েও কঠিন। তাই আমি চেষ্টা করি, অন্যের কথা আগে ভাল করে শুনতে।’’

তবে বিতর্কে ইন্ডাস্ট্রির ইমেজ যে খুব সুখকর জায়গায় নেই, সে সম্পর্কে সচেতন পঙ্কজ। বললেন, ‘‘আমার গ্রামের যে ষাটোর্ধ্ব মানুষটি হিন্দি ছবি দেখেন, তিনি কিন্তু জানেন না, একটা ফিল্ম তৈরির নেপথ্যে কী কী চলে। তাই সব কিছুকে সাদা-কালো, ঠিক-ভুল— এই ভাবে জেনারালাইজ় করে দেওয়া বোধহয় উচিত নয়।’’

তথাকথিত ‘আউটসাইডার’ এবং ১৪-১৫ বছরের স্ট্রাগলের পরেও নিজের অভিজ্ঞতাকে খারাপ বলতে নারাজ পঙ্কজ। ‘‘চল্লিশ বছর বয়স পেরিয়ে আমি সুযোগ পেয়েছি। একটা দরজা খুললে, বাকিগুলোও খুলতে শুরু করে। কালীন ভাইয়ার মতো চরিত্র যে আমাকে অফার করা যায়, আগে ভেবেছিলেন কেউ?’’

তাঁর ইন্টারভিউয়ের নানা ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ছড়ানো। ‘‘সে সব দেখে কমবয়সি ছেলেমেয়েরাই নানা প্রশ্ন করে আমায়। শিখতে চায়। চেষ্টা করি, আমার পারফরম্যান্সের মাধ্যমে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার।’’

এ বার পুজোয় কলকাতায় আসা হচ্ছে না এ শহরের জামাইয়ের। খবর পেয়েছেন, শ্বশুরবাড়ির পাড়া ভবানীপুরে এ বার পুজোর আড়ম্বর ততটা নেই। বললেন, ‘‘এমনিতে বছরে তিন বার কলকাতা ট্রিপ আমার বাঁধা। তবে এখন ট্রাভেল করতে সাহস করছি না। সকলকে দূর থেকেই ‘শুভ বিজয়া’ বলব এ বার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement