নীল ভট্টাচার্য ও তৃণা সাহা
১২ বছরের বন্ধুত্ব। একে অপরের খুঁটিনাটি জানেন তাঁরা। তার পরে বিয়ে। ৭ মাস কেটে গিয়েছে দাম্পত্যের। টেলিপাড়ার জনপ্রিয় তারকা যুগল তাঁরা। তৃণা সাহা এবং নীল ভট্টাচার্য। ছোটপর্দায় তাঁদের আলাদা আলাদা সংসার দেখতে অভ্যস্ত দর্শক। কখনও ‘খড়কুটো’, কখনও আবার ‘কৃষ্ণকলি’। কিন্তু এই দুই তারকার ‘ঘর ঘর কি কাহানি’ কতটা জমজমাট?
আনন্দবাজার অনলাইনকে তাঁর আর নীলের দাম্পত্যের অন্দরমহলে নিয়ে গেলেন তৃণা।
শ্বশুরবাড়িতে বেশ খোশমেজাজেই থাকেন তৃণা। বাড়িতেও যেমন এক গ্লাস জল নিয়ে খেতেন না, নীলের মাও তাঁর বৌমাকে খাটাখাটনি থেকে দূরে রাখতে চান। নিজের মেয়ের মতো আগলে রাখেন তৃণাকে। কোনও কিছুর অভাব বোধ করেন না নায়িকা। তাও বাপের বাড়ির গন্ধই যেন আলাদা। নিজের বালিশ, নিজের ঘর, নিজের মা-বাবার জন্য মন খারাপ করে মাঝে মাঝেই। এই অনুভূতি তো আর সব কিছুর থেকে আলাদা।
নীল-তৃণার বিয়ের অনুষ্ঠান
রান্না করতে ভালবাসেন তৃণা। কিন্তু হাতে সময় থাকে না। সারা দিন শ্যুট করে আসার পরে রান্নার শখ ভুলে যেতে হয়। তবে ছুটি থাকলেই তিনি রান্না করেন। বাড়িতে বন্ধুবান্ধব এলে রকমারি সুস্বাদু খাবারের গন্ধে তাঁদের বাড়ি ম ম করে। নীলের পছন্দ মতো দেশ-বিদেশের মিষ্টি বানান তৃণা।
আর নীল? তৃণার কথায়, ‘‘ও রান্নাঘরে যাওয়ার থেকে না যাওয়া ভাল।’’ গ্যাসের থেকে শত হস্ত দূরে থাকেন অভিনেতা। কিন্তু তা বলে স্ত্রীকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে খামতি নেই তাঁর। বাসন মাজায় তিনি নাকি খুবই পটু। সব থেকে বড় কথা, এই কাজটি তিনি ভালবেসেই করেন।
লকডাউনের সময়ে যখন বাড়িতে পরিচারিকা ছিলেন না, নিজেরাই সব কাজ করেছেন। তৃণা রান্না করলে নীল বাসন মাজতেন। আরও একটি কাজ তাঁর বাঁ হাতের খেল। তৃণা বললেন, ‘‘যে কোনও রকম ঠাণ্ডা পানীয় বানানোর ব্যাপারে নীলের জুড়ি মেলা ভার। এটা বরং আমার দ্বারা হয় না।’’।
নীল-তৃণা
এ সব কথার মাঝে নিজের শ্বশুরের প্রশংসা করতে ভুললেন না অভিনেত্রী। ‘খড়কুটো’-র গুনগুন যেমন তাঁর শ্বশুরের গানে মুগ্ধ, তেমনই তৃণা তাঁর বাস্তব শ্বশুরের হাতে মুরগির মাংসের গুণমুগ্ধ।
তৃণা আবার নীলের প্রসঙ্গ এনে বললেন, ‘‘আমরা দু’জনেই দু’জনকে অনেকটা নিজস্ব সময় দিই। বাড়িতে যখন নীলের বন্ধুরা আসে, তারা ঘরে বসে আড্ডা মারে বা ভিডিয়ো গেম খেলে, খুব প্রয়োজন না পড়লে আমি সেই ঘরে যাই না। আমার বন্ধুরা এলেও নীল সে কথা মাথায় রাখে।’’ তা ছাড়া যদি নীলের কোনও দিন রাতে বাড়ি ফিরতে দেরি হয়, তৃণা তাঁকে ফোন করে বিরক্ত করেন না। কেবল নীল সুস্থ আছেন কিনা অথবা কোথায় আছেন ইত্যাদি খোঁজ নিয়েই ছেড়ে দেন। বেশির ভাগ সময়ে নীলই তাঁকে জানিয়ে দেন তিনি কোথায় আছেন।
কিন্তু এই ১২ বছরের বন্ধুত্ব ও প্রেমের পথচলায় মানুষের কুনজরও সহ্য করতে হয়েছে তাঁদের। তৃণা বললেন, ‘‘অনেকেই অনেক সময়ে আমার কাছে এসে নীলের সম্পর্কে কথা বলেছে। ভেবেছে আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক হবে। বিশেষ করে আমরা যে জগতে কাজ করি, সেখানে এ সব হামেশাই হয়। কিন্তু সফল হয়নি কেউ। কারণ আমার আর নীলের মধ্যে সেই বোঝাপড়া রয়েছে।’’ তৃণা নীলকে একটিই কথা বলেন, ‘‘আমাকে যেন কিছু শুনতে না হয় বাইরের কারও থেকে। তোমার জীবনে যা ঘটবে তা আমি আগে জানব। যাতে কেউ খারাপ কথা বলতে এলে বলতে পারি, আসল ঘটনার সম্পর্কে অবগত আমি।’’ আর সেটাই হয়। নীলও তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে সেটাই আশা করেন। সম্পর্কের স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী তারকা দম্পতি। তাই সবার আগে একে অপরের সঙ্গে কথা বলে নেন তাঁরা।