পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অর্পিতা মুখোপাধ্যায় প্রসঙ্গে কী বললেন তৃণা সাহা?
পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে শহর কলকাতা তোলপাড়। ২১ কোটি ২০ লক্ষ নগদ, প্রচুর গয়না, বিদেশি মুদ্রা এবং সম্পত্তির ৮টি দলিল পাওয়া গিয়েছে মডেল-অভিনেত্রীর কাছ থেকে। ইডি আটক করেছে অর্পিতাকে। গ্রেফতার মন্ত্রী, মহা সচিব পার্থ। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নড়ে বসেছেন শহরবাসী থেকে বিনোদন দুনিয়া। বিষয়টি নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে স্পষ্ট নিজের মতপ্রকাশ করেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী তৃণা সাহা। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ কাউকে ব্যবহার করে না। ইচ্ছের বিরুদ্ধে কেউ কাউকে ভুল পথেও নিয়ে যেতে পারে না। মনে রাখতে হবে, এক হাতে তালি বাজে না!’’
যত বার রাজনীতি আর বিনোদন দুনিয়ার মিলিত দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে তত বার প্রশ্ন উঠেছে, অভিনেতাদের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের খুল্লমখুল্লা যোগাযোগ আদতে শিল্প-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতা? ছোট-বড় পর্দার অভিনেতা, পরিচালক, কলাকুশলীদের সম্মাননা প্রদান সাধারণের চোখে ধুলো দেওয়া? কী বলছেন শাসকদল ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী? তৃণা চেনেন মডেল-অভিনেত্রীকে?
নায়িকার দাবি, তিনি একেবারেই চেনেন না অর্পিতাকে। ওঁর কোনও কাজের সঙ্গেও পরিচিত নন। এবং যেহেতু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে, তাই সবাই যা শুনছেন বা জানেন তিনিও ততটুকুই জেনেছেন। পাশাপাশি এও বলেছেন, ‘‘যে কোনও বড় প্রতিষ্ঠানের ভাল-মন্দ উভয় দিকই আছে। শিক্ষার্থীরা যেমন ভাল ফল করে তেমনি অনেকে অকৃতকার্যও হয়। তার মানেই স্কুল খারাপ নয়।’’ এই ঘটনাই সম্ভবত ঘটছে শাসকদলের সঙ্গে। তবে তাঁর পূর্ণ ভরসা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর উপরে। তৃণার বিশ্বাস, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যায়কে কোনও দিন প্রশ্রয় দেননি। আগামী দিনেও দেবেন না।
এর আগেও ইন্ডাস্ট্রির তাবড় তাবড় ব্যক্তিত্ব রাজনীতিতে এসেছেন, জড়িয়েছেন। ইদানীং বলা হচ্ছে, দুই মাধ্যম নাকি পরস্পরকে ‘ব্যবহার’ করছে! ‘ব্যবহার’ শব্দটিতে তীব্র আপত্তি ছোট পর্দার ‘গুনগুন’-এর। তাঁর মতে, এই বিশেষ শব্দটি ভীষণ নেতিবাচক। তার বদলে ‘সহযোগিতা’ শব্দ ব্যবহারের পক্ষপাতী তিনি। যুক্তিও দেখিয়েছেন, ‘‘আমরা সমাজে বাস করি। এখানে একা কেউ কিছুই করতে পারেন না। সবার সবাইকে প্রয়োজন। সবারই অন্যদের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। ফলে, আদানপ্রদান তো থাকবেই। সেই দিক থেকে দেখলে সব পেশার মানুষই কোনও না কোনও সময়ে একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একে ‘ব্যবহার’ করা হচ্ছে বলা যায় না।’’
এই প্রসঙ্গে তৃণার আরও দাবি, রাজনীতিবিদদের কেউই কাউকে বন্দুকের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়ে বলেননি, রাজনীতিতে যোগ দিতেই হবে। সবাই পরিণতবয়স্ক এবং পরিণতমনস্ক। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে ইচ্ছেমতো পথ বাছার স্বাধীনতা সবার রয়েছে। ফলে, কেউ কাউকে কোনও ভাবেই ব্যবহার করছেন না। ‘ইস্কাবনের বিবি’র খারাপ লাগে, যখনই কেউ বিপদে পড়লে বা ভুল পদক্ষেপ নিয়ে তারপর বলেন, তিনি ব্যবহৃত হয়েছেন। এ যেন নিজের ভুলে আড়াল টানা। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন তৃণা আর তাঁর স্বামী নীল ভট্টাচার্য। শুক্রবারের অঘটন কি ভয় পাওয়াচ্ছে তাঁদের?
নিজেকে নিয়ে এবং নিজের বেছে নেওয়া পথ নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই তৃণার। সাফ বলেছেন, ‘‘আমি কোনও ভাবে কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। কোনও ভুল পথে পা বাড়ানোরও ইচ্ছে নেই, আমার ভয় কিসে? আমি না চাইলে আমায় দিয়ে কেউ কোনও খারাপ কাজ করাতে পারবে না। নিজের উপরে এই আস্থা আমার আছে।’’