মান্যতা দত্ত। ২০০৩ সালে প্রকাশ ঝা-র ফিল্ম ‘গঙ্গাজল’-এ আইটেম ডান্স করে দর্শকদের নজরে এসেছিলেন তিনি। বলিউডে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে তারপর বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু জনপ্রিয়তা মেলেনি সে ভাবে। কিন্তু বলি ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর কাজ যতটা না তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে, তার চেয়েও অনেক বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন সঞ্জয় দত্তের স্ত্রী হিসাবে।
বলিউডে আইটেম গার্ল এখন সঞ্জয় দত্তের স্ত্রী। যে ভাবে যাবতীয় বিতর্ক সামলেছেন দুই সন্তানের মা মান্যতা, তা সত্যিই তারিফযোগ্য। তাক লাগিয়ে দেবে চল্লিশের মান্যতার মেকওভারও।
১৯৭৯ সালে মুম্বইয়ে একটা মুসলিম পরিবারে জন্ম হয়েছিল মান্যতার। তাঁর আসল নাম দিলনওয়াজ শেখ। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁকে অনেকে সারা খান বলেও ডাকতেন। কমল রশিদ খানের ‘দেশদ্রোহী’-তে তাঁর নাম হয়েছিল মান্যতা। তার পর থেকে তাঁকে মান্যতা বলেই চেনে দর্শক।
ছোট থেকে দুবাইয়ে বেড়ে উঠেছেন মান্যতা। ছোট থেকেই অভিনয়ের প্রতি ভীষণ ঝোঁক ছিল তাঁর। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের চাপ তাঁর কাঁধে এসে পড়ায়, খুব বেশি দিন ইন্ডাস্ট্রিতে থাকতে পারেননি তিনি। পারিবারিক ব্যবসা সামলাতে হয়েছিল তাঁকে।
মান্যতার প্রথম বিয়ে মিরাজ উর রহমানের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ২০০৬ সালে সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। প্রযোজক নিতিন মনমোহন তাঁদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
২০০৮ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। এর দু’বছর পরে যমজ (এক ছেলে, এক মেয়ে) সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
২০০২ সালে ‘লাভারস্ লাইক আস’ নামে একটি বি-গ্রেড ফিল্মেও অভিনয় করেছেন মান্যতা। তবে মান্যতার সঙ্গে বিয়ের পর সঞ্জয় দত্ত ২০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এই ফিল্মের সমস্ত স্বত্ব কিনে নিয়েছিলেন। বাজারে পাওয়া এই ফিল্মের সমস্ত ভিসিডি এবং ডিভিডি-ও তিনি কিনে নিয়েছিলেন।
সঞ্জয় দত্তের বোনেরা (প্রিয়া এবং নম্রতা) মান্যতাকে তাঁদের পরিবারের সদস্য হিসাবে কোনও দিন মেনে নেননি। তবে সঞ্জয়ের জীবনে মান্যতার গুরুত্ব ব্যাপক। তাঁর ডায়েট, ফিটনেস, টাকাপয়সা এমনকি ফিল্ম বাছার সিদ্ধান্তেও মান্যতার মতামত মেনে চলেন সঞ্জয়।
মান্যতা বর্তমানে সঞ্জয় দত্তের প্রযোজনা সংস্থার সিইও। ব্যবসার কাজে মাঝে মধ্যেই লন্ডন, দুবাই উড়ে যান তিনি। এমনকি বিভিন্ন সামাজিক প্রচারেরও মুখ তিনি।
সঞ্জয়ের জীবনে বহু নারীর অবদান রয়েছে। প্রথমে অভিনেত্রী টিনা মুনিমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়েছিল। তবে বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি সেই সম্পর্ক। ১৯৮৭ সালে প্রথম বিয়ে করেন অভিনেত্রী রিচা শর্মাকে। মাথায় টিউমারে রিচার মৃত্যুর পর তাঁর জীবনে আসেন মডেল রিয়া পিল্লাই।
রিয়া পিল্লাইয়ের সঙ্গে খুব বেশি দিন সংসার করা হয়নি তাঁর। দু’জনের বিচ্ছেদ হয়। তার পরই তাঁর জীবনে আসেন মান্যতা। মান্যতা সঞ্জয় দত্তের তৃতীয় স্ত্রী। তবে সঞ্জয়ের নিজের বয়ানে, মান্যতার সঙ্গে সম্পর্কের আগে ৩০৮টি ব্যর্থ সম্পর্ক হয়েছিল তাঁর।
সঞ্জয়ের জীবন প্রচুর টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণে নাম জড়ায় সঞ্জয়ের। বাড়িতে বেআইনি অস্ত্র রাখার অপরাধে দীর্ঘ সময় পুণের জেলে কাটিয়েছেন তিনি। আর এই পুরো সময়টা ছেলে-মেয়ে, সংসার, ব্যবসা সামলেছেন স্ত্রী মান্যতাই। পাশে থেকে সঞ্জয়ের মনের জোরও বাড়িয়েছিলেন তিনি।