কোন নগ্নতা বেশি দৃষ্টিনন্দন, নারী না পুরুষের? কী বলছেন তারকারা?
আবারও কি নারী বনাম পুরুষ? রণবীর সিংহের পোশাকবিহীন ছবি নিয়ে প্রশ্ন ছুড়েছেন মিমি চক্রবর্তী। বৃহস্পতিবার রাত থেকে অভিনেতার নিরাবরণ ছবি ভাইরাল। ততটাই চর্চায় সাংসদ-তারকার প্রশ্ন, নারী পোশাক খুললেই সৃষ্টি রসাতলে। আর পুরুষের আবরণহীনতা প্রশংসার! কেন? মিমির এই প্রশ্নের সঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন যোগ করলেন টলিউডের তিন খ্যাতনামী নায়িকা তনুশ্রী চক্রবর্তী, কৌশানী মুখোপাধ্যায়, ঊষসী চক্রবর্তী। নগ্নতা নিয়ে অকারণ রাখঢাক আর কত দিন? সাধারণত নগ্ন শব্দটি ব্যবহার হয় যখন কারও শরীর পুরোটাই উন্মুক্ত এবং একটি সুতোর আড়ালও নেই। রণবীরের ছবিতে তাঁর নিম্নাঙ্গ নানা ভাবে আড়ালে ছিল। সেই হিসেবে নগ্নতার সংজ্ঞায় ছবিটি পুরোপুরি পড়ে না। তবু অভিনেতার নিজের দাবি, ওই ফটোশ্যুটে তিনি একেবারেই নিরাবরণ ছিলেন। তবে নায়কের গোপনাঙ্গ প্রকাশ্যে আসুক বা না আসুক, ছবিটি নিঃসন্দেহে তুমুল আলোড়ন ফেলেছে।
আনন্দবাজার অনলাইন টলিউডের তিন নায়িকার কাছেই জানতে চেয়েছিল, একুশের ‘নিরাবরণ’ গোপনীয়তা পছন্দ করে নাকি উদ্যাপন? কোন নগ্নতা বেশি দৃষ্টিনন্দন, নারী না পুরুষের? কী বলছেন তিন তারকা? তনুশ্রীর সাফ বক্তব্য, ‘‘সমাজ যতই নারী-পুরুষে ভেদ টানুক, উভয়ের অনাবৃত শরীরই সুন্দর। অবশ্যই তাকে শৈল্পিক ভাবে পরিবেশন করতে পারলে।’’ অভিনেত্রীর দাবি, শিল্পের কারণে নগ্নতা তো নতুন নয়। রণবীরও যে নতুন কিছু করলেন, এমনও নয়। হ্যাঁ, তিনি হয়তো প্রথম বার প্রকাশ্যে নিরাবরণ হলেন।
নায়িকার মতে, চিত্রশিল্পীরাও তাঁদের ছবি আঁকার প্রয়োজনে নগ্ন পুরুষ বা নগ্নিকার ছবি আঁকেন। সেটা যদি অশালীন না হয়, এটাও তা হলে নয়। তার মানে এটাও নয়, অভিনেতা যখন-তখন বা যেখানে-সেখানে এ ভাবে পোশাক খুলে ফেলবেন। তনুশ্রীর মধ্যেও কি নগ্নতা নিয়ে তা হলে কোনও অস্বস্তি রয়েছে? অভিনেত্রীর যুক্তি, ‘‘কোনও কিছুই অতিরিক্ত বা অকারণ ভাল লাগে না। সেটা নগ্নতাই হোক বা অন্য কিছু। এটা সম্পূর্ণ আমার মত। রণবীর যদি মনে করেন তিনি অকারণেই নিরাবরণ হবেন, সেটাও তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তবে একে নিয়ে আড়াল বা উদ্যাপন কোনও কিছুরই প্রয়োজন নেই।’’
উষসী কিন্তু মিমির সুরেই সুর মিলিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিরাবরণ হওয়া অনেক পরের কথা। সামান্য হট স্কার্ট বা প্যান্ট পরলেই লোকে আমার স্বর্গীয় বাবা শ্যামল চক্রবর্তীকে টেনে নামিয়ে নিয়ে আসে! গোয়ায় গিয়ে বিকিনি পরে ছবি দিয়েছি। অধিকাংশ জন ছি ছি করেছেন! এই তো আমাদের সমাজ।’’ ছোটপর্দার ‘জুন আন্টি’র মতে, যতই একুশ শতক বলে সবাই লাফালাফি করুক, নারী-পুরুষ ভেদাভেদও আছে। নগ্নতা নিয়ে ছুঁতমার্গও। এখনও অনাবৃত নারী মানেই নিন্দার ঝড়। আর পুরুষের পোশাকহীনতা প্রশংসার ছলে সমালোচিত। নইলে রণবীরের নগ্নতা এত ভাইরাল কেন?
বলিউড তারকার নিরাবরণ ছবি নিয়ে কথা উঠতেই কৌশানীর স্বতঃস্ফূর্ত জবাব, ‘‘খুব হট!’’ তাঁর মতে, আন্তর্জাতিক মানের এক তারকা খুব সুন্দর ভাবে নিজেকে প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে পুরো ব্যাপারটি বহনও করেছেন সাবলীল ভাবে। কৌশানী রণবীরের প্রচণ্ড ভক্ত। তাঁর দাবি, এটা সত্যিই প্রশংসা করার মতো। তা হলে নারীর নগ্নতা নিন্দনীয় কেন? লিঙ্গভেদ তবে এখনও আছে? প্রশ্ন ছিল নায়িকার কাছে। ‘অন্তর্জাল’ ছবির নায়িকার দাবি, ‘‘অবশ্যই আছে। তাই একই ভাবে নারী নগ্নতা বহন করতে পারলেও তাঁকে কটাক্ষের শিকার হতে হয়। তিনি তারকা হলে তো কথাই নেই।’’ অভিনেত্রীর আরও বক্তব্য, যতই একুশ শতক আসুক, নগ্নতা ব্যক্তিবিশেষের উপরেই নির্ভর করুক। কৌশানীর কথায়, ‘‘অন্যের কটাক্ষের ভয়ে নয়। আমি যদি বিষয়টিতে সাবলীল হই, তবে প্রকাশ্যে আমিও নিরাবরণ হব। কিন্তু নিজের মন থেকে সায় না দিলে জোর করে কোনও কিছু করাই বোধহয় ঠিক নয়।’’