‘নীহারিকা’ ছবির একটি দৃশ্যে অনুরাধা মুখোপাধ্যায় এবং শিলাজিৎ মজুমদার। ছবি: সংগৃহীত।
ছবি তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন ১০ বছর আগে। সেই মতো লেখকের থেকে গল্পের স্বত্ব হাতে আসে ২০১৩ সালে। কিন্তু তার পরেও ইন্দ্রাশিস আচার্য পরিচালিত ‘নীহারিকা’ মুক্তি পেতে অনেকটাই সময় লেগে গেল। সম্প্রতি ছবির প্রথম ঝলক প্রকাশ্যে এসেছে। ছবিতে রয়েছেন শিলাজিৎ মজুমদার, অনুরাধা মুখোপাধ্যায়, অনিন্দ্য সেনগুপ্ত, মল্লিকা মজুমদার প্রমুখ।
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘ভয়’ গল্পটির অনুপ্রেরণায় ইন্দ্রাশিস তাঁর ছবিটি তৈরি করেছেন। তিন বছর আগে মুক্তি পেয়েছিল ইন্দ্রাশিস পরিচালিত ছবি ‘পার্সেল’। তার পর এতটা দেরি হল কেন? ইন্দ্রাশিস বললেন, ‘‘প্রথমে ছবি প্রযোজনা করতে কেউ রাজি হচ্ছিলেন না। তার পর আমি নিজেই প্রযোজনা করব বলে ঠিক করি। এক জনের থেকে কিছুটা সাহায্য পেয়ে আমরা বিহারে ছবির কিছু দৃশ্যের শুটিং করি। সেটা দেখার পর অনেকেই ছবিটার পাশে দাঁড়াতে রাজি হন।’’
সাধারণত একটি ছবি প্রযোজনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন দু-তিন জন মানুষ। কিন্তু ইন্দ্রাশিসের ছবিটির প্রযোজক সংখ্যা ১৭! অবিশ্বাস্য মনে হলেও এটাই সত্যি। বিভিন্ন সময়ে পুঁজি সংগ্রহ করে গ্রীষ্ম, বর্ষা এবং শীতকাল মিলিয়ে ন’মাস ধরে ছবির শুটিং সেরেছেন পরিচালক। ইন্দ্রাশিসের কণ্ঠে আক্ষেপ স্পষ্ট হয়। বললেন, ‘‘আসলে তথাকথিত টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রির কেউ তো আমাকে এতটুকু সাহায্য করেন না। আমার সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলেন না! কিন্তু অন্য কিছু মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এটাই বা কম কী!’’
মানুষের হাতে তখনও মোবাইল সহজলভ্য হয়নি। এমন অবস্থায় এক প্রত্যন্ত জনপদে মানুষের সমাজিক সম্পর্কের গল্প বলবে এই ছবি। পরিচালকের কথায়, ‘‘অন্ধকার শৈশব পেরিয়ে যৌবন পেরোনোর সময়ে এক জন নারীর নানা আশা-আকাঙ্ক্ষার গল্প। পাশাপাশি, মেয়েটির অস্তিত্বের লড়াইও এই ছবির একটা গুরুত্বপূর্ণ থিম।’’
কলকাতা ছাড়াও বিহারের মধুপুর, শিমুলতলা, গিরিডিতে ছবির শুটিং হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৮টি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে ‘নীহারিকা’। আগামী অগস্ট মাসে বুলগেরিয়ার ‘ভার্না আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’ (লাভ ইজ় ফলি)-এ প্রদর্শিত হবে ছবিটি। তার আগে অবশ্য জুলাই মাসেই ‘নীহারিকা’ দেশে মুক্তি পাওয়ার কথা।