প্রথম চুমুর অভিজ্ঞতা কী রকম? জানালেন তারকারা
প্রথম বার কোনও প্রিয় মানুষের অনেকটা কাছে আসা। তার নিঃশ্বাসের শব্দ পাওয়া। বুকের মধ্যে ধড়াস করে শব্দটা অনুভব করা। আর তার পর ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড করা। ওই যে অনুভূতি, তা সম্ভবত প্রত্যেকটা মানুষের কাছেই বড্ড প্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ। আর এই চুম্বন দিবসে টলিউডের কিছু বিশিষ্ট মানুষের কাছ থেকে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাইল আনন্দবাজার ডিজিটাল।
প্রথম চুমুর অভিজ্ঞতা কী রকম? জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চুম্বন কোনটি?
রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়- প্রথম চুমু খেয়েছিলেন গল্ফ ক্লাবের মাঠে। সে স্বর্গীয় অভিজ্ঞতা ভোলা যায় না! অভিনেতার কথায়, ‘‘চুমুতে যে দু’টো বুক মিশে যায়, তা প্রথম সে দিন বুঝেছিলাম।’’ ১৭ বছর বয়সের সেই স্পর্শ বড়ই রোমাঞ্চকর। জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ চুমু সবক’টাই। কিন্তু রাহুল ও প্রিয়াঙ্কার সন্তান, সহজ জন্মানোর পর সহজের কপালে যে চুমুটা খেয়েছিলেন, সেটা ছাপিয়ে উঠতে পারেনি কিছুই।
সৌরভ চক্রবর্তী- টিউশনের মাস্টারমশাইয়ের নির্দেশ ছিল, ‘‘যে মেয়েদের সাইকেল নেই, রাত হয়ে গেলে তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছেলেদের।’’ অভিনেতা ও তাঁদের বন্ধুরা অপেক্ষা করে থাকতেন, কবে দেরি হবে আর কবে তাঁদের প্রিয়তমাদের সাইকেলের সামনে চাপিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসতে পারবেন। সৌরভ মনে মনে এক জন সহপাঠীকে বড্ডই পছন্দ করতেন। কিন্তু বলতে পারেননি কোনও দিন। সাইকেলে চাপিয়ে বাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎই সৌরভের নাকে চুমু খায় মেয়েটি। সৌরভের কথায়, ‘‘আমি সাইকেলে বসেছিলাম। মেয়েটি দাঁড়িয়ে ছিল। চুমু খাওয়ার পরে আমার মাথা ঘুরে যায়। আমি সাইকেল স্ট্যান্ড করে নেমে পড়ি। বুকের ভেতরটা কেমন হু হু করে উঠেছিল।’’ জীবনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ চুমুর অভিজ্ঞতাটা পরিচালক-অভিনেতা সৌরভের কাছে একটু অন্য রকমের। যার মধ্যে কেবল প্রেম নয়, অনেকটা কষ্ট মাখা ছিল। তাঁর বাবা মারা যাওয়ার আগে হাসপাতালে বাবার পাশে বসে থাকতেন তিনি। আদর করে দিতেন বাবাকে। সারা গায়ে হাত বুলিয়ে কপালে চুমু খেয়ে দিতেন। সেই চুমুর কথা ভুলতে পারাটা বেশ কঠিন তাঁর কাছে।
শ্রীলেখা মিত্র- প্রথম বার চুমু খেয়েছিলেন নিজের তুতো দাদাকে। কিন্তু গভীর চুম্বন হয়েছিল প্রথম প্রেমিকের সঙ্গেই। তখন শ্রীলেখা দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়তেন। শ্রীলেখা বললেন, ‘‘আমাদের সময়ে মানুষ এখনকার মতো এত তাড়াতাড়ি স্পর্শ করত পারত না একে অপরকে। তাই ওইটুকুই যেন স্বর্গীয় ছিল।’’ তাই সেই প্রথম চুমুটাই অভিনেত্রীর কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।
সায়নী ঘোষ- উড়ন্ত চুমুতেই চিৎপটাং অভিনেত্রী। সেটা তাঁর কাছে প্রথম ও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চুম্বন। টেবিল টেনিস খেলতেন তিনি। একটি টুর্নামেন্টে অষ্টম শ্রেণীর সায়নী একের পর এক ‘স্ম্যাশ’ মেরে যাচ্ছে! একটি বীভৎস শট মেরে বসেছিলেন তিনি। গ্যালারি থেকে উড়ে এসেছিল একটি চুমু। খুব দামি ছিল সেই চুমু। সায়নীর তাঁকে বড্ড পছন্দ ছিল। কিন্তু কোনও দিন বলতে পারেননি। তার পরমুহূর্তে টেবিল টেনিসের বল গেল পিসির বাড়ি। তার বদলে ওই চুমুটিই লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াল সায়নীর। এমনই গলে গেলেন যে শেষে জেতা ম্যাচ হেরে বসলেন তিনি। কিন্তু হায়! কিছু দিন পরে সেই প্রত্যাশিত পুরুষটি চলে গেলেন অন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। মনের দুঃখে চুমু ছাড়াই খেলতে থাকলেন সায়নী। মনের ভেতরে আজও সেই উড়ন্ত চুমুটিকে নিয়ে বসে রয়েছেন অভিনেত্রী।
ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়- প্রথম সম্পর্ক। দীর্ঘ সম্পর্ক। তার সঙ্গেই প্রথম ঠোঁটে ঠোঁট। আর তাই বোধহয় সেই দিনটিকে ভোলা যায় না। বয়স তখন ১৬ বছর। ঋতব্রতর কথায়, ‘‘ছোট বেলায় লেখায় পড়তাম ঘনিষ্ঠতার কথা। কিন্তু সে বার নিজে অনুভব করেছিলাম। প্রথম বার ভীষণ প্রিয় মানুষের কাছাকাছি আসা! তাই ওটা আমার কাছে আজও তোলা রয়েছে। ও দিন বুঝেছিলাম ঘনিষ্ঠতার মধ্যে কতটা শক্তি রয়েছে! অনেক কিছু ভাগ করে নেওয়ার জায়গা তৈরি হয়।’’
দর্শনা বণিক- ছোট ছিলেন তখন। খুব লজ্জা পেয়ে গিয়েছিলেন প্রথম চুমুর সময়ে। ১৭ বছর বয়সে প্রথম প্রেমিকের সঙ্গে শপিং মলে ঘুরতে গিয়েছিলেন দর্শনা। সেখানেই প্রথম চুম্বন। কেমন জানি, ‘ওরে বাবা রে! করে ফেললাম!’ গোছের অনুভূতি কাজ করছিল তাঁর মনে। তবে জীবনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ চুমুটি তিনি এখন কাউকেই খাননি। মডেল-অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘যে দিন কোনও পুরুষ আমাকে এসে বিয়ের প্রস্তাব দেবে, এবং তার পর আমি যখন হ্যাঁ বলব, তাকেই জীবনের সেরা চুমুটি খাব।’’