রূপাঞ্জনা মিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
কালীপুজো বা দীপাবলিতে শব্দবাজি নিয়ন্ত্রণে কড়াকড়ি ছিল প্রশাসনের তরফে। ছিল নিষেধাজ্ঞাও। তবু শব্দ তাণ্ডবে জেরবার হয়ে অনেকেই সমাজমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। একই অভিজ্ঞতা অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্রের। দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগানের বাসিন্দা রূপা়ঞ্জনার পাশের বাড়িতেই হয় কালীপুজো হয়। প্রাথমিক ভাবে সব ঠিক ছিল। কিন্তু বিকেল হতেই শুরু হয় ব্যান্ড পার্টির বাজনা, তারস্বরে, এমনই অভিযোগ রূপাঞ্জনার।
আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী বলেন, “পাশের বাড়িতেই খুব সুন্দর করে কালীপুজো হয়। গত বছর আমি কলকাতায় ছিলাম না। তাই শব্দের জোর সে বার বুঝতে পারিনি। দেখতে পাইনি কী পরিমাণ অত্যাচার চলে। আমাদের এক তলায় এক অসুস্থ মহিলা রয়েছেন। সারা রাত পুজোর পর সকাল থেকেও ভাল ভাবেই সব চলছিল। কিন্তু পুজোর পর দিন বিকেল পাঁচটা থেকেই শুরু হয়েছে ব্যান্ড পার্টির তারস্বরে বাজনা।”
শুধু ব্যান্ড পার্টির বাজনা নয়, সঙ্গে শুরু হয় শব্দবাজির দাপট। এক মুহূর্তও বিরতি না নিয়ে পর পর ফাটতে থাকে শব্দবাজি। তার জেরে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে ওঠে বলে জানান রূপাঞ্জনা। অভিনেত্রীর কথায়, “এক মুহূর্তের জন্যও শব্দবাজি ফাটানোয় বিরতি দিচ্ছিল না ওরা। পাড়ায় প্রচুর কুকুর রয়েছে। আমাদেরও পোষ্য রয়েছে। তাদের অবস্থা বলে বোঝানোর মতো নয়। বাড়ির পোষ্যকে কী ভাবে ঘরে রাখব বুঝতে পারছিলাম না। আমার কাছ ছাড়া হচ্ছিল না। ওরা ভয় কাঁপছিল। আমার ছেলে পড়াশোনা করতে পারছিল না। গোটা বাড়ি কাঁপছিল ও ভয়াবহ শব্দের চোটে।”
মানুষ নিজের মতো আনন্দ বা উদ্যাপন করবেই। কিন্তু অন্যকে পীড়া দিয়ে কেন উল্লাস চলবে? প্রশ্ন অভিনেত্রীর। তাঁর কথায়, “শব্দের তো একটা নির্দিষ্ট ঊর্ধ্বসীমা রয়েছে। ফাঁকা মাঠে যে আওয়াজ শোনা যায়, তা কি বহুতলে সম্ভব? এই শব্দ সরাসরি মানুষের হৃদ্যন্ত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। কত প্রবীণ নাগরিক রয়েছেন। বয়স্ক মানুষেরা কেন এই সমাজে থাকতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন?”
এই বছর কি শব্দবাজির দাপট শহর জুড়ে তুলনায় বেশি? রূপাঞ্জনার স্পষ্ট উত্তর, “হ্যাঁ। প্রত্যেকটা এলাকায় এটা দেখা গিয়েছে এ বার। এটা তো হওয়ার কথা নয়। কিন্তু অন্য পাড়ার কথা তো সরাসরি জানি না। আমার পাড়া-প্রতিবেশীই সচেতন নন। এটা তো সাধারণ মানুষের সাধারণ বোধ।”
অবশেষে আর সহ্য করতে না পেরে রাতে রূপাঞ্জনার স্বামী লালবাজার কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করেন। রূপাঞ্জনা বলেন, “অভিযোগ জানালে পুলিশ বাহিনী পাঠানো হয় লালবাজারের তরফে। তবে বিকেল পাঁচটা থেকে রাত বারোটা পর্যন্ত শব্দবাজির দাপট সহ্য করতে হয়েছে আমাদের। লালবাজার অবশ্য পরেও আমাদের কাছে নিয়মিত খোঁজ খবর নিয়েছে।”