Riddhi Sen on Bonny Sengupta

কালো টাকা নিলেন কেন রুপোলি জগতের বনি? নাম না করে প্রশ্ন তুলে দিলেন অভিনেতা ঋদ্ধি, স্তব্ধ টলিউড

দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তলের ব্যাঙ্কের নথিতে অভিনেতা বনির নাম পাওয়া গিয়েছে। কালো টাকা জেনেও কী ভাবে নিলেন তিনি? গভীরতর সামাজিক-রাজনৈতিক অবক্ষয়ের দিকেই আঙুল তুললেন ঋদ্ধি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ২১:২০
Share:

সর্বত্র সুবিধাবাদের ছায়াই দেখছেন ঋদ্ধি, এটিই যদি এখন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রবণতা হয়ে দাঁড়ায়, তবে ভবিষ্যৎ কী? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

জানতেন কালো টাকা। তবু ছবি সম্পর্কে বিন্দুবিসর্গ না জেনেই কী ভাবে সেই টাকা নিলেন এক জন অভিনেতা? শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিকাণ্ডে বনি সেনগুপ্তের নাম জড়ানোয় প্রশ্নটি প্রথম তুললেন আর এক অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। সকাল থেকে থমথমে টলিপাড়া, কেউ টুঁ শব্দটিও করেননি। হঠাৎ যেন ঋদ্ধি বলে উঠলেন, “রাজা তোর কাপড় কোথায়?” নাম না করেও চোখে আঙুল দিয়ে ‘লোভ’-এর প্রতিমূর্তি দেখালেন ঋদ্ধি।

Advertisement

ফেসবুকে তিনি লিখেছিলেন, “সাক্ষাৎকারে গম্ভীর / উদ্বিগ্ন মুখে বাংলা ছবির ভবিষ্যৎ, পাশে দাঁড়ানো, সিঙ্গল স্ক্রিনকে ফিরিয়ে আনার গুরুদ্বায়িত্ব নিয়ে বাণী দেবেন, দর্শক শুনছেন। তাদের অভিনয় কেন ভাল লাগে না, সেই নিয়ে অভিমান করবেন, দর্শক শুনছেন। পরের পর একই গল্প নিয়ে ছবি করে যাচ্ছেন এবং মানতে চাইছেন না যে ছবিগুলো তারা বানাতে পারছেন না, তাই নিয়ে সাক্ষাৎকারে চোখ রাঙাচ্ছেন,দর্শক শুনছেন। তার পর হঠাৎ এক দিন বাংলা ছবির ভবিষ্যৎ বর্তমানে ইডির দরবারে প্রবেশ পেলেন, এই বার দর্শক অবশেষে দেখছেন।”

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের ব্যাঙ্কের নথিতে বনির নাম পাওয়া গিয়েছে। সেই কারণে বৃহস্পতিবারই অভিনেতাকে ইডির কাছে হাজিরা দিতে যেতে হয়েছিল। ঋদ্ধি এই ঘটনাকে লোভের পরিণাম বলে মনে করছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে ঋদ্ধি বললেন, “বিশেষত গত দুটো বছর ধরে লোকচক্ষে ইন্ড্রাস্ট্রির সম্মান অনেকটা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। জানি না, আরও কতটা হবে। এটা তো কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আগে মানুষ যে লোভ প্রকাশ করতে লজ্জা পেত, এখন সেটাই কলার উঁচিয়ে বলে।”

আদর্শ বা নীতির প্রশ্ন এখানে কিছু নেই বলেই মত ঋদ্ধির। তাঁর সাফ কথা, “২০২১- এর নির্বাচনের আগে আমরা রাজনৈতিক দলবদল দেখেছি। আবার বিশেষ কোনও দল হেরে যাওয়ায় আগের দলে ফিরে আসতে দেখেছি। সেই দল ফিরিয়েও নেয় তাদের। বোঝা যায়, পুরো ব্যাপারটাই সুবিধাবাদ।”

জানালেন, এখানেও সেই সুবিধাবাদের ছায়াই দেখছেন। এটিই যদি এখন বাংলা ইন্ডাস্ট্রির প্রবণতা হয়ে দাঁড়ায়, তবে ভবিষ্যৎ কী? আশঙ্কা তরুণ অভিনেতার। ঋদ্ধি আরও বললেন, “কাজের জন্য টাকা নিলেও তার কিছু আইনি ধাপ আছে। ছবির বিন্দুবিসর্গ না জেনেও যদি সেই ছবির নাম করে এক জন অভিনেতা বিপুল অঙ্কের টাকা নেন শুধুমাত্র গাড়ি কেনার প্রয়োজন বলে, তখন মানুষ হিসাবে একটা প্রশ্নচিহ্ন ওঠে। সে টাকা তিনি ক্যাশে নিলেন এটা জেনেই যে, সেটা কালো টাকা। এ তো নির্বুদ্ধিতার পরিচয়!”

ঋদ্ধির দাবি, এই বনিই আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। টাকা নিয়েছিলেন তৃণমূল যুবনেতার কাছ থেকে। বিজেপি নির্বাচনে হারার দু’মাসের মধ্যেই তিনি তৃণমূলে ফিরে আসেন। এই অনৈতিক জায়গাটাই ইন্ডাস্ট্রির পক্ষে ক্ষতিকারক বলে মনে করছেন তিনি। দর্শক যদি অভিনয়ের জন্য শিল্পীকে মনে না রেখে এই চেহারাটা মনে রাখেন?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement