বিমানবন্দরে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ালেন ‘ইচ্ছে পুতুল’ খ্যাত অভিনেতা মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা বিমানবন্দরে হেনস্থার শিকার টলিউড অভিনেতা মৈনাক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার রাতে স্ত্রীকে বিমানবন্দর থেকে আনতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কাতর্কি ও বচসায় জড়িয়ে পড়েন অভিনেতা। পুলিশের সঙ্গে বচসা চলাকালীনই ফেসবুক লাইভে এসে ঘটনার কথা জানান মৈনাক। সেই ভিডিয়োয় মৈনাক জানান, বিমানবন্দরে স্ত্রীকে নিতে এসে ১বি গেটের সামনে দাঁড়ান তিনি। তাঁর স্ত্রী ব্যাগপত্র নিয়ে গাড়ির দিকে এগোতে শুরু করলে বাধা দেন কিছু পুলিশকর্মী। মৈনাকের অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা শুরু করেন তাঁরা। শুধু তাঁর স্ত্রীর সঙ্গেই নয়, তিনি পরিস্থিতি সামলাতে গেলে তাঁর সঙ্গেও অত্যন্ত খারাপ আচরণ করা শুরু করেন ওই পুলিশকর্মীরা। তার পরে নাকি গাড়ি নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে যেতে চাইলেও বাধা দেওয়া হয় তাঁদের। অন্য একটি ভিডিয়োয় মৈনাকের দাবি, তাঁর গাড়ি আটকে নাকি তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়ারও হুমকি দেওয়া হয় ওই পুলিশকর্মীর তরফে। ওই পুলিশকর্মীর নামও ফেসবুক লাইভের ভিডিয়োয় উল্লেখ করেছেন মৈনাক।
আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বলার সময় মৈনাক বলেন, ‘‘আমার স্ত্রী কাল চেন্নাই থেকে কলকাতায় ফিরেছে। আমি ওকে আনতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলাম। ও আমাকে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল ১বি গেটের সামনে আছে, আমিও গাড়ি নিয়ে সেখানেই যাই। তখনও আমাকে এক জন বলেন, ‘এখান থেকে চলে যান’। এ বার আমি আমার স্ত্রীকে খোঁজার জন্য ধীরে ধীরে এগোচ্ছিলাম। তখনই হঠাৎ করে তিনি আমার গাড়ির উপরে প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েন।’’ মৈনাকের দাবি, ওই সময় সেখানে অনেক গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তাদের সঙ্গে এমন ব্যবহার করেননি ওই পুলিশকর্মী।
মৈনাক বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীর সঙ্গে তিনি খারাপ ব্যবহার শুরু করলে আমি গাড়ি থেকে নামতে বাধ্য হই। তখনই চেঁচামেঁচি শুরু হয়। ওই পুলিশকর্মী আমাকে বলেন, ওখানে গাড়ি রাখায় নাকি হুইলচেয়ার নিয়ে যেতে অসুবিধা হচ্ছে। অথচ ওখানে তখন হুইলচেয়ারে কেউ ছিলও না।’’ এখানেই শেষ নয়। মৈনাকের কথায়, ‘‘বেশ কিছু পুলিশকর্মী আমাকে বলেন, ‘সিরিয়াল-সিনেমায় অভিনয় করেন, আপনার ফুটুনি বার করে দেব, আপনাকে এক রাত লকআপে ঢুকিয়ে দেব, এফআইআর করে দেব, তার পর দেখবেন আপনার জীবন বরবাদ হয়ে যাবে’। এই অপমান তো আমার প্রাপ্য নয়।’’ তর্কাতর্কির পরে মৈনাক ও তাঁর স্ত্রীকে সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে বেরোতেও বাধা দেন পুলিশকর্মীরা, দাবি অভিনেতার। গাড়ি ছাড়াতে থানা পর্যন্ত যেতে হয় তাঁদের।
গাড়ি ছাড়াতে রাতেই বিমানবন্দর থানায় যান মৈনাক। সেখানে পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে অবশেষে মীমাংসা হয় সমস্যার। যদিও টলিউড অভিনেতার দাবি, থানায় যাওয়ার কথা তোলার পরেও তাঁকে কোনও ভাবে সাহায্য করেননি বিমানবন্দরে থাকা পুলিশকর্মীরা। শেষ পর্যন্ত সিআরপিএফ জওয়ানদের সাহায্য নিয়ে সস্ত্রীক বিমানবন্দর থানায় যেতে হয়েছিল অভিনেতাকে।