‘টেনিদা অ্যান্ড কোম্পানি’ ছবির পোস্টারে টেনিদার ভূমিকায় কাঞ্চনের লুক। ছবি: টুইটার।
বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় চরিত্র টেনিদা যে নতুন করে বড় পর্দায় আসতে চলেছে, সে খবর আগেই পাওয়া গিয়েছিল। ‘টেনিদা অ্যান্ড কোম্পানি’ শীর্ষক এই ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন কাঞ্চন মল্লিক। সম্প্রতি ছবিতে কাঞ্চনের ফার্স্টলুক প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ছবি ঘিরে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। সোমবার ছবির ট্রেলারও প্রকাশ্যে এসেছে। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছে প্রশংসা এবং সমালোচনার পালা।
‘ঝাউবাংলোর রহস্য’ অবলম্বনে তৈরি এই ছবির পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল। লকডাউনের আগে শেষ হয়েছিল ছবির শুটিং। টেনিদার ভূমিকায় অভিনয় করতে পেরে কাঞ্চন কতটা উচ্ছ্বসিত? আনন্দবাজার অনলাইনকে কাঞ্চন বললেন, ‘‘বাংলা সাহিত্যের বৈগ্রহিক চরিত্র টেনিদা। সেই চরিত্রের প্রতি লোভ থেকেই আমার টেনিদায় রাজি হওয়া। এর পিছনে অন্য কোনও জটিল কারণ নেই।’’
টেনিদা মানেই বাঙালির স্মৃতিতে ভিড় করেন ‘চারমূর্তি’ ছবিতে টেনিদার ভূমিকায় চিন্ময় রায়। সে কথা মনে করিয়ে দিতেই কাঞ্চন বললেন, ‘‘শুরুতে ভয় যে করেনি, তা নয়। কিন্তু আমাদের টিমটা খুব ভাল ছিল বলে পরে সেই ভয়টা কেটে যায়।’’ টেনিদা মানে তুলনা আসবেই। এই প্রসঙ্গে উত্তরপাড়ার বিধায়কের স্বীকারোক্তি, ‘‘চারমূর্তি দেখেননি এ রকম বাঙালি খুঁজে পাওয়া কঠিন। আমি অনেক আগে দেখেছিলাম। তবে আমি আমার মতো করে চেষ্টা করেছি।’’
ব্যোমকেশ এবং ফেলুদা সময়ের সঙ্গে আধুনিক হয়েছে। কাঞ্চনের টেনিদাও কি সেই পথেই হেঁটেছে? অভিনেতা বললেন, ‘‘আধুনিকতা তো রয়েইছে। আবার এই সময়ে দাঁড়িয়ে টেনিদা কেন ফেসবুকে নেই, সেই উত্তরও সেখানে রয়েছে। এখনই সবটা বলে দিতে চাইছি না।’’ বাংলা সিনেমায় ব্যোমকেশ এবং ফেলুদার চরিত্রেও বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন মুখ দেখা গিয়েছে। সে দিক থেকে নিজেকে ‘নবীন’ হিসেবেই দেখতে চাইছেন কাঞ্চন। ‘‘ছাব্বিশ বছর ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার পর এ রকম একটা চরিত্রে অভিনয় করতে পারা আমার কাছে সৌভাগ্যের। ফেলুদা বা ব্যোমকেশের মতো পঞ্চান্ন বা ছাপান্নতম স্থানে দাঁড়িয়ে নই,’’ উত্তর এল কাঞ্চনসুলভ।
চিন্ময় রায় ছাড়াও পরবর্তী সময়ে টেনিদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শুভাশিস মুখোপাধ্যায়। সেই ছবির পরিচালক ছিলেন স্বয়ং চিন্ময় রায়। আবার দূরদর্শনে টেনিদার ভূমিকায় দর্শক পেয়েছিলেন রবি ঘোষকে। তাই যাঁরা তুলনা করবেন তাঁদের কিছু বলতে চান? কাঞ্চনের সহজ উত্তর, ‘‘খারাপ-ভালর মিশেলেই জীবন। টেনিদা তো শুধুই কিশোর সাহিত্য নয়। বাঙালির কাছে টেনিদা একটা আবেগ। সেটা আমি অভিনয়ে ধরে রাখতে পেরেছি কি না, সেটাই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কে কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না!’’ এই প্রসঙ্গেই কাঞ্চনের সংযুক্তি, ‘‘যদি সমালোচনা জীবনে মুখ্য হয়, তা হলে তো শার্লক হোমসের চরিত্রে অভিনয় করে রবার্ট ডাউনি জুনিয়রের গলায় দড়ি দেওয়া উচিত ছিল!’’
কাঞ্চন ছাড়াও ‘টেনিদা অ্যান্ড কোম্পানি’ ছবিতে অভিনয় করেছেন গৌরব চক্রবর্তী, সৌমেন্দ্র ভট্টাচার্য,ঋদ্ধিমা ঘোষ প্রমুখ। ছবি মুক্তি পাবে আগামী মাসে।