টলিউড অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
ফের ভুয়ো চক্রের জালে টলিউড। একাধিক জনপ্রিয় অভিনেতার নাম ভাঙিয়ে ধারাবাহিকের জন্য অডিশনের ডাক। অথচ সেই ধারাবাহিক ও অডিশন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন অভিনেতারা নিজেই। সমাজমাধ্যমের পাতায় ভাইরাল হওয়া সেই পোস্টার শেয়ার করে ক্ষোভপ্রকাশ অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের। পাশাপাশি, পোস্টারে উল্লিখিত সংশ্লিষ্ট চ্যানেলকে ট্যাগ করেও সাবধান করেন অভিনেতা।
সমাজমাধ্যমের পাতায় ভাইরাল হওয়া ওই পোস্টারে বড় বড় করে লেখা, ‘‘আসন্ন বাংলা ধারাবাহিকের জন্য অডিশন।’’ পোস্টারে ছবি রয়েছে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়, চন্দন সেন, মৈত্রী সেন, অম্বরীশ ভট্টাচার্য, পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতাদের। সঙ্গে পোস্টারে লেখা, ‘‘যারা অডিশন দিতে ইচ্ছুক নাম ঠিকানা এবং ফটো সেন্ড করুন অভিনয় না জানলে শিখিয়ে নেওয়া হবে।’’ সেই লেখার না রয়েছে যতিচিহ্ন, না রয়েছে ভাষার সামঞ্জস্য। পোস্টারের এই লেখার ধরন থেকেই স্পষ্ট, আদ্যোপান্ত ভুয়ো চক্র এটি। এমন এক চক্রে নিজের ছবি দেখে ক্ষুব্ধ ভাস্বর।
আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিনেতা বলেন, ‘‘আমি তো দেখে হতবাক। এত সাহস এঁদের যে, যোগাযোগ করা তো অনেক দূর, এক বার অনুমতি নেওয়ারও বোধ নেই এঁদের। এমনকি, পরান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রবীণ অভিনেতার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি তো সমাজমাধ্যমে নেই। আমি, অম্বরীশ, মৈত্রীদি দেখতে পেলাম না হয়। কী সাংঘাতিক সাহস এঁদের!’’ সমাজমাধ্যমের যুগে আজকাল এমন ভুয়ো চক্রের রমরমা বেড়েই চলেছে। কী ভাবে আসল-নকলের ফারাক করবেন দর্শক? ভাস্বর বলেন, ‘‘আমাদের কাছে রাস্তা একটাই। সমাজমাধ্যমের পাতায় পোস্ট করা। আমি দেখলাম, আমার পোস্ট নজরেও পড়েছে অনেকের। সেখান থেকে মনে হচ্ছে, এই ব্যক্তিকে হয়তো ধরাও যাবে। কিন্তু এমন কত লোক করছেন, তা তো জানি না।’’ এমন সুযোগের নামে অনেকে আর্থিক প্রতারণার ফাঁদেও পড়েন। ভাস্বর বলেন, ‘‘এটা তো ভয়ের বিষয় বটেই। তবে আমি যে এগুলোর সঙ্গে জড়িত নই, তা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই জানা যাবে। এখানে ভয়টা বদনামের।’’ পোস্টারে এক জনপ্রিয় চ্যানেলের লোগোও ব্যবহার করা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গে ভাস্বর বলেন, ‘‘এটা তো একটা গুরুতর অপরাধ। আমি ওই চ্যানেলকেও ট্যাগ করেছি। আমার মনে হয়, পুলিশের কাছে এটা জানানো উচিত।’’
অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্যেরও একই মত। আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেতা বলেন, ‘‘আমরা যখন ‘খড়কুটো’ করছিলাম, তখন এমন এক বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল যে সেখানে অডিশন দিলে সিরিয়ালে সুযোগ পাওয়া যাবে। তখন আমাদের এক সহকারী পরিচালক সেখানে যান অডিশন দেওয়ার অছিলায়। কিন্তু কোথায় কী হচ্ছে, সব তো জানা সম্ভব নয়। দুর্নীতি খুঁজতে গেলে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। এখন প্রতি চ্যানেলে ধারাবাহিকের নীচে লেখা থাকে যে টাকাপয়সার বিনিময়ে কোনও অডিশন হয় না। সাধারণ মানুষকে তা দেখে অন্তত সচেতন হতে হবে। তাঁরা যেন এ রকম ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত না হন।’’ সংশ্লিষ্ট চ্যানেল কি এ ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপ করবে? আপাতত সেটাই দেখার অপেক্ষা। দিন কয়েক আগে টলি অভিনেতা অঙ্কুশের ‘মির্জ়া’ ছবি নিয়েও ছড়ায় গুজব। প্রযোজনা সংস্থা ও স্বত্ব নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। সেই ছবি নিয়েও কতটা জলঘোলা হয়, তা বোঝা যাবে কিছু দিন পর।