অমিতাভ-রেখা সম্পর্ক বলিউডে চিরসবুজ। কিন্তু কী করে ইন্ডাস্ট্রিতে জানাজানি হল এই সম্পর্ক? শোনা যায়, অমিতাভের জন্যই প্রকাশ্যে এসেছিল রেখার প্রতি তাঁর দুর্বলতা।
প্রথম দিকে সিনেমার বাইরে নাকি বিগ বি এবং রেখা কেউ কাউকে পছন্দ করতেন না। কিন্তু তাঁদের ছবি একের পর এক হিট হতে থাকে বক্স অফিসে। বিশেষ করে ‘দো আনজানে’-এর পর থেকে তাঁদের জুটিকে নিয়ে ছবির তৈরির দাবি ক্রমশ জোরালো হয়।
এ বার কিন্তু তাঁদের অফ স্ক্রিন রসায়নও ক্রমশ পাল্টে যেতে থাকে। তাঁদের ঘিরে গুঞ্জন দানা বাঁধতে থাকে। অমিতাভ অবশ্য বরাবর এই সম্পর্ক নিয়ে চুপচাপ। কোনও দিন তিনি মুখ খোলেননি। কিন্তু একটা ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে রেখার প্রতি অমিতাভের দুর্বলতাও নাকি ধরা পড়ে গিয়েছিল।
১৯৭৮ সালে অমিতাভ-রেখার ছবি ‘গঙ্গা কি সওগন্ধ’ মুক্তি পেয়েছিল। ছবির আউটডোরের বড় অংশের শ্যুটিং হয়েছিল রাজস্থানের জয়পুরের কাছে নায়লাগাঁওয়ে। রেখা এবং অমিতাভ ছাড়াও এই ছবির মূল কুশীলবদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আমজাদ খান এবং বিন্দু।
আউটডোরে উপচে পড়ত স্থানীয় গ্রামবাসীদের ভিড়। রোজ বহু দর্শক শ্যুটিং দেখতে আসতেন। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে এক জন এক দিন হঠাৎই অমিতাভ-রেখার সম্পর্ক নিয়ে কুমন্তব্য করে বসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপস্থিত এক জন রেখাকে উদ্দেশ করে অমিতাভকে বলেন, “এমন এক জন মহিলার জন্য আপনি আপনার বিবাহিত জীবন বরবাদ করে দিচ্ছেন?”
এটা শুনে আর নাকি মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি অমিতাভ। ওই ব্যক্তির সঙ্গে তিনি হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। শেষে ইউনিটের বাকি সদস্যরা এসে তাঁকে শান্ত করেন।
শ্যুটিং ইউনিটের সকলের ধারণা, রেখার প্রতি কটূক্তি সহ্য করতে পারেননি অমিতাভ। তাঁর আচরণে আসলে নায়িকার প্রতি দুর্বলতা বা অধিকারবোধই প্রকাশ পেয়েছে। এই খবর ইন্ডাস্ট্রি এবং সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি।
এ বার ইন্ডাস্ট্রিতে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে যে শুধু রেখাই অনুরক্ত নন। অমিতাভও রেখার প্রতি দুর্বল। কারণ তাঁর মতো শান্ত ও সজ্জন আচরণের ব্যক্তিত্ব যে সম্পূর্ণ অপরিচিত কোনও ব্যক্তির গায়ে হাত তুলবেন, এ কথা কেউ ভাবতেই পারেননি।
এই ঘটনার পর থেকে অমিতাভ-রেখার সম্পর্কে গুঞ্জনের সিলমোহর পড়ে যায়। শোনা যায়, এই টানাপড়েন ভাল ভাবে নেননি জয়া বচ্চনও। তিনি ক্ষুব্ধ হন স্বামীর অন্য সম্পর্কের গুঞ্জনে।
জয়া নাকি শর্ত দেন স্বামীকে। রেখার সঙ্গে আর অভিনয় করা যাবে না। দাম্পত্য অটুট রাখতে অমিতাভও সম্মত হন স্ত্রীর শর্তে।
এ দিকে এই ঘটনার পরে অমিতাভের প্রতি শ্রদ্ধা আরও বেড়ে যায় রেখার। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরমহলের খবর, রেখাকে নাকি দু’টো আংটি উপহার দিয়েছিলেন অমিতাভ। সেই আংটি দু’টি সব সময় পরে থাকতেন রেখা।
কিন্তু ঘরে বাইরে জলঘোলা শুরু হতেই রেখার থেকে সরে যান অমিতাভ। অভিনেত্রীকে না জানিয়েই প্রযোজকদের জানিয়ে দেন যে তিনি ভবিষ্যতে আর কাজ করবেন না রেখার সঙ্গে। তবে যে ছবিগুলির কাজ চলছিল, সেগুলি তাঁরা শেষ করেছিলেন।
‘গঙ্গা কি সওগন্ধ’ ছবি থেকেই দুই তারকার সম্পর্ক প্রকাশ্যে আসে। আবার একইসঙ্গে তাঁদের সম্পর্কে দূরত্বও তৈরি হয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ঘিরে ঘন হয়েছে রহস্যের প্রলেপ। অনেকটা ঠিক রেখার ব্যক্তিগত জীবনের মতোই।