প্রাণঘাতী ক্যানসার থেকে বেঁচে ফিরেছেন সোনালি বেন্দ্রে। দীর্ঘদিন নিউ ইয়র্কের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। আপাতত সংসার নিয়েই ব্যস্ত অতীতের এই নায়িকা। রূপোলি পর্দায় প্রায় দেখাই যায় না তাঁকে।
কিন্তু নয়ের দশকে সোনালির রূপে মুগ্ধ ছিল প্রায় গোটা বলিউড। তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও ছিল অসংখ্য। একাধিক তারকা তাঁর প্রেমে পাগল হয়ে তাঁকে বিয়ে পর্যন্ত করতে চেয়েছিলেন!
২০০২ সালে সেই সব প্রেমিকের মনে আঘাত দিয়ে দীর্ঘ দিনের বন্ধু গোল্ডি বহেলকে বিয়ে করেন সোনালি। গোল্ডি পরিচালক এবং প্রযোজকও। তাঁদের এক সন্তান রয়েছে।
সোনালির প্রথম ছবি থেকেই তাঁর প্রেমে পড়েছিলেন রাজ ঠাকরে। সোনালির সৌন্দর্য তাঁকে বারবারই মুগ্ধ করত।
সোনালির সঙ্গে পরিচয়ের আগে থেকেই বিবাহিত ছিলেন রাজ। তিনি প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করে সোনালিকে বিয়ে করতেও চেয়েছিলেন।
কিন্তু তাঁর ভালবাসার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান কাকা বাল ঠাকরে। দল কালিমালিপ্ত হবে এমন কোনও কাজ যেন না করেন, সে কথা রাজকে সাফ জানিয়েছিলেন তিনি।
বাল ঠাকরের অবাধ্য হওয়ার সাহস রাজের ছিল না। বাধ্য হয়েই মনে পাথর রেখে সোনালির থেকে ক্রমে দূরত্ব বাড়িয়ে নেন তিনি।
সোনালি এবং সুনীল শেট্টি ছিলেন সে সময়ের জনপ্রিয় জুটি। একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তাঁরা। আর অভিনয়ের সুবাদেই তাঁরা একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলেন।
সোনালি এবং সুনীল দু’জনেই একে অপরকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁদের একে অপরের প্রতি ভালবাসা হৃদয়েই গোপন করে রাখতে হয়েছিল।
কারণ সোনালি জানতে পেরেছিলেন যে সুনীলও বিবাহিত। ছেলেবেলার বান্ধবীর সঙ্গেই সংসার পেতেছিলেন সুনীল। সোনালি চাননি সেই সাজানো সংসার শুধুমাত্র তাঁর কারণে ভেঙে যাক।
এর পর যাঁর সঙ্গে সোনালির নাম জড়িয়েছিল তিনি অভিনয় জগতের কেউ নন। তিনি ছিলেন একজন নামজাদা ক্রিকেটার। যাঁর গতি প্রতিপক্ষের মনে ভয় ধরানোর জন্য যথেষ্ট ছিল।
তিনি হলেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার। শোয়েবও নাকি সোনালির প্রেমে পাগল হয়ে উঠেছিলেন। সোনালির ছবি নাকি পার্সে নিয়েও ঘুরতেন তিনি।
তবে শোয়েবের প্রেম ছিল একতরফা। তাঁকে নিয়ে সোনালির কোনও কৌতূহল ছিল না।
শোনা যায়, শোয়েবও মনেপ্রাণে সোনালিকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। প্রয়োজনে সোনালিকে অপহরণ করার কথা প্রকাশ্যে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন তিনি।
এরপর ভারত-পাকিস্তানের এক ম্যাচে সোনালির সঙ্গে দেখা হয়েছিল শোয়েবের। কিন্তু নিজের ভালবাসার কথা সোনালিকে সরাসরি জানাতে পারেননি রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস। ফলে তাঁদের সম্পর্ক আর এগোয়নি।
সোনালির প্রতি প্রেম জাহির করেছিলেন গোবিন্দও। এক অনুষ্ঠানে গোবিন্দ আক্ষেপের সুরে জানিয়েছিলেন, তিনি বিবাহিত না হলে অবশ্যই সোনালিকে বিয়ের প্রস্তাব দিতেন।
ছোট থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন সোনালি। মাত্র ১৯ বছর বয়সে চিত্রপরিচালক কে রবিশঙ্করের নজরে আসেন তিনি। ১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় ‘আগ’। সেখানে গোবিন্দ ও শিল্পা শেট্টির সঙ্গে অভিনয় করেন সোনালি। এই ছবিই তাঁকে এনে দেয় সেরা নতুন মুখের পুরস্কার। এর পর একাধিক বলিউডি ও দক্ষিণী ছবির সুযোগ পেতে থাকেন।
নয়ের দশকে সোনালি বেন্দ্রে মানেই ছিল এক আলাদা আবেদন। ‘নরাজ’, ‘জখম’, ‘অঙ্গারে’ এ সব ছবি চলেছিল মূলত তাঁর নামেই। অভিনয় দক্ষতার পাশাপাশি এক সহজাত এবং নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের অধিকারী ছিলেন তিনি।