রবীন্দ্রজয়ন্তী মানেই তো বৈশাখজুড়ে কবির আবাহন। তাঁর কবিতায়, গানে হারিয়ে যাওয়ার ছল। অনেকেই কবির লেখা উপন্যাসেই নতুন ভাবে খোঁজেন তাঁকে।
চিত্রাঙ্গদা, নমিত দাস এবং জয় সেনগুপ্ত
প্রতি বছর বৈশাখে বাঙালি নতুন করে ডুব দেয় রবীন্দ্র-প্রেমে। রবীন্দ্রজয়ন্তী মানেই তো বৈশাখজুড়ে কবির আবাহন। তাঁর কবিতায়, গানে হারিয়ে যাওয়ার ছল। অনেকে কবির লেখা উপন্যাসেই নতুন ভাবে খোঁজেন তাঁকে। যেমন, জয় সেনগুপ্ত, চিত্রাঙ্গদা শতরূপা বা নমিত দাস। রবীন্দ্রনাথের কিছু লেখা আজও তাঁদের নাড়া দেয়। কাজের ফাঁকে ঘুরেফিরে পাতা উল্টে আবার পড়েন তাঁরা।
আড্ডাচ্ছলে বিষয়টি তাঁরা জানিয়েওছেন আনন্দবাজার অনলাইনকে। জয় সেনগুপ্তের ভীষণ পছন্দের ‘গীতবিতান’ আর ‘ডাকঘর’। কেন? অভিনেতার যুক্তি, ‘‘গীতবিতানে কবির ২২৩২টি গান যেন মণিমুক্তো। আমার বেড়ে ওঠার সঙ্গী। ছোটবেলায় আমার মাকে এই গানগুলো গাইতে শুনতাম। একটু বড় হয়েই পড়লাম ‘ডাকঘর’ । জানলার কাছে বসে অমলের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষার কথা পড়তে পড়তে মনটা টনটন করে উঠত।’’
নাটকে পছন্দের তালিকায় প্রথম স্থান ‘রক্তকরবী’র। তার পরেই ‘রাজা’, ‘চতুরঙ্গ’। চরিত্রের জটিলতার সঙ্গে কবির মানবতাবোধ মুগ্ধ করেছে তাঁকে।
কবি-পরিচালক শতরূপা সান্যালের মেয়ে চিত্রাঙ্গদা শতরূপা। তাঁর জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে প্রভাব ফেলবেন, তা-ই স্বাভাবিক। চিত্রাঙ্গদা এখনও সুযোগ পেলে পড়েন নৃত্যনাট্য ‘চণ্ডালিকা’। কারণ, এটি প্রথম জাতিভেদ প্রথার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিল। সেই সুবাদে রবীন্দ্র যুগের থেকেও এগিয়ে ছিল অনেকটাই। চিত্রাঙ্গদার দ্বিতীয় পছন্দ আরও অনেকের সঙ্গেই মেলে। রবীন্দ্রনাথের শেষ জীবনে লেখা ‘শেষের কবিতা’ আজও যেন তাঁর শুরুর জীবনের গল্প বলে। আশি পেরিয়েও বিশ্বকবি এই লেখায় চূড়ান্ত আধুনিক। যাকে কেন্দ্র করে একুশ শতকেও ছবি বানানো হয়।
যাঁরা রবীন্দ্রনাথকে চিরাচরিত ভাবে দেখতে রাজি নন, তাঁরা বেছে নেন ‘নষ্টনীড়’-এর মতো রবীন্দ্র-উপন্যাস। যেখানে চরিত্রে চরিত্রে দ্বন্দ্ব আছে, সম্পর্কের টানাপড়েনও। ‘বম্বে টকিজ’-খ্যাত অভিনেতা নমিত দাসও এই দলে। তাই তাঁর প্রথম পছন্দ সত্যজিৎ রায়ের ‘চারুলতা’। যেখানে তাঁর পড়া প্রতিটি চরিত্র জীবন্ত করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, শৈলেন মুখোপাধ্যায়।