টলিউডের ইয়ং ব্রিগেড

এই মুহূর্তে বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে কয়েক জন তরুণ তুর্কি সামনে এসেছেন। কারা স্বমহিমায় জায়গা করে নিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে? কে কতটা ব্যস্ত? চোখ রাখল আনন্দ প্লাস এই মুহূর্তে বাংলা ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে কয়েক জন তরুণ তুর্কি সামনে এসেছেন। কারা স্বমহিমায় জায়গা করে নিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রিতে? কে কতটা ব্যস্ত? চোখ রাখল আনন্দ প্লাস

Advertisement

ঊর্মি নাথ

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৫
Share:

ঋদ্ধি ও ইশা

ঋদ্ধি সেন

Advertisement

‘ইতি মৃণালিনী’, ‘কহানি’, ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’, ‘পার্চড’, ‘লায়ন’, ‘সমান্তরাল’... ১৯ বছরের ঋদ্ধি সেনের ঝুলিতে ছবির সংখ্যা উল্লেখ করার মতো। এই মুহূর্তে তিনি মুম্বইয়ে, প্রদীপ সরকারের ‘ইলা’র শ্যুটিংয়ে। ‘‘কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি ‘নগরকীর্তন’-এর শ্যুটিং শেষ। একটি ওয়েব সিরিজে তোপসে হয়েছি। এ ছাড়া দুটো শর্ট ফিল্মের চিন্তা করছি। প্রথমটা নবারুণ ভট্টাচার্যের একটা ছোট গল্প অবলম্বনে, দ্বিতীয়টা নিজেই লিখেছি, একটা লেডিস ব্যাগ নিয়ে। এটার শ্যুটিং শুরু হবে পরের মাসে। প্রথমটার জন্য ক্রিপ্ট লেখা শুরু করেছি,’’ বললেন ঋদ্ধি। যাঁর ঠাকুমা চিত্রা সেন, বাবা কৌশিক ও মা রেশমি সেন, তাঁর জীবন অভিনয়ের সঙ্গে জুড়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। তবুও পরিচালনা নিয়ে যখন ভাবছেন, তখন জিজ্ঞেস করতেই হয়, অভিনয় না পরিচালনা, ভবিষ্যতে কোনটাকে প্রাধান্য দেবেন? ‘‘অবশ্যই অভিনয়। তবে ক্যামেরার পিছনের কাজও আমাকে টানে। বলতে পারেন, নিজেকে কিছুটা পরীক্ষা করার জন্যই শর্ট ফিল্ম মেকিংয়ের কথা ভেবেছি।’’ ‘স্বপ্নসন্ধানী’র অন্যতম সদস্য ঋদ্ধি। এই বছর থিয়েটার অলিম্পিকে মঞ্চস্থ হবে ‘নির্ভয়া’। সেই কাজ নিয়েও ব্যস্ত ঋদ্ধি সেন।

মন ভাল করতে ঋদ্ধি সিনেমা দেখেন। সে তালিকায় ‘দ্য পোস্ট’ থেকে ‘দবং’... সব রকমেরই ছবি আছে। তা হলে কমার্শিয়াল ছবির অফারে ‘না’ করবেন না তো? ‘‘আমার মতে, আইটেম, নাচ-গানের ছবি মানেই কমার্শিয়াল ছবি নয়। আসলে দু’ ধরনের ছবি হয়। ভাল ছবি এবং খারাপ ছবি। যে কোনও ভাল ছবি করতেই আমি রাজি।’’

Advertisement

আরিয়ান ভৌমিক

এই ঠান্ডায় কালিম্পংয়ে নতুন ছবির শ্যুটিংয়ে আরিয়ান। যদিও ছবির বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি মুখে কুলুপ আঁটলেন। ছোট থেকেই তাঁর স্বপ্ন, অভিনেতা হওয়ার। ‘নীল রাজার দেশে’, ‘চলো পাল্টাই’, ‘উইন্ডো কানেকশন’, ‘মিশর রহস্য’, ‘মেসি’, ‘ইয়েতি অভিযান’... এর মধ্য দিয়ে একটু একটু করে স্বপ্নের দিকে এগোচ্ছেন আরিয়ান। একটি ওয়েব সিরিজে ব্যোমকেশ-কাহিনি ‘রক্তের দাগ’-এ তাঁকে দেখা যাবে সত্যকামের চরিত্রে। ‘‘এই প্রথম কোনও ডার্ক শেডের চরিত্র করলাম।’’ শ্যুটিংয়ের চাপ না থাকলে খেয়ে-ঘুমিয়ে বা আড্ডা দিয়ে সময় কাটানো না-পসন্দ আরিয়ানের। অবসরে তিনি মন দিয়ে ওয়র্কআউট করেন। ‘‘অ্যাডভান্স বডি বিল্ডিং ট্রেনিং নিচ্ছি। তা ছাড়া মার্শাল আর্টও করি। শ্যুটিং না থাকলে সে সময়টা যতটা পারি নিজেকে তৈরি রাখার চেষ্টা করি। আসলে শ্যুটিংয়ের সময় তো শারীরচর্চা করা যায় না।’’ আত্মবিশ্বাসী আরিয়ানের প্রত্যয় বলছে, ভাগ্য সহায় থাকলে টলিউডকে তিনি ভবিষ্যতে হতাশ করবেন না।

ইশা সাহা

এখনও পর্যন্ত ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ তাঁর একমাত্র মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি। একটা ছবিতেই ইশা সাহা অনেকটা স্কোর করে ফেলেছেন। এই মুহূর্তে তিনি ব্যস্ত শৌভিক গুহর ‘বুড়ো সাধু’ ছবির শ্যুটিং নিয়ে। শেষ হয়েছে ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’র শ্যুটিং। সিনেমার আগে তিনি ‘ঝাঁঝ লবঙ্গ ফুল’ সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন। ‘‘অভিনয়ে আসার কোনও পরিকল্পনাই ছিল না। আমি আইনের ছাত্রী। একটা অনুষ্ঠানে ‘ঝাঁঝ লবঙ্গ ফুল’-এর ইপির সঙ্গে পরিচয় হয়।’’ তাঁর অবশ্য কোনও দিনই ওকালতি করার ইচ্ছে ছিল না। পরিকল্পনা ছিল পরীক্ষা দেবেন জজ হওয়ার জন্য। আইন ও অভিনয় পাশাপাশি চলবে? ‘‘না...না, সেটা সম্ভব নয়। তবে অভিনয়েই ফোকাস করতে চাই।’’ ভবিষ্যতে তাঁর প্রিয় অভিনেত্রী আলিয়া ভট্টর মতো বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে চান প্রতিভাময়ী ইশা।

ঋতব্রত, আরিয়ান এবং সুরঙ্গনা

সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়

১০ বছর বয়সে দুলাল দে-র ছবি দিয়ে অভিনয় শুরু সুরঙ্গনার। তার পর ‘গয়নার বাক্স’, ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’, ‘সমান্তরাল’... পরপর। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ইংলিশ অনার্সের সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্রী সুরঙ্গনার অবশ্য ভবিষ্যতে অধ্যাপনা করারই ইচ্ছে। ‘‘প্রফেশনালি গানটাও করতে চাই। প্রথম প্লে ব্যাক করেছিলাম ‘ওপেন টি...’-তে ‘হে সখা মম...’। সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘উমা’ ছবিতেও প্লে ব্যাক করছি। ‘সমান্তরাল’-এও গান গেয়েছি।’’ ঋদ্ধি সেনের শর্ট ফিল্মে তিনি অভিনয় করছেন। শর্ট ফিল্ম দেখতে ভালবাসেন সুরঙ্গনা। নাসিরুদ্দিন শাহ, রাজকুমার রাও, ইরফান খান তাঁর পছন্দের অভিনেতা। হিন্দি ছবির অফার পেলে কী করবেন? ‘‘অফারটা যদি প্লে ব্যাকের জন্য হয়, তা হলে খুশি হব। অভিনয়ের জন্য এলে সত্যিই সারপ্রাইজড হব,’’ হেসে বললেন সুরঙ্গনা।

ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়

‘কহানি’, ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’, ‘দুর্গা সহায়’-এর পর তাঁর ‘রং বেরঙের কড়ি’ ও ‘পর্ণমোচী’ মুক্তির অপেক্ষায়। তবু এই মুহূর্তে অভিনয় নিয়ে ভাবছেন না ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। ‘‘সামনেই আইএসসি। একটাই চিন্তা, ভাল রেজাল্ট। তার পর তুলনামূলক সাহিত্য নিয়ে পড়ার ইচ্ছে,’’ বলছেন ঋতব্রত। অবশ্য পরীক্ষার জন্য থিয়েটারে বিরতি নেই। ‘যুবনায়ক’ নাটকে বাবা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিনয় করছেন। করছেন ‘রাজগুরু’ নাটকও। গিটার বাজাতে, ছবি আঁকতে ভাল লাগে তাঁর। গল্প, নাটকও লেখেন ঋতব্রত। একটি শর্ট ফিল্মও তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement