দাম্পত্য ও পরকীয়ার চেনা সমীকরণে জড়ালেন তৃণমূলের বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক। এক দিকে রয়েছে তাঁর স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে তাঁর ‘বান্ধবী’ তৃণমূলের কর্মী এবং টেলি-অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজ। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ জারি। তিন জনের ব্যক্তিগত জীবন এখন জনসমক্ষে। রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ একটি প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছেন— কে সত্যি বলছেন আর কে মিথ্যে?
‘জনতা এক্সপ্রেস’-এ উঠে খ্যাতির যাত্রা শুরু। একের পর এক মাইলফলক পেরিয়ে আজ তিনি ‘দুয়ারে বিধায়ক’। এর মাঝে ছোট পর্দা ও বড় পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন কাঞ্চন মল্লিক। কিন্তু দীর্ঘ এই চড়াই-উতরাইয়ের পরে শিখরে পৌঁছে বিতর্কের ঝড়ে বিধ্বস্ত বিধায়ক। এই মুহূর্তে কাঞ্চন ও পিঙ্কির ৯ বছরের দাম্পত্য আইনের দরজায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। পিঙ্কি তাঁর স্বামী কাঞ্চনের বিরুদ্ধে নিউ আলিপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেছেন রবিবার সকালে। পিঙ্কির অভিযোগ, তাঁকে মানসিক নির্যাতন করেছেন কাঞ্চন। মদ্যপ অবস্থায় গালিগালাজ করেছেন। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে পিঙ্কি তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন বলে কাঞ্চন নাকি মাঝ রাস্তায় তাঁকে হেনস্থা করেছেন। সঙ্গে ছিলেন শ্রীময়ীও। পিঙ্কির দাবি, তিনিও হুমকি দিয়েছেন পিঙ্কিকে। কাঞ্চনও রবিবার বিকেলে চেতলা থানায় তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা এফআইআর দায়ের করেন। আনন্দবাজার অনলাইনে কাঞ্চন তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ‘‘আমি অভিনেতার বাইরেও এক জন মানুষ। সেটা মনে রাখা উচিত। আমার এবং শ্রীময়ীর দিকে যে ভাবে তেড়ে এসেছিল তারা, সেটা ঠিক নয়। তাই আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি।’’
শ্রীময়ী ও কাঞ্চন, নিজেদের ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে কোনও দিনই লুকোছাপা করেননি। শ্রীময়ী একাধিক বার তাঁদের সম্পর্ককে ‘দাদা-বোন’-এর নাম দিয়েছেন। তাঁর দাবি, পিঙ্কি এই সমীকরণ কলঙ্কিত করছেন ‘পরকীয়া’-র প্রসঙ্গ তুলে। তাঁর দাবি, ইন্ডাস্ট্রির কোনও সুদর্শন, সুপুরুষ নায়কের সঙ্গে জড়িয়ে গুঞ্জন রটলে তবু মানা যেত। শেষ পর্যন্ত তাঁর ‘দাদা’ কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে মিথ্যে রটনা! অন্য দিকে কাঞ্চনের মতে, পিঙ্কি তাঁর নিজের পরকীয়া লোকানোর জন্য কাঞ্চন এবং শ্রীময়ীর সম্পর্ককে প্রেম হিসেবে দেখছেন। এ ছাড়া কাঞ্চন জানান, প্রশাসনিক মহলেও ‘বন্ধু’ পাতিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।
কাঞ্চনের এই অভিযোগ এক ফুৎকারে উড়িয়েছেন পিঙ্কি। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেছেন, “শ্রীময়ী চট্টরাজের সঙ্গে ওর পরকীয়ার জন্য বা ওর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অভিযোগ আমি করিনি।’’ রাস্তায় দাঁড়িয়ে তাঁর এবং তাঁর ছেলের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করা হয়েছে বলে পিঙ্কি প্রতিবাদ করেছেন। এমনটাই জানিয়েছেন পিঙ্কি। এক জন স্ত্রী নয়, মা হিসেবে এই পদক্ষেপ করেছেন তিনি।
তিক্ততায় পরিণত হয়েছে কাঞ্চন ও পিঙ্কির সম্পর্ক। পিঙ্কির ঠাকুমা সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ও এই বিষয় নিয়ে অত্যন্ত চিন্তায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আনন্দবাজার অনলাইনে। এখন দেখার, আইনি পথ তাঁদের সম্পর্কগুলোকে কোথায় নিয়ে যায়।