স্বাধীনতা দিবসে দেশের ভবিষ্যৎ রূপরেখার ধারণা দেন প্রধানমন্ত্রী। একই দিনে সেলুলয়েডে ভেসে ওঠেন অক্ষয়কুমার, দেশের বার্তা দশের কাছে পৌঁছে দিতে। পৃথিবীর মাটি ছেড়ে মঙ্গল গ্রহ অভিযানে অক্ষয় এ বার একা নন। সঙ্গে তাঁর ভারী মহিলা ব্রিগেড। পরিচালক জগন শক্তির ‘মিশন মঙ্গল’-এ আবারও সরকারের ধ্বজাধারী অক্ষয়। তবে বিদ্যা বালনকে সামনে রেখে খেলার মোড় একটু হলেও ঘুরিয়েছেন তিনি।
নজরকাড়া কম খরচে প্রথম প্রচেষ্টায় মঙ্গল গ্রহে স্যাটেলাইট পাঠিয়ে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নজির গড়েছিল ভারত। অক্ষয়ের সিনেম্যাটিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে যেন খাপে খাপ। বিনোদনের মধ্য দিয়ে দেশের গৌরবগাথা তুলে ধরা। মঙ্গলযান পাঠাতে দেশের খরচ হয়েছিল ৪০০ কোটি। এই ছবি নির্মাণে প্রায় একশো কোটি। খরচ নেহাত কমই বটে!
মহাকাশ বিজ্ঞান ও সেই সংক্রান্ত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়াশোনা সম্পর্কে দেশের নব্বই শতাংশ মানুষের ধারণা নেই। কিন্তু জ্বালানি বাঁচিয়ে গরম তেলে লুচি ভাজা আর গতিজাঢ্যের প্রাথমিক শর্ত বুঝিয়ে বললে মানুষ বুঝতে পারবেন। চিত্রনাট্যকার জগন রকেট সায়েন্সের সঙ্গে হোম সায়েন্সকে মিলিয়ে দিয়েছেন। সেটাই ছবি অনুযায়ী মঙ্গলযানের চালিকা শক্তি। ভারতীয় চিত্রনাট্যকারদের এই উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেখে ইসরোর বিজ্ঞানীরা কী বলবেন, জানা নেই!
মিশন মঙ্গল
পরিচালনা: জগন শক্তি
অভিনয়: অক্ষয়, বিদ্যা, তাপসী, সোনাক্ষী, নিত্যা, কীর্তি, শরমন
৬/১০
অক্ষয়ের পাশে মেয়েদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্ক্রিন স্পেস পেয়েছেন বিদ্যা। নিয়ম মতোই তিনি সুন্দর ও সাবলীল। বাকিদের মধ্যে তাপসী পান্নু, সোনাক্ষী সিংহ, নিত্যা মেনন, কীর্তি কুলহারি, শরমন জোশী, এইচ জি দত্তাত্রেয়... সকলেরই ব্যক্তিজীবন দেখানো হয়েছে। তবে বিদ্যার মতো গুরুত্ব তাঁরা পাননি। তবে নজরকাড়া সংলাপ অক্ষয়ের মুখেই।
এই ধরনের ছবিতে বিনোদনের খাতিরে অনেক ক্ষেত্রেই সিনেম্যাটিক লাইসেন্সের যথেচ্ছ ব্যবহার হয়। এখানেও ইসরোর দক্ষ বিজ্ঞানীরা নাচতে নাচতে নিজেরাই অফিসের অন্দরসজ্জা বদলে দেয়। তবে ছবির মূল বার্তায় তা অন্তরায় হয়নি। প্রশ্ন তোলার অবকাশ অনেক। তবে প্রশ্নাতীত বিশ্বাস না থাকলে বিজ্ঞানেও এক্সপেরিমেন্ট হয় না। হিন্দি ছবিও বানানো যায় না।
ছবির মূল চরিত্র তারার (বিদ্যা) কথায়, বিজ্ঞানের ঊর্ধ্বে সুপারপাওয়ার আছে। তাকে কেউ ভগবান নাম দিতে পারে, কেউ বা অন্য কিছু। শরমনের চরিত্রটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন। মুসলিম হওয়ায় বাড়ি ভাড়া পেতে সমস্যা হয় কীর্তির চরিত্রটির। বিজ্ঞানের জয়ধ্বনি তুলতে তুলতেও ধর্মের নানা রং এক বার ছুঁয়ে যেতে হয়। যেমন শেষে ‘মিত্রোঁ’ কণ্ঠস্বর জোরালো হতে হতে পর্দাতেও চলে আসেন তিনি। সব মঙ্গলধ্বনি তো তাঁরই জন্য!