মৃত্যুর রঙিন উদ্‌যাপন

কাহিনির শুরুতেই দর্শক জেনে যাচ্ছেন, আয়েশার (জ়াইরা) চরিত্রটি মারা যাবে।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০০:১৮
Share:

দ্য স্কাই ইজ় পিঙ্ক
পরিচালনা: সোনালি বসু
অভিনয়: প্রিয়ঙ্কা চোপড়া, ফারহান আখতার, জ়াইরা ওয়াসিম,
রোহিত শরাফ

৬/১০

Advertisement

কিছু কিছু ছবি বড় কঠিন প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। এক দম্পতি জানে, তাদের আগত সন্তান হয়তো সম্পূর্ণ সুস্থ হবে না। কিংবা বেশি দিন জীবিত থাকার সম্ভাবনা নেই। সন্তান পৃথিবীতে এলে কারও জীবনপথই সহজ হবে না। তা হলে কি সেই দম্পতি চাইবে, তাদের সন্তান দিনের আলো দেখুক? যেমন কঠিন, তেমনই অস্বস্তিকর প্রশ্ন। বাস্তবের নীরেন-অদিতির হাত ধরে পর্দার চরিত্রেরাও সিদ্ধান্তের কঠিন রাস্তাটা পেরোয়। কেমন ছিল তাদের সেই জার্নি, তা নিয়েই ‘দ্য স্কাই ইজ় পিঙ্ক’-এর গল্প।

কাহিনির শুরুতেই দর্শক জেনে যাচ্ছেন, আয়েশার (জ়াইরা) চরিত্রটি মারা যাবে। এ ধরনের কাহিনির আবেগে ভারাক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। পরিচালক সোনালি বসু সযত্ন সেই পিছল পথ পেরিয়েছেন। জীবনকে সেলিব্রেট করার মধ্য দিয়ে মৃত্যুকে মেনে নেওয়ার রাস্তা দেখিয়েছেন পরিচালক। হাসি-ঠাট্টার মধ্যেই মিলেমিশে যায় কাহিনির করুণ সুর। পরিচালকের ন্যারেশনও ভারী সুন্দর। আয়েশা এ কাহিনির কথক। নন-লিনিয়র স্টাইলে নীরেন (ফারহান) ও অদিতির (প্রিয়ঙ্কা) প্রেম, আয়েশাকে নিয়ে টানাপড়েন সবই জ়াইরাকে দিয়ে বলিয়েছেন পরিচালক।

Advertisement

ইমিউনিটি (এসসিআইডি) সমস্যা সংক্রান্ত জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত আয়েশা। ছোট্ট শিশুকে নিয়ে শুরু হয় বাবা-মায়ের লড়াই। ১৩ বছরের লড়াইয়ের পরে সুস্থ হয় আয়েশা। কিন্তু খুশি বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। পালমোনারি ফাইব্রোসিস থাবা বসায় শরীরে। নিয়তির সঙ্গে এ বারে লড়াই আরও কঠিন।

এ ছবির গল্প বলার জন্য আড়াই ঘণ্টা অনেকটা বেশি সময়। যে কারণে থেকে থেকেই কাহিনির বুনন আলগা হয়ে গিয়েছে। লন্ডনে একরত্তি সন্তানকে নিয়ে অদিতির একার লড়াই হয়তো আরও মজবুত করে দেখানো যেত। যেহেতু বাস্তব জীবনের ঘটনাকে পরিচালক দর্শাচ্ছেন, সেখানে আরও কিছু ডিটেলিং প্রয়োজন ছিল। ছবি দেখতে গিয়ে মনে হয়, নীরেন-অদিতি যেন খুব সহজেই বড়লোক হয়ে যায়। ছবির শেষে আসল নীরেন-অদিতির কিছু ভিডিয়ো ক্লিপিং দেখানো হয়। সেখানে বোঝা যায়, বাস্তব আসলে সিনেমাকেই চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে।

প্রিয়ঙ্কার চরিত্রটি এ ছবির মূল স্তম্ভ। ছবিটি দেখতে গিয়ে বাস্তবের অদিতির অসম্ভবকে সম্ভব করার লড়াইকে কুর্নিশ। ফারহানও নিজের চরিত্রটি জাস্টিফাই করেছেন। জ়াইরা এবং তাঁর দাদার চরিত্রে রোহিতও ভাল। তবে বেশি বয়সের চরিত্রে ফারহান-প্রিয়ঙ্কা দু’জনেরই মেকআপ বেমানান। সোনালি তাঁর আগের দু’টি ছবি ‘আমু’ এবং ‘মার্গারিটা উইথ আ স্ট্র’তে দক্ষ অভিনেতাদের নিয়েছিলেন। এখানে তিনি স্টার নিয়েছেন। তারকাদের পরিসর দেওয়ার জন্য হয়তো তাঁকে কিছু আপস করতে হয়েছে। পরিচালকের আগের কাজের সঙ্গে তুলনা করলে, ‘দ্য স্কাই ইজ় পিঙ্ক’কে খানিক দুর্বলই মনে হবে।

সোনালির ছবির নামকরণের স্টাইল স্বতন্ত্র। সকলেরই নিজস্ব আকাশ আছে। আর তার রং যা খুশি হতে পারে। নীল, হলুদ, গোলাপি... যা খুশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement