Bonny Sengupta

Bonny Sengupta: শাসকদল কাজ করতে দিচ্ছে না ডাহা মিথ্যে কথা, বিজেপি-তে যোগ দিয়ে বেশি কাজ পেয়েছি: বনি

কৌশানির মা চলে গেলেন বিয়ে আবারও পিছিয়ে গেল, হয়তো ২০২৩-এর শুরু বা শেষে শুভ কাজ হতে পারে।

Advertisement

উপালি মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ১৪:৩৩
Share:

বনি সেনগুপ্ত।

প্রশ্ন: শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের পথে বনি সেনগুপ্তও?

Advertisement

বনি: কারওর মতো কিছু নয়। অভিনয়ের চাপ বাড়ছে। এখন রাজনীতিতে ব্যস্ত থাকলে পেশা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই রাজনীতি থেকে দূরে থাকছি।

প্রশ্ন: পুজোর সময় থেকেই আবহ তৈরি, আপনি-কৌশানি ঢাক বাজিয়েছিলেন অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে...

Advertisement

বনি: (হেসে ফেলে) এটা প্রতি বছরের ঘটনা। উৎসব, উদযাপনে কোনও ভেদাভেদ নেই। অরূপদার সঙ্গে প্রতি বছরেই ঢাক বাজাই। এ বছরেই বা বাদ দেব কেন! তাই ফোন করে নিজেই জানিয়েছিলাম, আমি আসছি।

প্রশ্ন: উৎসবে ছাড়পত্র পেলে দোলে শ্রাবন্তী-পায়েল-তনুশ্রী মদন মিত্রের সঙ্গে রং খেলায় রাজ্য রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় বইল কেন?

বনি: নির্বাচনের আগেই ঘটনাটি ঘটেছিল। ফলে, বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। নির্বাচন শেষ। আবার সব স্বাভাবিক। এটা তো ক্রিকেট ম্যাচের সময়েও দেখা যায়। দুই দলে ভাগ হয়ে যান দর্শক। খেলা শেষে সবাই আবার একাকার।

প্রশ্ন: হঠাৎ রাজনীতিতে মোহ ভঙ্গ ঘটল? নেপথ্য কারণ দলের পরাজয়?

বনি: মোহ ভঙ্গ নয় তো! একটা সময়ের পরে মনে হচ্ছিল, আমি যেন রাজনীতিতে বেশি জড়িয়ে পড়ছি। অভিনয় থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। অথচ আমার আসল পরিচয়, আমি অভিনেতা। তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত। সবাই খুব ভুল ভাবছেন, দল হেরেছে বলে আমরা সরে যাচ্ছি। আমার অন্তত তেমন কোনও মানসিকতা নেই। দল জিতে সরকার গড়লেও আমি অভিনয়টাই আগে করতাম। তখনও শ্যুটে ব্যস্ত থাকলে রাজনীতি থেকে এ ভাবেই দূরে থাকতাম।

প্রশ্ন: সব জেনেই তো রাজনীতিতে এসেছিলেন!

বনি: আমি তখন এক বারও বলিনি, অভিনয় থেকে দূরে সরে যাব। বা অভিনয়ে কম সময় দিয়ে রাজনীতিতে বেশি সময় খরচ করব। দলীয় নেতাদেরও একই কথা বলেছিলাম। সেটাই মেনে চলছি মাত্র। আমি কিন্তু আমার নীতি বা পথ বদলাইনি।

প্রশ্ন: এটাও বলেননি, দরকারে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন...

বনি: আমি কিন্তু এখনও বিজেপিকে লিখিত বা মৌখিক ভাবে দল ছেড়ে দিচ্ছি এমন কিছুই বলিনি বা জানাইনি। এটুকু জানিয়েছি, আপাতত অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত থাকব। হাতের কাজ শেষ করব। নতুন ছবির ডাক পাচ্ছি। সেগুলোয় মন দেব। মোদ্দা কথা, অভিনেতা আবার ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে’ ডুব দেবেন।

প্রশ্ন: অর্থাৎ, বনি গেরুয়া শিবিরে ফেরার দরজাও খোলা রাখছেন, শাসকদলকেও উপেক্ষা করছেন না?

বনি: আমায় দুই দলই ডাকছে। দুই দলকেই জানিয়েছি, অভিনয় আমার পেশা। আমার দায়িত্বে সংসার। ফলে, কাজ থেকে দূরে থাকার কোনও উপায় নেই। আমিও অভিনয় ছাড়া থাকতে পারব না। তাই এই মুহূর্তে পুরোপুরি রাজনীতিতে সময় দিতে পারব না।

প্রশ্ন: দলের কী প্রতিক্রিয়া?

বনি: দলের কোনও আপত্তি নেই। নেতৃস্থানীয়রা বলেছেন, যখন দরকার পড়বে আমরা ফোনে তোমায় ডাকব। তখন তুমি ব্যস্ত না থাকলে আমাদের সঙ্গে থেকো। আমাদের ভাল লাগবে।

প্রশ্ন: বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে বাকিরা দল ছেড়েছেন, আপনার কোনও অভিযোগ?

বনি: আমার কিছু ভাবনা আছে। আপাতত সেগুলো জানাইনি। তবে ওই ভাবনাগুলো কার্যকরী হলে দলেরই মঙ্গল।সেই ভাবনা নির্বাচনের সময় বাস্তবায়িত হলে হয়তো ফল ভাল হত। সেগুলোই জানাব। যদি বিবেচনা করা হয়, ভাল লাগবে।

প্রশ্ন: রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পরেই কিন্তু আপনার মুঠোভর্তি কাজ!

বনি: (হেসে ফেলে) আমি তো তা হলে ইন্ডাস্ট্রিতে ‘উদাহরণ’ তৈরি করলাম! যাঁরা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিলেন তাঁরা এ বার কী বলবেন? শাসকদল কাজ করতে দিচ্ছে না, ডাহা মিথ্যে কথা। দলে যোগ দেওয়ার পরে কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছিল। আলোচনায় সব মিটে গিয়েছে। আর এখন তো ইন্ডাস্ট্রিতে নিরবচ্ছিন্ন শান্তি। যাঁদের হাতে কাজ নেই তাঁরা রটাচ্ছেন এ সব। একা আমি নই, যশ দাশগুপ্ত, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় সহ সবাই কাজ পাচ্ছেন।

প্রশ্ন: আপনার সিদ্ধান্তে বাবা অনুপ সেনগুপ্ত, মা পিয়া সেনগুপ্ত, হবু স্ত্রী কৌশানি খুব খুশি...

বনি: হ্যাঁ, আমি আবার অভিনয়ে মন দিয়েছি। কাজ পাচ্ছি। ব্যস্ত থাকছি। পরিবার তো খুশি হবেই। রাজনীতির সঙ্গে পরিবারের সবাই কোনও না কোনও ভাবে জড়িয়ে পড়েছিলাম। ফলে, সবার মনেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল, তা হলে কি ছবির দুনিয়াকে ভুলতে বসেছি আমরা? আমার এই পদক্ষেপ ওঁদের অনেকটাই নিশ্চিন্ত করেছে।

প্রশ্ন: তাই! নাকি বিরোধী শিবির ছেড়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছে বলে...?

বনি: (হা হা হাসি) কী কাণ্ড! আমি তো কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে থাকি না! রাজনীতিতে থাকব কিনা, শাসকদলে যোগ দেব কিনা--- সবটাই সময় বলবে। যা পদক্ষেপ নেব সবটা সবাইকে জানিয়েই নেব।

প্রশ্ন: সামনেই পুর নির্বাচন। আপনার ভূমিকা?

বনি:
শ্যুটে বাইরে চলে যাচ্ছি। ওই সময় দেশেই থাকব না (হাসি)।

প্রশ্ন: অভিনয়ের পাশাপাশি মানুষের জন্যও কাজের ইচ্ছে ছিল, সে সবের কী হবে?

বনি: সেই ইচ্ছে এখনও আছে। দেখা যাক কী হয়। এখন আমি একের পর এক নিত্য নতুন চরিত্রে বন্দি। অন্য কোনও দিকে মাথা ঘামানোর মতো অবস্থায় নেই। অভিনয়ের দিক সামলে নিয়ে আবার সব দিকেই মনোযোগ দেব। আবারও বলছি, আগে অভিনয় তার পরে বাকি কাজ।

প্রশ্ন: ‘আম্রপালি’র পরে হাতে আর কী কাজ রয়েছে?

বনি: বাংলাদেশের ছবির কাজ শেষ করব। কৌশানির মা আচমকা চলে যাওয়ায়, চার দিনের কাজ বাকি রয়ে গিয়েছে। সঙ্গে আরও পাঁচ দিন যুক্ত হবে। মোট নয় দিনের কাজ সেরে কলকাতায় ফিরব। তার পর ‘ডা. বক্সী’-র শ্যুটে যোগ দেব। নতুন বছরে হয়তো আমি-বাবা-কৌশানি আবার জোট বাঁধতে পারি। আপাতত এই। মাঝে দিন দশেকের ছুটি নিয়ে ঘুরতে যাব।

প্রশ্ন: কৌশানিকেও তো সামলাতে হচ্ছে? বিয়ে কি আবারও পিছল?

বনি: মায়ের অভাব কেউ পূরণ করতে পারে না। আমরাও পারব না। সময় আস্তে আস্তে ক্ষতে প্রলেপ দেবে। তবে আমরা সব সময়েই ওর পাশে আছি। সেটা কৌশানি জানে। হ্যাঁ, বিয়ে আবারও পিছিয়ে গেল। হয়তো ২০২৩-এর শুরু বা শেষে শুভ কাজ হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement