‘বমফড়’ ছবির একটি দৃশ্য।
বমফড়
(ওয়েব মুভি)
পরিচালনা: রঞ্জন চান্ডেল
অভিনয়: আদিত্য, শালিনী,
বিজয়, যতীন
৪/১০
পরেশ রাওয়ালের ছেলে আদিত্য রাওয়ালের ডেবিউ ছবি। সঙ্গে আবার ‘অর্জুন রেড্ডি’খ্যাত শালিনী পাণ্ডে। বেশ কয়েকটা প্লাস পয়েন্ট জুড়েই শুরু হয় গল্প বলা। কিন্তু এখন যে ছবির বাজারে গল্পই হিরো, তা মনে হয় বিস্মৃত হয়েছেন পরিচালক।
কলেজছাত্র নাসির ওরফে নাটে (আদিত্য) অসামাজিক কাজে লিপ্ত। কলেজে টুকলি করার র্যাকেট চালায় সে, ধরা পড়লেই পরীক্ষা বাতিল করে মারপিট। সময় কাটানো বলতে বন্ধুদের সঙ্গে নেশা করা। তার এই লাগামছাড়া জীবনে হঠাৎ হাজির নীলম (শালিনী), প্রথম দর্শনেই তার প্রেমে পড়ে নাটে। নাসির-নীলমের প্রেম জমে ওঠার আগেই বাদ সাধে শহরের ডন জিগর (বিজয়)। কারণ জিগরের সঙ্গিনী নীলম। জিগরের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা গোপন রেখেই নাসিরের সঙ্গে ঘুরে বেড়ায় সে। কিন্তু দু’জনকে ধরে ফেলে জিগর। প্রাণে বাঁচতে নাসিরের সঙ্গে শহর ছেড়ে পালায় নীলম। এই পর্যন্ত গল্প ও ছবি দুই-ই দ্রুত গতিতে এগোয়। কিন্তু ছবি যত এগিয়েছে, কে নায়ক, কে-ই বা খলনায়ক, গুলিয়ে ফেলেন পরিচালক।
ইলাহাবাদের গলিঘুঁজি, স্থানীয় ভাষায় কথোপকথন... পুরো শহর ছোট গল্পের মতো ধরা দিয়েছে ক্যামেরায়। ইলাহাবাদের ব্যাকড্রপে নাসির-নীলমের প্রেমটা আর একটু জমে উঠলে মন্দ হত না। কিন্তু সে গুড়ে বালি। লাভ জেহাদ, না কি ছোট শহরের রাজনীতি, না কি বন্ধুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা... প্রথম ছবিতে কী রাখবেন আর কী বাদ দেবেন, তা-ও বুঝে উঠতে পারেননি পরিচালক রঞ্জন চান্ডেল। অস্থির চিত্রনাট্য ও হঠকারী ক্লাইম্যাক্সেই ছবির ভরাডুবি।
ছবির শুরু থেকে নাসিরের মধ্যে যে স্ফুলিঙ্গ দেখানো হয়েছে, ক্লাইম্যাক্সে এসে তা আগুন ধরাতে ডাহা ফেল। বরং এক ফুৎকারে তা নিভে যায়। অন্য দিকে বিজয় বর্মার সাবলীল অভিনয়ে ছবির খলনায়কের জন্যই মন কেঁদে ওঠে। মনে হয়, বিজয়ের জিতে যাওয়াই ঠিক। নাসির ও নীলমের সম্পর্কও বুনে উঠতে পারেননি পরিচালক। যতটা ভালবাসলে একে অপরের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়া যায়, তার বিন্দুমাত্র দর্শানো হয়নি ছবিতে। এ দিকে হাত ধরে দৌড় আছে ষোলো আনা।
তবে নাসিরের চরিত্রে আদিত্যর লুক বেশ ফ্রেশ। আদিত্যর লম্বা, দোহারা চেহারা, দাপুটে অভিনয় ও মার্বেল গুলির মতো চোখ দর্শককে টেনে রাখে তাঁর দিকে। কিন্তু পরিচালকের মতোই সে-ও দ্বন্দ্বে। বাবার মতো চরিত্রাভিনেতা হয়ে থাকবেন না হিরো হবেন, এই দুইয়ের মাঝে লড়ে যান ছবির আগাগোড়া। শালিনীর অভিনয়ে আড়ষ্টতা না থাকলেও ‘অর্জুন রেড্ডি’র সেই স্পার্কও খুঁজে পাওয়া গেল না। বরং বিজয় বর্মাই এ ছবির বাদশা। অভিব্যক্তি, অভিনয়, শরীরী ভাষায় দর্শকের বুকে রীতিমতো গুলি চালিয়ে গিয়েছেন। সেখানে হাতে বোম নিয়ে শুধু লোফালুফিই খেলে গেলেন আদিত্য। কোনও বিস্ফোরণ ঘটাতে পারলেন না।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)