অপূর্ব
মাত্র দুটো দৃশ্যের জন্য (প্রথম সিজ়ন) ডাক পেয়েছিলেন তিনি। জ়িফাইভ এবং অল্টবালাজি-র ‘কহনে কো হমসফর হ্যায়’ সিরিজ়ের প্রস্তাবে প্রথমে ‘না’-ই বলেছিলেন অপূর্ব অগ্নিহোত্রী। পরে জানতে পারেন, তাঁকে মোনা সিংহের বিপরীতে ভাবছেন নির্মাতারা, বিশেষ করে একতা কপূর চাইছেন আরও একবার স্ক্রিনে ফিরুক ‘জসসি জ্যায়সি কোই নহি’ জুটি। তখন স্ক্রিনটাইম কম জেনেও রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। সেই সিরিজ়ের তৃতীয় সিজ়নের স্ট্রিমিং শুরু হয়েছে সম্প্রতি।
গল্পে মোনার চরিত্রের বস হ্যারি সোমানি এখন অন্যতম মুখ্য চরিত্র। ‘‘আগের চেয়ে পরিসর ও গুরুত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার চরিত্রটা অনেকটা ম্যাচিয়োরড হয়েছে। প্রথম দিকে ছটফটে ছিল, এখন ধীর-স্থির, অনেক বেশি কেয়ারিং,’’ বললেন অপূর্ব। এত দিন পরে দর্শক ‘জসসি’ জুটিকে পর্দায় দেখে খুশি। মোনার সঙ্গে ফের জুটি বাঁধতে পেরে উত্তেজিত অপূর্বও। তাঁর মনে হচ্ছে ঠিক যেন ‘জসসি’র সেট থেকে উঠে এসে ‘কহনে কো হমসফর হ্যায়’-এ সেটে পৌঁছে গিয়েছেন তাঁরা। ‘‘আমরা এত পুরনো বন্ধু, নিজেদের মধ্যে সারাক্ষণ হাসি-ঠাট্টা চলতেই থাকে। কখনও মনেই হয় না, মাঝে এত বছর পেরিয়ে গিয়েছে,’’ বললেন তিনি। তাঁর সবচেয়ে পছন্দের কো-স্টার অবশ্য ‘রণিতদা’ (রায়), যাঁর সঙ্গে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা মারতে পারেন।
আরমান সুরি হিসেবে এখনও লোকে মনে রেখেছেন অপূর্বকে। তবে আরমানের খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল অভিনেতাকে। ছোট পর্দায় অপূর্বর শেষ কাজ ছিল ‘বেপনহা’। ‘‘চরিত্রটা লোকের ভাল লেগে যাওয়ায় ফের একই ধরনের প্রস্তাব আসতে শুরু করল। শুধু নাম আর পোশাকটা আলাদা! একটা সময়ের পরে খুব একঘেয়ে লাগে,’’ টেলিভিশনে কাজ করার প্রসঙ্গে বললেন অপূর্ব। তাই কি ওয়েবে মন দিয়েছেন? ‘‘এখানে অভিনেতা হিসেবে সুযোগ বেশি। সিরিয়ালের চড়া দাগের ব্যাপারটা নেই, অনেক বাস্তবমুখী। আর আন্তর্জাতিক কাজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এর মান আরও ভাল হচ্ছে,’’ ওয়েবকে এগিয়েই রাখলেন অভিনেতা।
তবে ‘পরদেশ’-এর মতো ছবির গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মাধ্যমে যাঁর যাত্রা শুরু, তাঁকে সিনেমায় আর সে ভাবে পাওয়া গেল না কেন? বড় পর্দার প্রতিযোগিতা ছেড়ে পরবর্তীকালে ছোট পর্দায় মন দিয়েছিলেন অপূর্ব। ‘‘আসলে আমি যখন নতুন এসেছিলাম, তখন গল্পের হিরো ছাড়া আর কাউকে সে ভাবে মনে রাখতেন না দর্শক। কোনও নবাগতের পক্ষে হিরো হিসেবে ছাপ ফেলা বেশ কঠিন ছিল তখন। এখন তো প্রতিটি চরিত্রই সমান গুরুত্বপূর্ণ, আর হিরো হল তার কনটেন্ট। তাই সুপারস্টারদের যুগও শেষ। যাঁদের শরীরী ভাষা, হেয়ারস্টাইল নকল করতাম আমরা, সেই সময়টাই চলে গিয়েছে,’’ বললেন অপূর্ব। ফের বড় পর্দায় ফিরতে ইচ্ছে করে? ‘‘যদি সিনেমায় ফিরি কখনও, তা হলে স্ক্রিপ্ট লেখা কিংবা পরিচালনার মাধ্যমে ফিরতে চাই, অভিনেতা হিসেবে নয়,’’ জবাব তাঁর। এই লকডাউনে লেখালিখিতে মন দিয়েছেন অপূর্ব, তাঁর বাবার অনুপ্রেরণায়। সত্যি ঘটনা দ্বারা অনুপ্রাণিত সেই স্ক্রিপ্ট থেকে হতে পারে ওয়েব শো। তবে কাজে ফেরার তাড়া নেই তাঁর, ‘‘সকলে কাজ শুরু করতে ব্যস্ত। তবে আমি আগামী দু’-তিন মাসের আগে বেরোনোর ঝুঁকি নিতে চাই না।’’