তথাগতর রাগের কারণ, বাংলা ছবির মান অনুন্নত হচ্ছে দিনের পর দিন। তাই তিনি লিখলেন, ‘বাংলা ছবি যত জঘন্য, যত খারাপ, ২০২২ সালে টেকনিক্যালি যত দুর্বল, গল্পের বিষয়বস্তু যতই ১৯৫৫ সালের হোক না কেন তা দেখতেই হবে নইলে কর্ণ জোহরের থিওরি অব নেপোটিজম ভুল প্রমাণিত হয়ে যাবে।’
তথাগত মুখোপাধ্যায়
অভিনেতা। পরিচালক। মূলত বাংলা ছবিকেই নিজের পেশা এবং নেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তথাগত মুখোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও রাগ, ক্ষোভ, বিরক্তি উগরে দিলেন বাংলা ছবির নির্মাতা, কলাকুশলীদের উপর।
এই ইন্ডাস্ট্রির হাল হকিকৎ নিয়ে চিন্তিত পরিচালক ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে প্রশ্ন তুললেন, ‘বাংলা ছবির মান খারাপ হলেও তার পাশে দাঁড়াতে হবে কেন? সমাজ সেবা নাকি!’ ব্যঙ্গাত্মক এই দীর্ঘ পোস্টে বাংলা ছবির নির্মাতাদের বিভিন্ন প্রবণতাকে তুলে ধরেছেন তিনি।
২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির পর থেকেই বাংলা ছবির বাণিজ্যে খরা। প্রেক্ষাগৃহে দর্শকসংখ্যা কমে গিয়েছিল। ২০২২ সালে একাধিক নতুন বাংলা ছবি মুক্তি পাওয়ার পর চারদিকে রব উঠেছে, ‘বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান। হলে গিয়ে ছবি দেখুন।’ তথাগত সেই আর্জিকেই আক্রমণ করলেন ফেসবুক পোস্টে।
‘ভটভটি’র পরিচালকের ব্যঙ্গাত্মক লেখা, ‘ভয়ঙ্কর রেগে আছি। আপনারা বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়াচ্ছেন না দেখে। সিনেমা কোনও বিনোদনমূলক মাধ্যম নয়। এটা সর্বৈব সমাজকল্যাণ মূলক কাজ। তাই পেঁয়াজ না খেয়ে, এসি বন্ধ করে, পেট্রল ছেড়ে সাইকেল চালিয়ে বাংলা ছবিকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের আশু কর্তব্য।’ প্রেক্ষাগৃহে জাতীয় সঙ্গীত চালানো হলে যে ভাবে উঠে দাঁড়ানোর জন্য জোরাজুরি চলে, তার সঙ্গে বাংলা ছবি দেখানোকেও তুলনা করলেন তথাগত। তাঁর ঠাট্টা: হিন্দি, দক্ষিণী অথবা বিদেশি ছবি দেখতে ইচ্ছা করলেও সেই ইচ্ছাকে দমন করে বাংলা ছবি দেখতে হবে।
তথাগতর রাগের কারণ, বাংলা ছবির মান পড়ছে দিনের পর দিন। তাই তিনি লিখেছেন, ‘বাংলা ছবি যত জঘন্য, যত খারাপ, ২০২২ সালে টেকনিক্যালি যত দুর্বল, গল্পের বিষয়বস্তু যতই ১৯৫৫ সালের হোক না কেন, তা দেখতেই হবে! নইলে কর্ণ জোহরের থিওরি অব নেপোটিজম ভুল প্রমাণিত হয়ে যাবে।’
তথাগতর মতে, ‘খারাপ সিনেমা হচ্ছে তাই লোকে দেখছে না।’ কিন্তু বাংলা ইন্ডাস্ট্রি এই মতামতকে ‘অপপ্রচার’ হিসেবে গণ্য করায় ক্ষোভ তাঁর।
একইসঙ্গে বেশির ভাগ ছবিতে সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোকেও কটাক্ষ করে তথাগত লিখেছেন, ‘ওটাই আমাদের সবথেকে পুরনো, বিশ্বস্ত দেওয়াল। যাতে যখন তখন...।’ বাকিটুকু উহ্য রেখেছেন তথাগত।
শ্রমিক দিবসে এই পোস্টটি করে তাঁর বক্তব্য, ‘হ্যাপি লেবার ডে....(পাশে দাঁড়ানোও কিন্তু একটা লেবার)।’