সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর দেড় মাস পর মুখ খুললেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখান্ডে। ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া।
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর দেড় মাস পর মুখ খুললেন তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকা অঙ্কিতা লোখান্ডে। কোনও রাখঢাক না রেখেই অঙ্কিতা বলেন, “সুশান্ত কোনও ভাবেই আত্মহত্যা করতে পারে না। আর অবসাদগ্রস্ত হওয়ার ছেলেও ও নয়। আমি নিশ্চিত ওর সঙ্গে ভয়ঙ্কর কিছু হয়েছে। আমি সেই ভয়ঙ্করকে জানতে চাই।” ‘রিপাবলিক টিভি’কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে অঙ্কিতা বলেন, তাঁর সঙ্গে বহুবার আত্মহত্যার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, “মানুষ কেন আত্মহত্যা করে? এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে সুশান্ত বলেছিল আমার জীবনে এরকম কোনও পরিস্থিতি এলে আমার জাস্ট ১৫ মিনিট লাগবে নিজেকে ওই ভাবনা থেকে সরিয়ে নিয়ে অন্য কাজে মন দিতে।” অঙ্কিতা এই ঘটনা বলে বুঝিয়ে দিতে চান সুশান্তের মৃত্যু আত্মহত্যা নয়।
সুশান্ত অবসাদে ভুগছিলেন বলে যে চারিদিকে এত আলোচনা সেই প্রসঙ্গ টেনে অঙ্কিতা বলেন, সুশান্ত অবসাদে ভোগের মতো ছেলেই নন । সাফল্য আর ব্যর্থতা দুটোই খুব সহজ ভাবে নিতে জানতেন তিনি। অঙ্কিতা জানান, ছ’বছর লিভ-ইন রিলেশনশিপে ছিলেন তাঁরা, সে সময় অঙ্কিতা দেখেছেন সুশান্ত ডায়েরি লিখতেন। তাতে তিনি লিখেছিলেন, পাঁচ বছর পর কোথায় নিজেকে দেখতে চান। আর বিস্ময়ের সঙ্গে অঙ্কিতা জানান, “আর সেই লক্ষ্যের প্রত্যেকটা ও সম্পূর্ণ করেছে! এত পজিটিভ এনার্জির ছেলে হুট করে আত্মহত্যা করবে কেন?” কিছুতেই আর মেনে নিতে পারছেন না অঙ্কিতা। সুশান্তের ব্যার্থতার জায়গা নিয়ে বলতে গিয়ে অঙ্কিতা জানান, “আমাকে বলত কী হবে? আমার ফিল্ম চলবে না? তথ্যচিত্র বানাব। সেটা না চললে অরগ্যানিক ফার্ম করব। অর্থাৎ কোনও না কোনও পথে ও ঠিক বেরিয়ে যেত। আমার খুব খারাপ লাগছে এরকম ফোকাসড একজন মানুষের চলে যাওয়াকে অবসাদ আর আত্মহত্যা বলে অসম্মানিত করা হচ্ছে!” ক্ষোভে ফেটে পড়েন মানবের (সুশান্ত) অর্চনা (অঙ্কিতা)। ধারাবাহিকের এই নামেই তাঁরা বিখ্যাত ছিলেন।
অঙ্কিতার রাগে অভিমানে বলতেই থাকেন, “কাউকে বাইপোলার বলে দেওয়া এত সহজ? আমি ওর সঙ্গে বহুদিন কাটিয়েছি। আমরা দু’জনে অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়েও গিয়েছি। তাই জোর দিয়ে বলতে পারি সুশান্ত অবসাদে যাবেই না। ওঁর কাছে অনেক বিষয় ছিল নিজেকে জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। কোথাও কোনও গণ্ডগোল আছে। শেষ এক বছর সবচেয়ে প্রিয় দিদির থেকেও দূরে চলে গিয়েছিল ও। কেন? আসল তথ্য এ বার বেরিয়ে আসুক। আর কিছু চাই না আমি।”
আরও পড়ুন: সুশান্ত কাণ্ডে এ বার স্টিং অপারেশন, রিয়ার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ নায়কের ট্রেনারের
অঙ্কিতা বলেন, সুশান্ত অবসাদে ভোগের মতো ছেলেই নন । সাফল্য আর ব্যর্থতা দুটোই খুব সহজ ভাবে নিতে জানতেন তিনি। ফাইল চিত্র।
কথাগুলো মিডিয়ায় বলতে বেশ কষ্ট হয়েছিল অঙ্কিতার। তাঁর চোয়াল শক্ত হয়ে যাচ্ছিল, কখনও তিনি যেন একটু ভেঙেও পড়ছিলেন, কিন্তু সুশান্তের মৃত্যুর ন্যায়বিচারের জন্য তিনি এগিয়ে এলেন।
রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে খোদ সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বাবা কেকে সিংহ পটনার রাজেন্দ্রনগর থানায় মঙ্গলবার এফআইআর দায়ের করার পরেই উত্তপ্ত সোশ্যাল মিডিয়া। সেই উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন অঙ্কিতা লোখান্ডে। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে সাদা অক্ষরে তিনি লেখেন, ‘সত্যের জয়’। রিয়ার বিরুদ্ধে এফআইআর-এর পরেই ইনস্টায় এ ভাবে লিখে ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন অঙ্কিতা? তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
সুশান্তের সঙ্গে ছ’বছর লিভ-ইন রিলেশনশিপে ছিলেন অঙ্কিতা। ফাইল চিত্র।
টানা এক মাস তিনি চুপ ছিলেন। সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে যখন সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় তখন মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন অঙ্কিতা লোখন্ডে। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নিজেকে দূরে রেখেছিলেন। তাঁর চৌহদ্দিতে প্রবেশের অধিকার ছিল না মিডিয়ারও। ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গিয়েছিল, অঙ্কিতা ভাল নেই। হোক না সুশান্ত প্রাক্তন, তাঁর এ ভাবে চলে যাওয়াটা কিছুতেই মানতে পারছেন না অঙ্কিতা। এ বার সুশান্ত প্রসঙ্গে সব সত্যি প্রকাশ করে সরাসরি মাঠে নেমে সুশান্তের ন্যায়বিচারের জন্য লড়াইয়ে শামিল হলেন অঙ্কিতা। বিহার পুলিশও তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করেছে। এ বার তদন্ত কোন পথে এগোয় সেদিকেই তাকিয়ে সুশান্ত-ভক্তরা।
আরও পড়ুন: সুশান্ত-তদন্তে ব্যাঙ্কে হানা, পরিচারককে জেরা বিহার পুলিশের, নজর সুপ্রিম কোর্টে