রহস্য কাটেনি, সুশান্ত কাণ্ডে উঠে আসছে যে সব প্রশ্ন...
খুশি নন সুশান্ত ভক্তেরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে নানা প্রশ্ন। এমনকি, সেলেবদের কেউ কেউ এমন এমন প্রশ্ন তুলছেন যাতে আরও ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য।
Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২০ ২১:১১
Share:
সুশান্ত।
আঠারো দিন পার হল। ময়ানাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, আত্মহত্যা। ভিসেরা রিপোর্টেও জানানো হয়েছে, শরীরে কোনও বিষক্রিয়ার হদিস পাওয়া যায়নি। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, যথাসাধ্য অনুসন্ধান চালাচ্ছে তারা।
Advertisement
তবু খুশি নন সুশান্ত ভক্তেরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠে আসছে নানা প্রশ্ন। এমনকি, সেলেবদের কেউ কেউ এমন এমন প্রশ্ন তুলছেন যাতে আরও ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। দু’দিন আগে সুশান্তের ছবি ‘দিল বেচারা’-র সহ-অভিনেত্রী সঞ্জনা সঙ্ঘীকে দীর্ঘ সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মুম্বই পুলিশ। বৃহস্পতিবার মুম্বইকে প্রায় চিরবিদায় জানিয়ে দিল্লি পাড়ি দিলেন অভিনেত্রী। কেন?
একটু পিছনে ফেরা যাক। ‘দিল বেচারা’র শুটিংয়ের সময় #মিটু অভিযোগ লাগে সুশান্তের উপর। বিভিন্ন মিডিয়ায় বড় বড় করে সঞ্জনার বয়ানে ছাপা হয়, শুটিং চলাকালীন তাঁকে নাকি শারীরিক ভাবে অপদস্থ করেছেন সুশান্ত। দুঃখে, অপমানে দিশেহারা সুশান্ত তাঁর আর সঞ্জনার ব্যক্তিগত কথোপকথন সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে টুইটার ছাড়েন।বার বার বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকেন, তিনি নির্দোষ।
Advertisement
এ দিকে সঞ্জনা সে সময় বিদেশে ছিলেন। ফিরে এসে সব শুনে তিনি জনসমক্ষে সাফ জানান, সুশান্তএ রকম কিছু করেননি। কোথা থেকে কী ভাবে এ সব রটেছে, তা তিনি জানেন না। হাঁফ ছেড়ে বাঁচে সুশান্ত ভক্তেরা। গতকাল পুলিশি জিজ্ঞাসবাদের সময়েও একই কথা বলেছেন সঞ্জনা। সুশান্ত নাকি তাঁকে বলেছিলেন, কেউ সুশান্তের ‘ইমেজ’খারাপ করতে চাইছে আর সে কারণেই প্ল্যানমাফিক করা হচ্ছে এই সব। কে সেই ব্যক্তি?
এ তো গেল সঞ্জনার কথা। আসা যাক রিয়া চক্রবর্তী, মানে সুশান্তের প্রেমিকার কথায়। লকডাউন এঁরা দু’জনে একসঙ্গে ছিলেন তা এতদিনে সকলেই জেনে গিয়েছেন। জেরায় রিয়া পুলিশকে জানিয়েছেন, শুধু রিয়া বা সুশান্ত নন, ওঁদের সঙ্গে থাকতেন সুশান্তের ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার সিদ্ধার্থ। রিয়ার কথামতো, সিদ্ধার্থকে তিনি পছন্দ করতেন না। আর সে জন্যই নাকি বারেবারেই তাঁর ঝামেলা হত সুশান্তের সঙ্গে।
কিন্তু রিয়ার ইনস্টাগ্রাম বলছে অন্য কথা। গোটা লকডাউন জুড়ে তাঁর চুল বাঁধার ভিডিয়ো থেকে শুরু করে সাধারণ ছবির কার্টসিতে কিন্তু জ্বলজ্বল করছে সিদ্ধার্থের নাম। সত্যিই কি সিদ্ধার্থকে এত অপছন্দ করতেন রিয়া? ইনস্টা কিন্তু সে কথা বলছে না। তবে?
A post shared by Sandip Ssingh (@officialsandipssingh) on
সুশান্তের খুব কাছের বন্ধু বলে নিজেকে বারেবারেই দাবি করেছেন প্রযোজক সন্দীপ সিংহ। সুশান্তের মৃত্যুর পর থেকেই একের পর এক আবেগমাখা পোস্ট করে আসছেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি সন্দীপের ক্রিয়াকলাপের দিকেও আঙুল তুলেছেন সুশান্তের আরও দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু সংগ্রাম এবং নীলোৎপল। তাঁদের অভিযোগ, মৃত্যুর পরে সুশান্তের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট নিয়ে ছেলেখেলা করেছেন সন্দীপ। পোস্টমুছেছেন। চার জনকে ‘আনফলো’-ও করে দিয়েছেন তিনি। তা নিয়ে পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, ‘বড় বড় নাম’কে আড়াল করতে চাইছেন সন্দীপ। সত্যিই কি তাই? কারাই বা সেই বড় বড় নামধারী?
সম্প্রতি সামনে এসেছে আরও এক নতুন তথ্য। মুম্বই পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে শেষ বার নাকি গুগলে নিজের নাম সার্চ করেছিলেন সুশান্ত। কেন? কী খুঁজছিলেন তিনি?
সুশান্তের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে জানানো হয়েছিল, নকল চাবি বানিয়ে সুশান্তের ঘরের দরজার তালা খুলে উদ্ধার করা হয়েছিল তাঁর নিথর দেহ। সাংসদ-অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, কীভাবে ওই দিনই এত তাড়াতাড়ি সুশান্তের বাড়ির ডুপ্লিকেট চাবি তৈরি হয়ে গেল? বর্তমান যুগের আধুনিক লক সিস্টেমে তা যে অসম্ভব এমনটাই মনে করছেন তিনি। তা হলে?
প্রশ্ন হাজারও। পুলিশ বলছে, উত্তর খুঁজছে তাঁরা। কিন্তু সুশান্ত ভক্তেরা চুপ করে নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় উপচে পড়ছে #জাস্টিসফর সুশান্ত। বলিউডের রহস্য মৃত্যুর তালিকাতেই কি স্থান পাবে সুশান্তের চলে যাওয়া? নাকি পাওয়া যাবে সব কেন’র উত্তর?