Sushant Singh Rajput

দিশার প্রেমিককে ধরলে বেরোবে জোড়া মৃত্যুর ঘটনা, দাবি সুশান্তের বন্ধু যুবরাজ সিংহের

এই যুবরাজ সিংহ কিন্তু ভারতীয় দলের ক্রিকেটার নন। তিনি প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বন্ধু।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৫৫
Share:

—ফাইল চিত্র।

সম্প্রতি ভাটা পড়েছে #জাস্টিসফরসুশান্ত-এ। তার জায়গায় শিরোনাম দখল করেছে বলি তারকাদের মাদকাসক্তি। সিবিআইয়ের পক্ষ থেকেও কোনও মন্তব্য নেই। এই পরিস্থিতিতে সিবিআইয়ের নিস্তরঙ্গ তদন্তে নতুন মোড় এনে দিতে পারে যুবরাজ সিংহের ‘পরামর্শ’।

Advertisement

এই যুবরাজ সিংহ কিন্তু ভারতীয় দলের ক্রিকেটার নন। তিনি প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিংহ রাজপুতের বন্ধু। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সুশান্তের ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের প্রেমিক রোহনের খোঁজ পেলেই তদন্তের অনেক নতুন দিক খুলে যেতে পারে। সুশান্ত তদন্তে তিনি ‘হদিস’ দিলেন নতুন এই যোগসূত্রের।

যুবরাজ বলেন, “সিবিআইয়ের প্রথমে একটি এফআইআর দায়ের করা উচিত। এ বার তদন্তের গতি বাড়ানোর সময় এসেছে। এত ধীর গতিতে তদন্ত হতে পারে না। খুব স্পষ্ট ভাবেই বোঝা যাচ্ছে, এটি জোড়া খুনের ঘটনা। আমরা রোহনের নারকো-অ্যানালিসিসের জন্য জোর দিচ্ছি। তাঁকে খুঁজে পাওয়া গেলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”

Advertisement

দিশা ও রোহন।

আরও পড়ুন: কেরিয়ারের শীর্ষে দক্ষিণ ছেড়ে বলিউডে এসে কি ভুল করলেন প্রিয়ঙ্কার এই বোন?​

সুশান্তের মৃত্যুর তদন্ত যে পথে এগোচ্ছে, তা নিয়ে সন্তুষ্ট হচ্ছে পারছেন না যুবরাজ। খানিকটা অধৈর্য হয়ে বলেন, “মাদকযোগ নিয়ে তদন্ত আসলে মূল তদন্ত থেকে মনোযোগ সরিয়ে দিচ্ছে। আমি সুশান্তের পরিবারকে অনুরোধ করব এই বিষয়ে আরও তৎপর এবং সরব হতে। বিকাশ সিংহ যদি দু’শো শতাংশ নিশ্চিত হয়ে বলেন, তাঁকে শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে, তবে এ বার তদন্ত দ্রুত গতিতে এগোন উচিত।”

সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে অনেক তথ্য লুকনো হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন যুবরাজ। তাঁর দাবি, সুশান্তকে নেশাগ্রস্ত করে অন্ধকারে রাখা হয়েছিল। অভিনেতাকে তাঁর পরিবারের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হত না। এমনকি, টাকাও নয়ছয় করা হয় তাঁর।

দিশার মৃত্যুর ছ’দিনের মাথায় আত্মহত্যা করেন সুশান্ত। অনেকেই মনে করেন দু’টি মৃত্যুর মধ্যে যোগ রয়েছে। এই রোহন রাই কি এই দুই মৃত্যুর ঘটনাকে যুক্ত করার সেতুবন্ধন? যুবরাজ আভাস দিচ্ছেন তেমনটাই।

আরও পড়ুন: অভিযোগ উধাও! স্বামীর সঙ্গে আবার মিল পুনম পান্ডের​

সুশান্তের মৃত্যুতে মাদকযোগের তদন্তভার পাওয়ার পরে জোরকদমে মাঠে নামে নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। অন্য দিকে, অভিনেতার মৃত্যু এবং আর্থিক তছরুপের তদন্তে থাকা সিবিআই এবং ইডি কিছুটা ব্যাকফুটে। এখনও কোনও অকাট্য তথ্যপ্রমাণ হাতে আসেনি তাঁদের। ফলস্বরূপ, ন্যায়বিচার চাওয়ার সমুদ্রে এখন ভাটা। এর স্থান দখল করছে #দীপিকাগাজেরিহ্যা। এমন অবস্থায় একটা নতুন নাম কি হাল ফেরাবে অভিনেতার মৃত্যুর তদন্তের?

শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিনেতার পরিবারের আইনজীবী বিকাশ সিংহ এই প্রশ্ন করেছেন। তাঁর কথায়, “যে ভাবে তদন্ত হচ্ছে তাতে খুশি নয় সুশান্তের পরিবার। মাদক কাণ্ডে যে সমস্ত স্টারকে ডাকা হচ্ছে তাঁদের কেউই মাদক-সহ ধরা পড়েননি। মাদক মামলা তখনই হয় যদি কোনও ব্যক্তি মাদক-সহ ধরা পড়েন অথবা মাদক সেবন করে থাকেন।’’

পাশপাশি তিনি যোগ করেন, “রিয়া যদি মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত থাকেন তবে তা অবশ্যই অপরাধ। সে ক্ষেত্রে তাঁর দশ বছরের জেল হওয়ার কথা। কিন্তু পরিবারের প্রশ্ন, এ ভাবে সুশান্তের মৃত্যুর আসল কারণ উদ্ঘাটিত হবে তো?”

সুশান্তের মৃত্যু তদন্ত মুম্বই পুলিশের হাত থেকে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে যাওয়ার পর থেকেই ‘স্বস্তি’র শ্বাস ফেলেছিলেন অভিনেতার পরিবার। সুশান্ত ঘনিষ্ঠদের বারংবার জেরা থেকে সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনার পুনর্নির্মাণ— চলছিল সবই। কিন্তু আচমকাই রিয়া চক্রবর্তী এবং সুশান্তের প্রাক্তন ট্যালেন্ট ম্যানেজার জয়া সাহার মাদক সংক্রান্ত একটি চ্যাট প্রকাশ্যে আসতেই তদন্তের মুখ ঘুরে যায় ১৮০ ডিগ্রি। এর পর একে একে রিয়া, শৌভিক, স্যামুয়েলদের জিজ্ঞাসাবাদ, মাদক মামলায় রিয়ার গ্রেফতারি এবং দীপিকা, সারা, রাকুল, শ্রদ্ধাকে সমন— #জাস্টিসফরসুশান্ত ফিকে হতে শুরু করে ক্রমশ। আর এখানেই আপত্তি পরিবারের।

নেটাগরিকেরা অবশ্য এতে গন্ধ পাচ্ছে রাজনীতির। ‘সুশান্ত টপিক’ খানিক ‘পুরনো’ হয়ে যাওয়াতেই কি দীপিকা-সারা টপিকের অবতারণা? শুধু দীপিকাই নন, রাকুল প্রীত সিংহ, সারা আলি খান, শ্রদ্ধা কপূরদের পর পর তলব করে গোটা বিষয়টিকে বড়সড় মাত্রা দেওয়ার পিছনে কোনও প্রচ্ছন্ন রাজনীতি কাজ করছে কি না, সে প্রশ্নও উঠেছে।

সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্ত ঘিরে বিহার ও মহারাষ্ট্র সরকারের সংঘাত সামনে এসেছিল। নরেন্দ্র মোদী, নীতীশ কুমারের দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, বিহারের ভোটের কথা মাথায় রেখে মৃত্যু তদন্ত নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। সুশান্তের পরিবারের তরফে ওঠা অভিযোগগুলি নিয়ে এই মুহূর্তে সিবিআই, ইডি-র তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না মোটেই। শিরোনাম দখল করেছে এনসিবি। ‘ন্যায়বিচার’ আদপে মিলবে কি? জানা যাবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ? নাকি মাদকের মোড়কে ধামাচাপা পড়ে যাবে কিছু না জানা রহস্য— প্রশ্ন সুশান্ত ভক্তদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement