সুশান্ত।
ভয় পাচ্ছিলেন সুশান্ত সিংহ রাজপুত। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে থেকেই নাকি বারবার বলছিলেন ওরা আমায় ছাড়বে না। বিস্ফোরক মন্তব্য সুশান্তের পারিবারিক বন্ধু স্মিতা পারিখের। কাদের জন্য ভয় পাচ্ছিলেন সুশান্ত? কেন বারেবারেই প্যানিক অ্যাটাক হচ্ছিল তাঁর?
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের অস্বাভাবিক মৃত্যু রহস্য যখন দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠছে ঠিক সেই মুহূর্তেই এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্মিতা বললেন, “গত ৯ জুন সুশান্তের ম্যানেজার দিশা মারা যান। এর পর থেকে আচমকাই ভীষণ ভয় পেয়ে যান সুশান্ত। বারবার নিতুকে (সুশান্তের দিদি) বলতে শুরু করেন, এ বার আর ওরা আমায় ছাড়বে না। ঠিক আমার পিছনে আসবে। সুশান্ত যেন নিজের মধ্যে ছিল না।”
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা বহুতলের ১৪ তলা থেকে থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন গত ৯ জুন। যদিও ঠিক কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছিলেন তা আজও ধোঁয়াশা। স্মিতার কথায়, ‘‘দিশার মৃত্যুর পর থেকেই কেমন যেন বদলে যেতে থাকে সুশান্ত। অথচ তার আগেও সে দিদির সঙ্গে যোগা অভ্যাস করেছে। টেবল টেনিস খেলেছে। যদিও কাদের জন্য এত ভয় পেয়েছিলেন সুশান্ত তা আমি জানি না।”
স্মিতা আরও জানান, ৮ জুন রিয়া আচমকাই সুশান্তের বাড়ি ছেড়ে নিজের বাড়ি চলে আসেন। সঙ্গে ছিল দুই ব্যাগ ভর্তি জিনিস। ড্রাইভার তাঁকে তাঁর বাড়ি ছেড়ে দিয়ে আসেন। মিতু সিংহ ওই দিনই সন্ধেবেলায় ভাইয়ের বাড়ি আসে। ১১জুন সুশান্তের আর এক দিদি প্রিয়ঙ্কার স্বামীকে ফোন করেন সুশান্ত। তাঁর জামাইবাবু আইপিএস অফিসার। সুশান্ত তাঁকে জানান, ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানাতে চান তিনি। বিদায় জানাতে চান মুম্বইকে। ১২জুন সুশান্তের দিদি মিতু মুম্বইতে নিজের বাড়ি ফিরে যান। তাঁর বাচ্চা ছোট, তাই ফিরে গিয়েছিলেন বলে মিতু জানিয়েছেন পুলিশকে।
আরও পড়ুন- জেলে না গিয়ে ‘জুন আন্টি’ কোয়রান্টিনে!
স্মিতার কথা থেকে এ-ও জানা গিয়েছে, ঠিক ছিল, ১৩ জুন সুশান্তের বাড়িতে আবার আসবেন মিতু। কিন্তু তিনি আসতে পারেননি। সুশান্তকে ফোন করেন। ফোন ধরেননি সুশান্ত। মিতু ফোন করেন সুশান্তের বন্ধু সিদ্ধার্থকেও। সিদ্ধার্থ পিঠানি সুশান্তের সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে ছিলেন। তিনি জানান, ঠিক আছেন সুশান্ত। ১৪ জুন মিতু ঠিক করেন তিনি ভাইয়ের কাছে আসবেন। রবিবার ছিল। কিন্তু সুশান্তকে ফোনে না পাওয়ায় মিতু আবার ফোন করেন সিদ্ধার্থকে। সিদ্ধার্থ আবারও জানান, জুস খেতে চেয়েছে সুশান্ত। এখন ঘুমোচ্ছে।
স্মিতার বক্তব্য, “মিতু ভাইয়ের বাড়িতে আসছিলেনই, এমন সময়ে সিদ্ধার্থের ফোন যায় তাঁর কাছে। তিনি বলেন, ‘দিদি জলদি আইয়ে। ভাইয়া(সুশান্ত) নে হ্যাং কর লিয়া।’ মিতু দিদি এসে সুশান্তকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়নি। খাটে শোওয়ানো ছিল সুশান্তের দেহ।”
গত রবিবার পটনার রাজেন্দ্রনগর থানায় সুশান্তের প্রেমিকা রিয়া চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে সুশান্তের পরিবার। সেই এফআইআরের ভিত্তিতেই এখন মুম্বইয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে বিহার পুলিশের সাত সদস্যের একটি দল। সুশান্তের অস্বাভাবিক মৃত্যু কাণ্ডে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সত্যিটা কী? তা জানতে মুখিয়ে গোটা দেশ।