যৌবনে বহু বার ধর্মেন্দ্রর বিরোধিতা করেছেন সানি দেওল। কিন্তু একটি ঘটনায় ধাক্কা খেয়ে তিনি ঠিক করেন, জীবনে কোনওদিন বাবার কথার খেলাপ করবেন না।
এক বার ধর্মেন্দ্র প্রযোজনা করছিলেন তাঁর ছোট ছেলে ববি দেওলের জন্য। সহ প্রযোজনা করছিলেন সানি নিজেই। ছবিটি পরিচালনা করার কথা ছিল ‘বেন্ড ইট লাইক বেকহ্যাম’ ছবি খ্যাত গুরিন্দর চড্ডার।
ছবির নামকরণ করা হয়েছিল ‘লন্ডন’। ছবির বেশ কিছু পর্বের শ্যুটিং হওয়ার কথাও ছিল লন্ডনে।
এই ছবিতে প্রথম বার এক সঙ্গে সানি এবং ববি দুই ভাইয়ের একসঙ্গে অভিনয় করার কথা ছিল। নায়িকার ভূমিকায় নেওয়া হয়েছিল করিশ্মা কপূরকে।
কিন্তু বিপত্তি দেখা দিল ছবির শ্যুটিং শুরু হওয়ার পরে। লন্ডনের পর্ব শ্যুটিং হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ছবির সৃজনশীলতার বিভিন্ন প্রশ্নে দ্বন্দ্ব দেখা দিচ্ছিল গুরিন্দর ও সানির মধ্যে।
সাধারণত বলিউডের মূলধারার ছবি থেকে অন্যরকমের কাজ করেন গুরিন্দর। তাঁর সঙ্গে সানির ভাবনাচিন্তার বনিবনা হচ্ছিল না বেশ কিছু ক্ষেত্রে।
শেষে ছবির মাঝপথ থেকে সরে দাঁড়ান প্রযোজক সানি। অর্ধসমাপ্ত হয়ে পড়ে তাকে ‘লন্ডন’-এর কাজ।
কিন্তু কিছু দিন পরে সানির মনে হতে থাকে ‘লন্ডন’ ছবির কাজ শেষ করা প্রয়োজন। তাছাড়া এই ছবির পিছনে প্রচুর অর্থও লগ্নি হয়ে গিয়েছিল।
ফলে সানি নতুন করে ছবির শ্যুটিং করবেন বলে ঠিক করেন। এ বার তিনি পরিচালনার জন্য যোগাযোগ করেন সুনীল দর্শনের সঙ্গে।
কিন্তু সানির এ বার মনে হতে থাকে সুনীল অন্য ছবি নিয়ে ব্যস্ত। তাই তিনি ‘লন্ডন’-এর দিকে মন দিচ্ছেন না। তিনি আরও একবার পরিচালক পরিবর্তন করেন।
কিন্তু বলিউডের কোনও পরিচালকের উপরই ভরসা করতে পারছিলেন না সানি। তিনি ঠিক করেন অর্ধসমাপ্ত ‘লন্ডন’-এর কাজ সম্পূর্ণ করবেন তিনি নিজেই।
ছবিতে বেশ কিছু পরিবর্তন করেন সানি। করিশ্মার বদলে আনেন ঊর্মিলা মাতণ্ডকরকে। ‘লন্ডন’ থেকে ছবির নতুন নামকরণ হয় ‘দিল্লগি’।
১৯৯৯ সালের ১৯ নভেম্বর মুক্তি পায় ‘দিল্লগি’। বক্স অফিসে লাভের মুখ দেখতে পায়নি ছবিটি। ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া ছবিটি থেকে টাকা উঠেছিল মাত্র ২১ কোটি।
মূল প্রযোজক ধর্মেন্দ্রর বড় ক্ষতি হয় এই ছবি থেকে। এর পর থেকেই সানি ঠিক করেন ভবিষ্যতে বাবার কথা অমান্য করবেন না। কারণ, শোনা যায়, বাবার বিরুদ্ধে গিয়েই তিনি এই ছবির কাজ শেষ করতে চেয়েছিলেন।
শুধু আর্থিক ক্ষতিই নয়। সুনীল দর্শন-সহ ইন্ডাস্ট্রির অনেকের সঙ্গে দেওল পরিবারের সম্পর্ক তিক্ত হয়ে পড়েছিল এই ছবির জন্য। এই অভিজ্ঞতার পুনরাবৃত্তি করতে না চেয়ে বাবার কথার বিরোধিতা না করার সিদ্ধান্ত নেন সানি দেওল।