(বাঁ দিক থেকে) জুন মালিয়া, মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্দীপ ভুতোরিয়া। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বিজয়া দশমীতে প্রতি বছর দু’টি পুজো মণ্ডপের সিঁদুরখেলার দিকে শহর কলকাতা তাকিয়ে থাকে। সাধারণ মানুষ থেকে খ্যাতনামী অভিনেত্রী— বিজয়া শুরু করেন বাগবাজার সর্বজনীন আর চালতাবাগান লোহাপট্টির মণ্ডপে সিঁদুরখেলা দিয়ে। সন্দীপ ভুতোরিয়ার পুজো নামে খ্যাত চালতাবাগান লোহাপট্টির পুজোয় নুসরত জাহান, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় জুন মালিয়া, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়, মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়, পাওলি দাম, অরুণিমা ঘোষেরা আসেন প্রায় প্রতি বছর। এ বার রীতি ভেঙে তারকাখচিত সিঁদুরখেলায় নেই সন্দীপ এবং তাঁর পুজো কমিটি। আনন্দবাজার অনলাইন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে কারণ জানতে চেয়েছিল। সন্দীপ জানিয়েছেন, এ বছরের পরিস্থিতি অন্য রকম। তাই এ বছর সমস্ত উদ্যাপন থেকে তাঁরা দূরে।
এই বছর পুজোও একদিন কম। অষ্টমী আর নবমী তিথি একই দিনে পড়েছিল। সেই সঙ্গে আরজি কর-কাণ্ড। নিহত তরুণী চিকিৎসকের জন্য ভারাক্রান্ত প্রত্যেকের মন। এমন পরিস্থিতিতে চালতাবাগান পুজো কমিটিও সিঁদুরখেলায় বিরতি টানছে, দাবি কমিটির। সন্দীপ বলেন, “আমরা প্রতি বছর পঞ্চমীতে ‘ঢাকে পড়ল কাঠি’ নামে একটি অনুষ্ঠান করি। সেখানে টলিউডের তাবড় তারকারা আসেন। পুজো উদ্বোধনের দিনেও একই ছবি। এ বছর সে সব কিছুই হয়নি। সিঁদুরখেলা হবে পাড়ার বাসিন্দাদের নিয়ে। কারণ, দেবীকে বরণ না করে তো পাঠানো যায় না!” এক বছর চিরাচরিত প্রথায় দাঁড়ি় পড়ায় সামান্য হলেও মনখারাপ তাঁর। তবে, ১৫ অক্টোবর সকাল ১১টার মধ্যে রেড রোড কার্নিভালে যোগ দেবে চালতাবাগান লোহাপট্টির প্রতিমা। আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী বছর সব ঠিক থাকলে সমারোহে কোনও খামতি থাকবে না।
উদ্যোক্তাদের মতোই এই ধর্মীয় আচারের সঙ্গে যুক্ত একাধিক খ্যাতনামী। তাঁদের কতটা মনখারাপ?
জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল সাংসদ-অভিনেত্রী জুন মালিয়ার সঙ্গে। তাঁর কথায়, “পরিস্থিতি প্রত্যেক বছর এক রকম থাকে না। সেই জায়গা থেকেই হয়তো সন্দীপের এই সিদ্ধান্ত। পরিবেশ-পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলাই শিক্ষার পরিচয়।” চালতাবাগানে সিঁদুর খেলতে পারবেন না বলে জুন এ বছর খড়্গপুরে। তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রে। জানিয়েছেন, রীতি মেনে সিঁদুর খেলবেন সেখানে। তবে চালতাবাগানের প্রতিমা তিনি প্রথম দিনেই দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে পুজোও দিয়েছেন।
সামান্য মনখারাপ অধ্যাপক মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। তিনি বলেছেন, “আমার বিজয়া আগামী কাল অর্থাৎ, ১৩ অক্টোবর থেকে। চালতাবাগানে সিঁদুর খেলতে যাওয়া অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। এ বছর সেই অভ্যাসে বিরতি।” তা হলে কি তাঁর এ বছরের সিঁদুরখেলা বন্ধ? “একেবারেই না”, বলেছেন মানবী। তিনি নিজের দেশের বাড়ি নৈহাটি যাচ্ছেন। এ বছর সেখানেই নিজেকে সিঁদুরে রাঙা করবেন।