রাত দখলের জমায়েতে যোগ দেবেন সুজন মুখোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
রাতের রাস্তার দখল নেবেন মহিলারা। একেবারে প্রথম থেকেই এই লক্ষ্যে শুরু হয়েছিল আন্দোলনের রূপরেখা, যার ভিত্তি ছিল সমাজমাধ্যমের প্রচার। একাকী মহিলারা যাতে যে কোনও সময়, যে কোনও রাস্তায় নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। এই দাবিতেই প্রতীকী আন্দোলন হিসাবে উঠে এসেছে ‘মেয়েরা, রাত দখল করো’।
কিন্তু একটা সময়ের পর সমাজমাধ্যমেই দাবি ওঠে, কেন এই আন্দোলন সীমিত থাকবে মহিলাদের মধ্যে! বরং লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলে যোগ দিন এই প্রতিবাদী আন্দোলনে। পুরুষেরাও যোগ দিতে আগ্রহী বলে জানান।
কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় সমাজমাধ্যমে আন্দোলনের পোস্টার ভাগ করে লেখেন, “আসবো। তোমাদের পাশে থাকতে দিও।” বোঝাই গিয়েছিল সঙ্গী হবেন স্ত্রী চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ও। একই ভাবে ঋদ্ধি সেন, তাঁর বাবা কৌশিক সেন ও মা রেশমি সেনও যোগ দেবেন রাতের জমায়েতে, এমনই জানা গিয়েছিল।
মঙ্গলবার অভিনেতা সুজন মুখোপাধ্যায়ও সমাজমাধ্যমে জানিয়েছিলেন তিনি উপস্থিত থাকবেন অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের জমায়েতে। আন্দোলনের পোস্টারের সঙ্গে স্বকণ্ঠে একটি প্রতিবাদী গানের ভিডিয়োও ভাগ করে নিয়েছিলেন তিনি। লিখেছিলেন “থাকছি অ্যাকাডেমিতে... আমার নিজের লড়াইও শুরু যেখান থেকে... সবাই জড়ো হোন। দেখা হোক।”
কিন্তু বুধবার বিকেলে তিনি আরও একটি পোস্ট করে লেখেন, “আজকের জমায়েতে মহিলারাই সব, মন থেকে সমর্থন রইল।”তবে কি এই জমায়েত প্রতিবাদে থাকবেন না সুজন! শুধুমাত্র পুরুষ বলেই কি মহিলাদের আন্দোলন থেকে সরিয়ে নিলেন নিজেকে? অভিনেতা অবশ্য বলেছেন, “একেবারেই না, আমি রাতের জমায়েতে অবশ্যই শামিল হব। সঙ্গে থাকবেন আমার স্ত্রী নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়। কিন্তু কোনও ভাবেই এই আন্দোলনের প্রথম সারিতে যাব না, মুখ হয়ে উঠব না।”
প্রাথমিক ভাবে, আন্দোলনে গান গাইবেন বলে স্থির করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন সুজন। কিন্তু সেখান থেকে সরে এসেছেন। সুজন বলেন, “আমার মনে হয়েছে এটা সত্যিই মহিলাদের নিজেদের লড়াই। তাঁরা সে ভাবেই লড়তে চাইছেন। আমরা সহ-নাগরিক হিসাবে পাশে আছি, সংহতি জানাচ্ছি। কিন্তু আমরা মুখ্য নই।”যদিও সুজন জানিয়েছেন, তাঁর কাছে এক মহিলা ভক্তই এই আবেদন জানিয়েছিলেন। সমাজমাধ্যমে ওই মহিলা সুজনকে বলেছিলেন, এই আন্দোলনে যেন প্রত্যক্ষ ভাবে তিনি কোনও অনুষ্ঠান না করেন। কারণ, এখানে মহিলারাই মুখ্য। বিষয়টিকে মান্যতা দিয়েছেন অভিনেতা।
রাতের জমায়েতে মহিলা প্রাধান্যের কথা জানিয়েছেন কলেজ স্ট্রিটের জমায়েতে যুক্ত ঋতু সেন চৌধুরীও। তিনি বলেন, “১১টা থেকে যে অনুষ্ঠান শুরু হবে সেখানে প্রথমে আমরা চাইব মহিলারাই কথা বলুন বা অন্য কোনও অনুষ্ঠান করতে চাইলে করুন। কিন্তু তার পর ছাত্রছাত্রীরা যদি কোনও অনুষ্ঠান করতে চান, সত্যিই আমাদের আপত্তি করার কোনও কারণ নেই। কারণ, প্রতিবাদ সকলের।”
বুধবার সকাল থেকেই সমাজমাধ্যমে সরব হতে শুরু করেন নেটাগরিক। অনেকেই মন্তব্য করেন, পুরুষেরা যত দূরত্ব রাখবেন, এই আন্দোলন তত সাফল্য পাবে।