সুদীপ্তা স্পষ্ট কথায় বিশ্বাসী
রবিবাসরীয় সকালে টলিউডের দ্বিচারিতার পর্দা ফাঁস। সৌজন্যে সুদীপ্তা চক্রবর্তী। সুদীপ্তা স্পষ্ট কথায় বিশ্বাসী। এই তকমা তাঁর গায়ে বহু দিন। এ দিন তিনি এক ফেসবুক পোস্টে সাফ জানালেন, কেন বাংলা বিনোদন দুনিয়া ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে। সত্যিই, কেন বাংলায় এসে অন্য ভাষার ছবি রাজত্ব চালাচ্ছে? আর বাংলা ছবির দুয়োরানি দশা? একাধিক যুক্তি অভিনেত্রীর ঝুলিতে। তার মধ্যেই মোক্ষম কথা, 'অন্যদের বলব, 'বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচান', আর ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে থেকে একে অন্যের পা ধরে টানব, দুটো তো একসঙ্গে হয় না!'
একা সুদীপ্তা নন, ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে অনুযোগ টলিপাড়ায় বহু দিনের। অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের আকস্মিক মৃত্যু যেমন কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। সুদীপ্তার দলে রয়েছেন অনামিকা সাহা, শ্রীলেখা মিত্রের মতো বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী। শ্রীলেখা এর আগে স্বজনপোষণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন। নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ির পাশাপাশি সুদীপ্তা আঙুল তুলেছেন ছোট পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতাদের অবজ্ঞার মতো নীচ মানসিকতার দিকেও। তাঁর দাবি, টলিউডের উন্নতির পথে এটিও অন্যতম বাধা। উদাহরণ হিসেবে জানান, ‘আমরা ছোট ছোট চেষ্টাগুলোকে প্রশংসা করতেই ভুলে যাচ্ছি। অপেক্ষাকৃত ছোট অভিনেতা, পরিচালকদের সোশ্যাল মিডিয়ায় ঠুকে ঠুকে পোস্ট করে সাময়িক বাহবা নিয়ে আনন্দ পাচ্ছি। আর বড় প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতাদের টুইটারে প্রশংসা করে হোয়াটসঅ্যাপে, ফোনে, চায়ের আড্ডায় সমালোচনা করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি।'
নিজেদের সমালোচনা ছাড়াও ‘রাজকাহিনী’র অভিনেত্রীর দৃষ্টিভঙ্গিতে ধরা পড়েছে এই সত্যও, নানা স্বাদের খাবারের নানা খরিদ্দার। নানা ধরনের গানের ভিন্ন ভিন্ন সমঝদার। ঠিক তেমনই সব ছবি সবার ভাল লাগবে, এমন কোনও কথা নেই! তিনি পরোক্ষে বাংলা ছবির মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। লিখেছেন, খারাপ খাবার যেমন নিষিদ্ধ তেমনি খারাপ মানের ছবি দর্শক দেখবেন না, এটাই স্বাভাবিক। তাই, 'বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ান', 'দলে দলে বাংলা ছবি দেখুন', 'আমরা খুব কষ্ট করে সিনেমাটা বানিয়েছি, আপনারা দেখতে আসুন', 'বাংলা সিনেমাকে সাপোর্ট করুন', 'বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচান'-এর মতো কথাগুলি ইদানীং খুবই শিশুসুলভ লাগে অভিনেত্রীর কাছে।
এ ভাবেই সবাইকে সাবধান করেছেন সুদীপ্তা। জানিয়েছেন, ফিরে তাকানোর সময় এসেছে। ছেলেবেলার শিক্ষাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, 'ছোটবেলায় শিখেছিলাম, 'ভাল লাগলে সবার সামনে বল, খারাপ লাগলে আলাদা করে ডেকে বল'। তাতে দু’জনের সম্মানই বাঁচে। আমরা না অন্যকে সম্মান জানাতে পারছি, না নিজের সম্মান ধরে রাখতে পারছি। আমাদের বাঁচিয়ে রাখার দায় অন্য কারওর নেই। কোনও দিন ছিলও না। ওটা আমাদেরই দায়িত্ব।'