ভানুর সঙ্গে সুদীপা
এই সাতটা দিন। কী ভাবে যে কেটেছে। বলে বোঝাতে পারব না। খুব মনখারাপ! যাকে বলে ‘ডিপ্রেশন’ গ্রাস করছিল। মাঝরাতে উঠে ভুল বকছিলাম। 'ভানু' আমার প্রাণ। আমার সব ছিল। এক মিনিটও সময় দিল না। বুঝতেই পারলাম না ও চলে গেল। বলতে গেলে আমার হাতে জন্মেছিল। অগ্নিদেবকে আমি বিয়েও করেছিলাম সেই লোভে। তখন ছিল 'ভানু'-র মা। তার পর 'ভানু' হল। বাঁচানো যাচ্ছিল না। চিকিৎসক আমার হাতে ওকে দিয়ে বলেছিল পিঠটা ঘষতে। তখনই 'ভানু' কেঁদে উঠল। সেই থেকে আমার কোলের ছেলে। আমার উপর ওর এক অদ্ভুত অধিকারবোধ কাজ করত। ওর সঙ্গে আমার চুক্তি ছিল, তুমিও কোনও মহিলাকে আদর করবে না, আমিও কোনও কুকুরকে আদর করব না। তাই কোনও পোষ্য আমার কাছে এলেই হাত লুকিয়ে রাখতাম, পাছে আদর করে ফেলি। ও তো বুঝতে পেরে গেলে অভিমান করবে।
আমার ছেলের সঙ্গে একদম বন্ধুত্বটা জমল না। ভাবত মা বুঝি ভাগ হয়ে গেল। ওর জন্য আলাদা বসার জায়গা করে দিয়েছিল অগ্নিদেব। অগ্নি বাইরে গেলে কী যে খুশি হত, তা বলার নয়। জানত মায়ের সঙ্গে ঘুমোতে পারব। আদিকেও ভেবেছিল কেউ নিয়ে চলে যাবে।
জামাই ষষ্ঠীর দিন চলে গেল। 'ভানু'-র জায়গা কেউ নিতে পারবে না। জীবনে কারও জায়গা কেউ নিতে পারে না। তবু আমার অবস্থা দেখে অগ্নি ঠিক করে এটা চলতে দেওয়া যাবে না। সাত দিন হল বাড়িতে এসেছে 'ভান্টু' অর্থাৎ 'ভানু' পার্ট টু। 'ভানু'কে তো ভুলতে পারব না, নতুন করে 'ভান্টু' নিয়েই শুরু আমাদের নতুন যাত্রা।