শুরু করেছিলেন মডেলিং দিয়ে। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। অভিনয়ের পাশাপাশি তাঁর হাসিও মন জয় করেছিল দর্শকদের। কিন্তু পরবর্তীকালে ভক্তদের হতাশ করেছিলেন সুচিত্রা কৃষ্ণমূর্তি। অকালেই ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যান এই অভিনেত্রী।
সুচিত্রার জন্ম ১৯৭৫ সালের ২৭ নভেম্বর। বড় হয়েছেন তামিল-তেলুগু মিশ্র সংস্কৃতিতে। মুম্বইয়ে কেটেছিল শৈশব। ফলে হিন্দিভাষাও রপ্ত করেছিলেন। স্কুলে পড়ার সময়েই সুযোগ পান টেলিভিশন সিরিজ ‘চুনৌতি’-তে।
নব্বইয়ের দশকে বিজ্ঞাপনের জনপ্রিয় মডেল হয়ে ওঠেন সুচিত্রা। বহু পণ্যের বিজ্ঞাপনে তিনি-ই ছিলেন অন্যতম মুখ। মডেলিং করতে করতেই ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ।
১৯৯৪ সালে মুক্তি পায় সুচিত্রার প্রথম হিন্দি ছবি ‘কভি হাঁ কভি না’। শাহরুখ খানের বিপরীতে সুচিত্রার এই ছবি বক্স অফিসে সুপারডুপার হিট। তবে এটা তাঁর প্রথম ছবি নয়। তাঁর প্রথম ছবি মালয়ালম ভাষায় ‘কিলুক্কামপেত্তি’ মুক্তি পেয়েছিল ১১৯২ সালে।
প্রথম ছবির সাফল্যের পরেও বলিউডে নিজের জায়গা মজবুত করতে পারেননি সুচিত্রা। গত ২৫ বছরে সুচিত্রাকে দেখা গিয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি ছবিতে। তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য বাকি ছবি হল ‘আগ’, ‘মাই ওয়াইফস মার্ডার’, ‘রান’, ‘মিত্তল ভার্সাস মিত্তল’ এবং ‘রোমিয়ো আকবর ওয়াল্টার’।
কেরিয়ারের পাশাপাশি মুখ থুবড়ে পড়ে সুচিত্রার ব্যক্তিগত জীবনও। ১৯৯৯ সালে তিনি বিয়ে করেন পরিচালক শেখর কপূরকে। দু’জনের বয়সের ব্যবধান ছিল প্রায় তিরিশ বছর।
শেখর কপূরের এটা ছিল দ্বিতীয় বিয়ে। তাঁর প্রথম পক্ষের স্ত্রী ছিলেন মেধা। শেখর কপূরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে মেধা বিয়ে করেন সঙ্গীতশিল্পী অনুপ জালোটাকে।
সুচিত্রা কৃষ্ণমূর্তির সঙ্গে শেখর কপূরের দ্বিতীয় বিয়ে স্থায়ী হয়েছিল ন’বছর। বিচ্ছেদর কারণ হিসেবে শেখর দায়ী করেছিলেন সুচিত্রা মানসিক অস্থিরতাকে।
অন্যদিকে, সুচিত্রার অভিযোগ ছিল, বিয়ের পরে তাঁর সত্তা ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছিল। নিজের জায়গা খুঁজে পেতে তিনি ডিভোর্স করেন। তবে তাঁর কথায়, বিচ্ছেদের পরেও তিনি শেখরকে ভালবাসেন।
তবে সুচিত্রার অভিযোগের তির ছিল প্রীতি জিন্টার দিকেও। প্রীতির সঙ্গে সম্পর্কের জেরেই তাঁর এবং শেখরের মধ্যে ফাটল তৈরি হয় বলে বক্তব্য ছিল সুচিত্রার। তবে প্রীতি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, শেখরের সঙ্গে তাঁর কোনও বিশেষ সম্পর্ক নেই।
বিচ্ছেদের পরে সুচিত্রা তাঁর মেয়ে কাবেরীকে নিয়ে আলাদা থাকেন। তিনি এখন নিজেকে ব্যস্ত রাখেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সমাজসেবামূলক কাজে। অভিনেত্রীর পাশাপাশি সুচিত্রা একজন গায়িকা, লেখিকা এবং চিত্রশিল্পী।
সম্প্রতি সুচিত্রা মুখ খুলেছেন বলিউডে স্বজনপোষণ ও মাদক-সংযোগ প্রসঙ্গে। তিনিও কাঠগড়ায় তুলেছেন কওয়ান ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিকে।
সুচিত্রার দাবি, তিনি যখন কামব্যাক করতে চেয়েছিলেন, এই এজেন্সির এক কর্মী তাঁকে বলেছিলেন, কর্ণ জোহরের পার্টিতে যোগ দিতে। তবেই নাকি তাঁর বলিউডে কামব্যাক করতে সুবিধে হবে।
এই প্রস্তাবে রাজি হননি সুচিত্রা। তবে একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, বলিউডে নায়িকারাই শুধু মাদকসেবন করেন, এই দাবিতে তিনি বিশ্বাসী নন।