সুশান্তের মৃত্যুর পর হঠাৎই বলিউডের গ্ল্যামারের আস্তিন যেন খসে পড়তে শুরু করেছে। প্রকাশ্যে আসছে এক কদর্য সত্য। বলিউডের স্বজনপোষণের ধারা যে কত তারকার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে, সে নিয়ে বারে বারে সরব হয়েছেন তারকারাও। অভয় দেওল থেকে শুরু করে রবীনা টন্ডন...সরব হয়েছেন একে একে।
এই তালিকায় বিস্ফোরক আরও এক অভিনেতা। তিনি সাহিল খান। বলিউডের ‘খান’দানের বিরুদ্ধে সরাসরি আঙুল তুলেছেন তিনি। প্রকাশ্যে এনেছেন চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। পদবিতে ‘খান’ থাকলেও বলিউডের খান-দের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। সাহিলের বলি ডেবিউ হয়েছিল ‘স্টাইল’ ছবির মধ্য দিয়ে।
২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই ছবিতে সাহিল খান ছাড়াও ছিলেন শরমন জোশী,রিয়া সেন, শিল্পী শর্মা, তারা দেশপাণ্ডে। সে সময় বক্স অফিসে ভালই ব্যবসা করেছিল ছবিটি। ‘স্টাইল’-এর সাফল্যের পর সাহিলের ঝুলিতে আসে আর এক ছবি অফার। নাম ‘এক্সকিউজ মি’। সঙ্গে শরমন জোশী, জয়া শিল-সহ অন্যান্য।
সেই ছবিও বক্স অফিসে মোটামুটি ভালই সাফল্য পেয়েছিল। সাহিলের সিক্স প্যাক ঘুম উড়িয়েছিল তাঁর মহিল ফ্যানদের। সে সময় বিখ্যাত বলিউড ম্যাগাজিন ‘স্টারডাস্ট’ ছবিতে শাহরুখ এবং সলমন খানের সঙ্গে কভার পেজে ছাপা হয়েছিল এই অভিনেতার ছবিও।
কিন্তু এত সব সাফল্যের পরেও বলিউডের গ্ল্যামারে কোথায় যেন হারিয়ে গেলেন সাহিল খান। দু’একটি ছবিতে মুখ দেখালেও নায়কের চরিত্রে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি তাঁকে। এটা বলিউড। এখানে স্বপ্ন ভঙ্গের ছবি দেখা যায় প্রতিদিন। হতাশা নিয়ে ফিরতি পথে চলে যান উঠতি তারকারা। সাহিলের সঙ্গেই হয়েছিল এমন কিছুই, শেয়ার করেছেন তিনি নিজেই।
সুশান্তের মৃত্যুর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহিলের সেই পোস্ট যেন স্বজনপোষণের কদর্য রূপ হঠাৎ করেই উস্কে দিয়েছে। সামনে এনেছে পুরনো কিছু না জানা কথা। কী লিখেছেন সাহিল?
‘স্টাইল’ অভিনেতা লিখছেন, “প্রথম ছবির পরেই স্টারডাস্টের মতো ম্যাগাজিনের অংশ হতে পারার সৌভাগ্য খুব কম তারকারই হয়েছে। দুই বড় বড় সুপারস্টারের সঙ্গে (শাহরুখ এবং সলমন) ম্যাগাজিনের কভার পেপারে... ভাবাই যায় না। আর তাই বোধহয় সহ্য হল না ওই দুই সুপারস্টারের মধ্যে এক জনের।”
সাহিল বলে চলেন, “আমি নতুন ছিলাম। ওঁর ফ্যান ছিলাম। সেই আমিই কিনা ওঁর সঙ্গে এক ফ্রেমে! পছন্দ হয়নি তাঁর। আর সেই জন্যই বোধহয় ইচ্ছে করে আমায় বিভিন্ন ছবি থেকে বাদ দিতে শুরু করেন তিনি।”
এখানেই থামেননি সাহিল। তাঁর কথায়, “তাঁর অনেক বড় নাম। কিন্তু দর্শন অনেক ছোট। অনেক নিচু। যদিও আমার এখন কিছু যায় আসে না। সুশান্ত ওঁর আসল চেহারা সামনে এনে দিয়েছে। এই কুড়ি বছরে জন আব্রাহাম ছাড়া বাইরে থেকে কোনও বড় স্টার তৈরি হতে দেয়নি বলিউড। এখানে শুধু প্রাধান্য পায় স্টারকিডরা।”
সেই ‘খান’-এর নাম করেননি শাহিল। ফ্যানেদের কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, “গেস হু?” তবে ফ্যানেদের বেশিরভাগেরই ধারণা, পরোক্ষে সলমন খানের দিকেই আঙুল তুলেছেন সাহিল। তাঁদের মতে শাহরুখ নিজেই আউটসাইডার। তাই তাঁর কথা বলেননি শাহিল।
অন্যদিকে সুশান্তের মৃত্যুর পর স্বজনপোষণের অভিযোগ যে সমস্ত অভিনেতাদের উপর আনা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে সলমন অন্যতম। অভিনেত্রী জিয়া খানের মা-ও সলমনের দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, জিয়ার আত্মহত্যা কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত সূর্য পাঞ্চোলিকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন স্বয়ং সলমন।
বর্তমানে ক্যামেরার সামনের জগতকে পুরোপুরি বিদায় জানিয়ে সাহিল বেছে নিয়েছেন অন্য পেশা। তিনি এখন সেলিব্রিটি ফিটনেস ট্রেনার। নিজের পেশায় খুশি তিনি। তবে বলিউডের কিছু চাপা পড়ে যাওয়া সত্য হঠাৎ করেই প্রকাশ্যে চলে আসায় বেশ অস্বস্তিতে বলিউডের নামজাদা তারকারা।