আচ্ছা এই জোড়়া ভুরু, বাউন্সি চুল, প্যাস্টেল সবুজ চোখ…
(প্রশ্ন শেষ করতে না দিয়েই) কেমন লাগছে? আচ্ছা, আমি কিন্তু বাংলাতেই কথা বলব। সুজয়কে (সুজয় ঘোষ) তো জানেন, সারাক্ষণ ফাজলামি মোডে থাকে। ঠাট্টা-ইয়ার্কি করতে করতেই বাংলা শিখেছি ওর কাছে। আর এখন স্যর সৃজিত। জানেন, সুজয় অনেক ভুলভাল বাংলা শব্দ শিখিয়ে দিয়েছিল! উফ! সৃজিত বলল, এগুলো ইউজ না করতে। ভাগ্যিস!
‘রাজকাহিনী’ কেমন লেগেছিল?
আই ওয়াজ বোল্ড ওভার বাই দ্য পাওয়ার অব দ্য ফিল্ম। কী সিনেমা! তবে এখানে অন্য মানুষ, অন্য ভাষায় ‘বেগমজান’ করছে।
ঋতুপর্ণাকে কেমন লেগেছে?
ঋতু অসাধারণ। ছবিতে কত জন শক্তিশালী অভিনেত্রী, তাদের হয়তো প্রচুর সংলাপ নেই। কেবল উপস্থিতি দিয়ে অভিনয় ক্ষমতাটা বুঝিয়ে দিয়ে গেছে। দে আর পার্ট অব দ্য সিন। জয়া, সুদীপ্তা। এটাই সবচেয়ে চোখে পড়েছিল আমার। আমি সৃজিতকে বলেছিলাম কী করে করলে এটা?
এত ভাল বাংলা বলছেন, এত বাঙালি পরিচালকের সঙ্গে কাজ করছেন…
আমি তো পুরো বাঙালি হয়ে গেছি। গৌতম হালদার, প্রদীপ সরকার, ঋভু, সুজয়, সৃজিত, প্রত্যেকের মধ্যেই একটা প্যাশন আছে। এখন বাংলা বলে ফ্লোরে সবাইকে ইমপ্রেস করার চেষ্টা করছি।
কী রকম বাংলা?
হুমমমম, ‘চলো, চলো, চলো। বাইরে বেরিয়ে পড়ি। ডাকছে আমায় দিঘা সুন্দরী’—এটা সুজয়-এর শেখানো। বাংলার কত জায়গায় শ্যুট করে চলেছি... ‘কহানি ২’ কালিম্পং, চন্দননগর, ‘তিন’ কলকাতায়, ‘বেগমজান’ পাতজোরে। ঝাড়খণ্ড হলে কী হবে বাংলার বর্ডার তো...এখন বাংলাকে খুব কাছের মনে হয়। আর জানেন আমার মা কী বলে!
কী?
মা বলে, এই যে আমার এত বাংলায় আসা, বাঙালিদের সঙ্গে কাজ করা, এর সঙ্গে নিশ্চয়ই পূর্বজন্মের যোগাযোগ আছে!
শান্তিনিকেতনে ‘আমার কুটিরে’ গিয়ে নাকি পাগল হয়ে গিয়েছিলেন?
সত্যিই কী অসাধারণ কাঁথা, বাটিক। শুধুই কি শাড়ি কুর্তা, ইয়াররিংস, মিউজিক্যাল ইন্সট্রুমেন্টস। হাটে বাউলের গান— পাগল না হয়ে উপায় কী! ইলাজিও (ইলা অরুণ) কিন্তু শপিং করেছেন।
ইলা অরুণ বললেন বেগমজানকে দেখতে দেখতে ওঁর শাবানা আজমির অভিনয়ের কথা মনে হচ্ছে!
তাই! সো নাইস অব হার! আমি খুব চেষ্টা করছি বেগমজান হয়ে উঠতে। আর সৃজিত বড্ড খুঁতখুঁতে। আমি লাকি। এই হাভেলিতে এলেই কী রকম মুড তৈরি হয়ে যায়। সামনে এরকম খাড়া পাহাড়, লাল মাটি...জানেন ১৩ বছর ধরে চেষ্টা করছি বোলপুর-শান্তিনিকেতনে আসার। এত দিনে হল।
এই বছর অনেকগুলো ছবি করছেন। মাঝখানে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলেন?
ছবি না করলেই কি অভিনেত্রীরা হারিয়ে যায়! তা নয়। আমার একটু হেল্থ প্রবলেম ছিল। এই বছর ‘কহানি ২’ শেষ করলাম। ‘বেগমজান’ করছি। এর পর মালয়ালি ছবি করার কথা।
কী নিয়ে ছবি?
এটা কবি কমলা দাসের বায়োপিক। দেখুন, এক বছরে তিনটে ছবি করতে পারি। আবার বছরে একটাই ছবি। ক’টা ছবি করলাম সেটা বড় কথা নয়, ছবি করতে গিয়ে লাইফটা কতটা এনজয় করলাম সেটাই আসল।
আচ্ছা আপনি সব সময় মহিলাকেন্দ্রিক চরিত্রে অভিনয় করেন…
মহিলা-পুরুষ নয়। স্ক্রিপ্ট পছন্দ হলে করি।
কখনও মনে হয় না শাহরুখ বা আমিরের সঙ্গে ছবি করি?
দেখুন, ভাল স্ক্রিপ্ট হলে নিশ্চয়ই ওদের সঙ্গে কাজ করব। কিন্তু অ্যাক্টর দেখে ছবি করব সেটা ভাবিনি কখনও। তবে যদি কোনও ইন্টারেস্টিং স্ক্রিপ্ট হয় যেখানে ইন্ডাস্ট্রির তিন খানের কেউ আছেন, তা হলে নিশ্চয়ই করব।
বিয়ের পর কিছু বদল হয়েছে?
সিদ্ধার্থ (রায় কপূর) কোনও চাপ দেয় না আমাকে। আমাকে আমার মতো করেই বোঝে ও। তবে দেখুন না, রোজ বিকেল চারটেয় একটা ফোন আসে আমার কাছে। কুক ফোন করে, বলে বাড়িতে কী রান্না হবে? আগে কখনও সব্জি-ডাল নিয়ে ভাবতে হয়নি। শ্যুটের পর মনে হলে বাড়ি গিয়ে সোজা ঘুমিয়ে পড়তাম। কিন্তু এখন সিদ্ধার্থ হয়তো বলল, চলো কোথাও ঘুরে আসি। তখন যাই। বদল বলতে এই টুকরো টুকরো বিষয়। এটাই তো বিয়ের মজা...