শ্রীলেখা মিত্র।
২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাম দলের হয়ে প্রচণ্ড খেটেছিলেন শ্রীলেখা মিত্র। রক্তদান শিবির থেকে শ্রমজীবী ক্যান্টিন হয়ে নির্বাচনী প্রচার-- বাদ দেননি কিছুই। শ্রীলেখা এবং তাঁর পরিবার আজীবন সিপিএম সমর্থক। সেই বিশ্বাস, বাম দলের সঙ্গে সেই সুসম্পর্কে কি এ বার চিড় ধরতে চলেছে? নেটাগরিকরা তেমনই অনুমান করছেন শ্রীলেখার রবিবারের একটি পোস্ট থেকে। শাসক দলের জনৈক সমর্থক খোলাখুলি অভিনেত্রীকে মন্তব্য বিভাগে লিখেছেন, ‘সিপিএম আপনাকে কষ্ট দিয়েছে! দিদি আপনি তৃণমূলে আসুন।' এই ডাকে কি আদৌ সাড়া দিচ্ছেন শ্রীলেখা? সুইৎজারল্যান্ড থেকে ফোনে আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে শ্রীলেখার সাফ জবাব, ‘‘কিছু উঠতি বাম সমর্থকের মন্তব্যের জেরে আজন্মের বিশ্বাসে বদল ঘটবে না। আমি কোনও দিনই প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়াইনি। আগামী দিনেও সেই পথে হাঁটব না।’’
শ্রীলেখার ফেসবুক বলছে, পথপশুর দত্তক নেওয়াকে কেন্দ্র করেই বাম দলের সঙ্গে ইদানীং সম্পর্কের সামান্য অবনতি তাঁর। রেড ভলান্টিয়ার্সের শশাঙ্ক ভাভসার এক পথপশুকে দত্তক নেবেন এই শর্তে তাঁর সঙ্গে ডেট করেন তিনি। অভিনেত্রীর অভিযোগ, ডেটের এক মাসের মধ্যে ওই শশাঙ্কের গাফিলতিতে দত্তক নেওয়া পথপশুটির মৃত্যু হয়। আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শ্রীলেখা জানান, ‘‘রেড ভলান্টিয়ার্স বলেই শশাঙ্ককে বিশ্বাস করেছিলাম। সেই বিশ্বাসের এই পরিণতি হবে ভাবতে পারিনি। শশাঙ্ক রেড ভলান্টিয়ার্স সংগঠনের কলঙ্ক।’’ সে কথা তিনি পোস্টেও লেখেন। এর পরেই শশাঙ্কের সমর্থনে মুখ খোলেন এই প্রজন্মের কিছু বাম সমর্থক। ডেটের বিনিময়ে পথপশু দত্তক নেওয়া নিয়েও তাঁরা কটূক্তি করতে ছাড়েননি অভিনেত্রীকে।
দিন কয়েক এই কাজিয়া চলার পরেই রবিবার সকালে আচমকা শ্রীলেখার পাতায় নেটাগরিকেরা দেখেন তৃণমূল সমর্থকের ওই মন্তব্য। তিনি আরও লিখেছেন, ‘এ বারের নির্বাচনে সিপিএমের জন্য এত কিছু করলেন, তার বিনিময়ে আপনি কী পেয়েছেন? টাকা-পয়সা? কিছুই পাননি। পেলেন শুধুই কষ্ট আর যন্ত্রণা।’ তার পরেই অভিনেত্রীকে তাঁর পরামর্শ, শাসক দলে চিরঞ্জিৎ, শতাব্দী, দেব, নুসরত, মিমি, জুন, কাঞ্চন প্রমুখ শ্রীলেখার সহশিল্পী, সতীর্থরা সম্মান এবং স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গেই রয়েছেন। এই মন্তব্যের স্ক্রিনশট অভিনেত্রী ভাগ করে জানিয়েছেন, ‘শাসকদলের সমর্থক বুঝলেন.... যাক।' যদিও শ্রীলেখার অনুরাগীরা সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সাবধান করে মন্তব্য বিভাগে লিখেছেন, ‘তৃণমূলের খেলাতেই দু’জন বামপন্থীর মধ্যে দ্বন্দ্ব হচ্ছে’। আর একজনের কটাক্ষ, এর থেকেই প্রমাণ হল তৃণমূল মানেই টাকা।