শ্রীলেখা মিত্র। ছবি: ফেসবুক।
বিপণন সংস্থার প্রচার বিজ্ঞাপন থেকে মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করে থাকেন বিনোদন দুনিয়ার মানুষ। তাই বিপণন সংস্থার সঙ্গে সখ্যতা বজায় রাখাই দস্তুর মনে করেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। কিন্তু টলি অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র আওয়াজ তুললেন একটি নির্দিষ্ট বিপণন সংস্থার বিরুদ্ধে।
পুরনো ঘটনার স্মৃতি উস্কে দিলেন শ্রীলেখা। একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক অভব্য আচরণ করেন অধস্তন কর্মীদের সঙ্গে। সেই অকথ্য ভাষায় কথোপকথনের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। পরবর্তীকালে আরও একটি ঘটনার নিদর্শন মেলে। একটি প্রসাধনী বিপণন সংস্থার এক কর্মী আত্মহত্যা করেন। এই ঘটনা নিয়ে সমাজমাধ্যমে সোচ্চার হন শ্রীলেখা মিত্র। বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ কর্পোরেট দুনিয়ার সার্বিক প্রক্রিয়াকে এক ফেসবুক পোস্টে একহাত নিয়েছেন শ্রীলেখা। তাঁর এই প্রতিবাদী মনোভাবের কারণে, বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখিও তাঁকে হতে হয়েছে বলে শ্রীলেখার দাবি।
এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে আনন্দবাজার অনলাইনকে অভিনেত্রী জানান, “আমার সমাজমাধ্যম দেখাশোনা করার জন্য ম্যানেজার রাখিনি। যেটা ঠিক মনে হয়, নিজেই পোস্ট করি। রূপটান ছাড়া নিজের ছবি পোস্ট করি। নানা কারণে ইচ্ছাকৃত ভাবে ইন্ডাস্ট্রি থেকে দূরে রাখা হয়েছে আমাকে। আমার ম্যানেজার রাখার কথা চলছে। কিন্তু ওরা বলেছে, কোনও সংস্থায় যখন আমার কথা বলা হয় তখন সংস্থার তরফে জানানো হয়, আমি খুব বিতর্কিত মন্তব্য করি! পাশাপাশি আমার রাজনৈতিক মতাদর্শও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একটি বিপণন সংস্থার তরফে আমাকে বলা হয়, আমার কোনও গ্ল্যামারাস ছবি নেই সমাজমাধ্যমে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এই ঘটনাটি আমার চোখে পড়ে গেল। একটি ১৩ বছরের মেয়ে দেখছে তার বাবার মৃতদেহ ঝুলছে। এই ঘটনা জানার পরেও আমি সাজগোজ করে ছবি দেব? মানুষ হিসেবে আমি এটা নই।”
সমাজমাধ্যমের ব্যবহার নিয়েও সমালোচনা করলেন শ্রীলেখা। বললেন, “রিল করতে ব্যস্ত সকলে। যাপনস্তর বজায় রাখতে টাকা লাগবে তো! তবে আমি কখনও গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাতে পারব না। শ্রীলেখা মিত্র নিজে একটা ব্র্যান্ড। যে সংস্থা আমার গুরুত্ব বুঝে আমাকে প্রস্তাব দিতে আসতে চায়, সে আসবে। টাকা নিশ্চয় দরকার। কিন্তু টাকার জন্য নিজের বিবেক, সম্মান, রুচি বিসর্জন দিতে পারব না।”
বৃহস্পতিবার ফেসবুক পোস্টে শ্রীলেখা লিখেছেন, “জানি আমার এই পোস্টে ফেসবুক জাগবে না। শুনলাম কোনও বিপণন সংস্থার প্রচার পাওয়ার জন্য বিতর্কিত পোস্ট করতে নেই সমাজমাধ্যমে। শুধু সাজগোজ করে নিজের ছবি দিতে হয় অথবা নেচে নেচে রিল করতে হয়। মুখ ও মুখোশের টানাপড়েনে দোটানায় পড়েছি।”
নির্দিষ্ট বিপণন সংস্থা নিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, “এটি একটি বড় বিপণন সংস্থা। ইক্যুইটি ভাল হওয়া সত্ত্বেও এই ঘটনা ঘটল কেন? এগুলো দেখেও চুপ করে থাকতে হয় বা উপেক্ষা করে যেতে হয়, না হলে আমাকে কোনও সংস্থার প্রচার বা বিজ্ঞাপনের কাজ দেওয়া হবে না, তা হলে তাই! অন্যায়ের সঙ্গে আপস করা আমার ধর্মে নেই। কর্পোরেট জগতকে এর দায় নিতে হবে।”