কিম কি-দুক
একটা সূত্র ছেড়ে দিতেন আর বলতেন, ‘‘বাকিটা দর্শক ভাবুক। সবটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে এমন তো মানে নেই।’’ সিনেমাকে এ ভাবেই নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করে গিয়েছেন কিম কি-দুক। দর্শককে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বাধ্য করা পরিচালককে ঘিরে তাঁর ভক্তদের আজ একটাই প্রশ্ন, করোনা আর কত সৃষ্টি থামিয়ে দেবে? দক্ষিণ কোরিয়ার এই বিখ্যাত পরিচালক মারা গিয়েছেন শুক্রবার রাতে লাটভিয়ায়। করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি, তার পরেই দেখা দেয় নানাবিধ শারীরিক জটিলতা। মৃত্যুকালে পরিচালকের বয়স হয়েছিল ৫৯।
তাঁর ২৩ বছরের কর্মজীবনে দর্শককে উপহার দিয়েছেন একাধিক আন্তর্জাতিক মানের ছবি। চিত্রনাট্যকার হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে প্রথম পরিচালনা ‘ক্রোকোডাইল’ থেকেই সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। তার পর ‘দ্য আইল’, ‘স্প্রিং, সামার, ফল, উইন্টার... অ্যান্ড স্প্রিং’, ‘সামারিটান গার্ল’, ‘পিয়েতা’, ‘ওয়ান অন ওয়ান’... প্রতিটি ছবি কালজয়ী। রাজনীতি, সমাজ, নারী-পুরুষের সম্পর্ক সবই তাঁর ছবিতে ভীষণ খোলামেলা। ছবির ভিসুয়াল ট্রিটমেন্টের কারণে তাবড় পরিচালকদের কাছেও তিনি শিক্ষক।
কিম কি-দুকের ছবি ছাড়া বার্লিন, ভেনিস বা কান চলচ্চিত্র উৎসব ভাবাই যায় না। ‘সামারিটান গার্ল’-এর জন্য বার্লিনে পেয়েছিলেন সিলভার বেয়ার। ‘থ্রি-আয়রন’ পেয়েছিল ভেনিস থেকে সিলভার লায়ন। ‘পিয়েতা’র মতো জটিল মনস্তত্ত্বের ছবি বোধহয় কমই হয়েছে, যা ভেনিসে পেয়েছিল গোল্ডেন লায়ন।
অ্যাকাডেমি এখন দক্ষিণ কোরিয়ার ছবিকে গুরুত্ব দিলেও, কিম কি-দুককে কখনও স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু তাতে কি এসে যায়? দর্শকের মন থেকে পরিচালক কখনও ‘ডিজ়লভ’(ড) হবেন না।