সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।
তিনি যে নেই। তাঁর অনুপস্থিতিতেই প্রেক্ষাগৃহে রাজত্ব করেছে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের ‘অভিযান’। উইন্ডোজের ‘বেলাশুরু’ গাইছে জীবনের গান। ১০ জুন মুক্তি পেতে চলেছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শেষ ডাবিং করা ছবি ‘তৃতীয় পুরুষ’। প্রযোজনায় ইউডি এন্টারটেনমেন্ট। পরিচালক রাজ মুখোপাধ্যায় এর আগেও সৌমিত্রবাবুকে নিয়ে বানিয়েছিলেন ‘চল কুন্তল’। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে তাঁর আফসোস, ‘‘অসুস্থতার জন্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ছবি-মুক্তির দিন যেতে পারতেন না। কিন্তু ‘তৃতীয় পুরুষ’-এ অভিনয়ের পর বলেছিলেন, তিনি ছবি মুক্তির দিন উপস্থিত থাকবেন। তাঁকে ছাড়াই মুক্তি পাবে ছবিটি।’’
২০১৮-য় রাজ ‘তৃতীয় পুরুষ’ বানিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় চরিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে ঘিরে মনোজ মিত্র, দীপঙ্কর দে, শ্রীলেখা মিত্র, ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী, শিশুশিল্পী শুভদর্শী মুখোপাধ্যায়। ২০১৯-এ ছবির সমস্ত কাজ শেষ। ২০২০-তে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ছবি। অতিমারি সব ওলটপালট করে দিয়েছে। ছবির পটভূমিকায় ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত বিপত্নীক সৌমিত্র। ছেলে (ইন্দ্রজিৎ) বৌমা (শ্রীলেখা) বিচ্ছিন্ন। এক মাত্র নাতি দাদুর হেফাজতে। যে মানুষ নিজেকেই নিজে সামলাতে পারেন না তিনি কী করে এক শিশুর দায়িত্ব বহন করবেন? বিচ্ছেদের সন্তানও কি খুব সুস্থ ভাবে মানুষ হবে? ছবিতে অভিনেতার বন্ধু মনোজ মিত্র। আইনজীবী দীপঙ্কর দে। নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ‘বেলাশুরু’ ছবিতে আধুনিক জীবনের সমস্যা ভুলে যাওয়া রোগের উপরে আলো ফেলেছেন। ‘পোস্ত’-তেও তিনি দাদু হয়ে সামলেছেন নাতিকে। এই দুটো জনপ্রিয় ছবিরই ছায়া রাজের আগামী ছবিতে? পরিচালকের যুক্তি, ‘ময়ূরাক্ষী’ বা ‘শ্রাবণের ধারা’র মতো ছবিতেও সৌমিত্রবাবু বিস্মৃতির সমস্যায় আক্রান্ত চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সেই নামগুলোও তা হলে বলতে হয়। তিনি নিজের মতো করে গল্প লিখেছেন। পর্দায় তুলে ধরতে চেয়েছেন। এবং অভিনয় করে ভীষণ তৃপ্তি পেয়েছিলেন সৌমিত্র স্বয়ং।
একদা সৌমিত্রবাবুর প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা, আকর্ষণের কথা আনন্দবাজার অনলাইনের কাছেই প্রথম জানিয়েছিলেন শ্রীলেখা। এই ছবিতে তিনি তাঁর পুত্রবধূ। শ্রীলেখা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর আগের ছবি। কিছুই আর স্পষ্ট মনে নেই। তবে সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে কাজের স্মৃতি সততই সুখের। কেউ ভাবতে পারেননি, এই ছবিই তাঁর শেষ ডাবিং করা ছবি হবে। ছবিটি নিবেদন করবেন পঙ্কজ নাহতা এবং কিশোর রথী।