‘বেলাশুরু’-তে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত।
পরিচালক জুটি নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আড়াই বছরের অপেক্ষা সার্থক। সাত বছর পরে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়-স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত আবারও দেখিয়ে দিলেন, তাঁরাই বক্স অফিসের ‘রাজা-রানি’। টলিউড ছবির বাণিজ্য বিশ্লেষক পঙ্কজ লাডিয়া টুইটে জানিয়েছেন, প্রথম দিনেই ‘বেলাশুরু’র বাণিজ্য ৮০ শতাংশ। তাঁর কথায় সিলমোহর দিয়েছেন ডিস্ট্রিবিউটর নবীন চোখানি, বাবলু দামানি-রাও। আনন্দবাজার অনলাইনকে তাঁরা জানান, ৭৫টি শো-তে নারী-পুরুষ, আগের ও পরের প্রজন্ম নির্বিশেষে সবাই সৌমিত্র-স্বাতীলেখাকে শেষ বার দেখতে ছুটে এসেছেন। অতিমারির পরে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কিশমিশ’, ‘টনিক’-সহ বহু ছবিকে টপকে গিয়েছে ‘বেলাশুরু’।
নন্দিতা-শিবপ্রসাদ উপস্থিত ছিলেন বিজলি প্রেক্ষাগৃহে। আনন্দবাজার অনলাইনকে শিবু জানান, আবারও ভালবাসা জিতে গেল। ছবি দেখে বেরনোর সময় দর্শকদের মুখে শোনা গিয়েছে ছবির সংলাপ, ‘হাতের উপর হাত রাখা সহজ নয়। সেই হাত আজীবন ধরে থাকা আরও কঠিন।’ তাঁরা আগামী দিনে সেই চেষ্টাই করবেন বলে জানিয়েছেন পরিচালক।
শুক্রবার ছিল শিবপ্রসাদের জন্মদিন। দর্শকদের থেকে এমন ফেরত-উপহার পেয়ে তিনি তৃপ্ত। ২২ মে জন্মদিন স্বাতীলেখা সেনগুপ্তের। সেই বিশেষ দিনের আগাম উপহার দর্শকদের পৌঁছে দিয়েও খুশি তিনি। একই সঙ্গে দাবি, ‘‘সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যে এখনও বাঙালির আবেগ, তা আবারও প্রমাণিত। সশরীরে উপস্থিত না থেকেও সৌমিত্র জেঠু স্বাতীদিকে নিয়ে পর্দায় ফের জাদু ছড়িয়ে দিলেন। ওঁদের কুর্ণিশ।’’
ছবি-মুক্তির দিনে বিজলি প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত ছিল আনন্দবাজার অনলাইন। এই প্রথম উইন্ডোজ প্রযোজনা সংস্থার ছবি মুক্তি পেল দক্ষিণ কলকাতার এই প্রেক্ষাগৃহে। একটা সময়ে এখানেই সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের একের পর এক ছবি মুক্তি পেয়েছে। রৌপ্য জয়ন্তীর গৌরব অর্জন করেছে। সেই একই হল দেখল সৌমিত্রর শেষ ছবি ঘিরে উন্মাদনা। এ দিন ছবির সমস্ত তারকা অভিনেতা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত-সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, অপরাজিতা আঢ্য-খরাজ মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রাণী দত্ত-শঙ্কর চক্রবর্তী, মনামী ঘোষ-অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, প্রদীপ ভট্টাচার্যরাও উপস্থিত ছিলেন সেখানে।
এই বাণিজ্য, দর্শকের ঢল দেখেই নবীন এবং বাবলুর আশা, শনি এবং রবিবার ‘হাউজফুল বোর্ড’ ঝুলবে শহরের সমস্ত প্রেক্ষাগৃহে। তবে আসল পরীক্ষা নতুন সপ্তাহের প্রথম তিন দিন। সোম, মঙ্গল, বুধবারের বেড়া পার করে দিতে পারলে অব্যাহত থাকবে ‘বেলাশুরু’র জয়যাত্রা— এমনটাই মনে করছেন তাঁরা।