বসন্ত বিলাপ ছবির একটি দৃশ্য। ফাইল চিত্র।
কোনও কোনও ছবিতে লোকেশনও একটা চরিত্র হয়ে দাঁড়ায়। দীনেন গুপ্তর পরিচালনায় ‘বসন্ত বিলাপ’-এ মেদিনীপুর শহরও তেমনটাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মফস্সল শহর, তার বিটকেল বাসিন্দা আর কর্মসূত্রে আগত চরিত্রদের নিয়ে দমফাটা হাসির এই ছবি আজও সমান জনপ্রিয়। আর এই ছবিতেই সত্যজিতের ‘অপু’, তপন সিংহের ‘ময়ূরবাহন’ এমন এক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, সেই চটুল যুবক ‘শ্যাম’-কেও কি ভোলা যায়? সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘বসন্ত বিলাপ’-এর সূত্রে মেদিনীপুর শহরের একটা সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
শ্যুটিংয়ে মেদিনীপুরে এসেছিলেন তিনি। সালটা ১৯৭২-৭৩। শহরের বেশ কিছু এলাকায় হয়েছিল সেই সিনেমার শ্যুটিং। সিনেমার শ্যুটিং চলাকালীন মেদিনীপুর শহরের কোতবাজার এলাকায় অসিতকুমার সাহা (মিনু)-র বাড়িতে গিয়েছিলেন সৌমিত্র। অসিত সাহা ২০০৮ সালে প্রয়াত। তাঁর ছেলে অমিতকুমার সাহা সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করলেন।
যদিও ওই সিনেমার শ্যুটিংয়ের পরে তাঁর জন্ম। তবে তাঁর বাবার কাছ থেকে ঘটনার বিবরণ শুনেছিলেন। তিনি বললেন, “মিনু সাহা গীতিকার ও সুরকার ছিলেন। সেই সূত্রে সিনেমায় মেদিনীপুর স্টেশনের একটি দৃশ্যে ছিলেন তিনিও।” তা ছাড়া সেই সিনেমায় বল খেলার সময়ে একটি বাড়ির কাচ ভেঙে যাওয়ার দৃশ্য ছিল। সেই বাড়িটা অসিত সাহাদেরই। সে বাড়ি এখন আর নেই, তবে যেখানে খেলা হয়েছিল রাস্তার উপরে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বিবরণ দিলেন অমিত।
আরও পড়ুন: সংসার সীমান্ত ছেড়ে তিন ভুবনের পারে পাড়ি অপুর
আরও পড়ুন: শেষ যাত্রায় সৌমিত্র, তাঁকে ঘিরে অসংখ্য গুণমুগ্ধের ভিড়
তাঁদের বাড়িতে এলে ‘মিনুবাবু’ বলে অসিত সাহাকে সম্বোধন করতেন সৌমিত্র। অমিত বললেন, “বাবার থেকে শোনা, বাড়িতে ওঁর জন্য দই ইলিশ রান্না করা হয়েছিল।” তা ছাড়া মহুয়া সিনেমা হলে, রাস্তায়, রেল স্টেশনে শ্যুটিং করেছিলেন সৌমিত্র। সেই সব স্মৃতি শহরের অনেক প্রবীণের মনেই আজ ফিরে আসছে।