অপুর সংসার ছবির একটি দৃশ্য। ফাইল চিত্র।
জীবনের প্রথম ছবিতে তিনি বিভূতিভূষণের সৃষ্ট চরিত্রে। তার উপরে দারুণ সাহিত্যরসিক, কবি। বিভূতি-সাহিত্যের অনেকগুলি চরত্রেই তিনি অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সব মিলিয়ে অবধারিত ভাবে তিনি ছিলেন বিভূতি-ভক্ত। একাধিক বার তিনি বিভূতিভূষণের জন্মভিটতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও ব্যস্ততার কারণে যাওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে বিভূতি-পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন সৌমিত্র।
সত্যজিৎ রায় যখনই বিভূতিভূষণের কাহিনি নিয়ে উপরে কোনও ছবি করেছেন, তখন বিভূতিভূষণের স্ত্রী রমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে নিতেন। সেই সূত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও বিভূতি-পরিবারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুত্র তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের অনেক বার বিভিন্ন বিষয়ে কথোপকথন হয়েছে, এমনটাই জানালেন প্রয়াত তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরও জানান, ‘অশনি সংকেত’ ছবির প্রিমিয়ারে এবং সন্দীপ রায়ের বউভাতে গিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাঁদের। আরও একটা ব্যাপার, তিনি এবং সৌমিত্র, দু’জনেই কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কৃষ্ণনগরের বাড়িতে একটি টিউটোরিয়াল ছিল। সেই টিউটোরিয়ালে পড়তে যেতেন মিত্রা। তাঁর বাবা অম্বুজকুমার মৌলিকের সঙ্গে সৌমিত্রের একটি পারিবারিক সম্পর্ক ছিল থিয়েটার এর কারণে ।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় অনেক মানুষ আছেন যাঁরা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন। এমনই একজন অভিনেতা নান্টু সরকার, যিনি বিশ্বরূপা থিয়েটারে অভিনয় করতে গিয়ে তাঁকে পেয়েছিলেন। সৌমিত্রর লেখা ‘ন্যায়মূর্তি’ নাটকে একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন নান্টু। পয়সা কম থাকার কারণে বিধান নগর স্টেশন থেকে বিশ্বরূপা হেঁটে যেতে হতো। কিন্তু এমন অনেক দিন হয়েছে, পথ থেকে সৌমিত্র গাড়িতে তুলে নিয়েছেন। সেই কথা তাঁর মনে পড়ছে বার বার।
আরও পড়ুন: লাইভ: সৌমিত্রর দেহ পৌঁছে গেল কেওড়াতলায়
আরও পড়ুন: মেদিনীপুর ভোলেনি শ্যামকে, সৌমিত্রর প্রয়াণে বিমর্ষ ‘বসন্ত বিলাপ’-এর শহর