সোনালির আত্মা শান্তি পাবে কবে? প্রশ্ন পরিবারের
বিজেপি নেত্রী তথা টেলিভিশন তারকা সোনালির মৃত্যুরহস্যের কিনারা হয়নি এখনও। এ বার সিবিআই তদন্ত চাইল সোনালি ফোগতের ১৬ বছরের মেয়ে যশোধরা। কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে মায়ের? জানতে সঠিক বিচার চাইল সে।এক সাক্ষাৎকারে যশোধরা বলে, “যে ভাবে তদন্ত চলছে তাতে আমি নিশ্চিন্ত হতে পারছি না। সিবিআই তদন্তভার নিক। এখনও অবধি কোনও পদক্ষেপ করা গেল না। অভিযুক্তদের গোয়ায় রেখে দেওয়া হল, তাঁদের কী মতলব ছিল সেটুকু অবধি জানার চেষ্টা করা হল না। পুলিশ করছেটা কী? আমার মায়ের সঙ্গে যা হয়েছে তার বিচার চাই। এর শেষ না দেখে ছাড়ব না। হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও এখনও অবধি সিবিআই কিছু করেনি।” শনিবার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন সোনালির পরিবারের সদস্যরা। তদন্ত যাতে ঠিক ভাবে হয়, তার জন্য সিবিআই হস্তক্ষেপের দাবি জানান। খট্টরের অনুরোধেই রবিবার গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত সোনালি-হত্যাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের কথা বলেন।কিন্তু কোথায় কী? প্রশ্ন তুলল সোনালির মেয়ে। পরিস্থিতি আগে যেখানে ছিল সেখানেই আছে বলেও মন্তব্য করেছে সে।যশোধরার দাবি, ‘‘মাকে পরিকল্পনা করে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। কারণ রিসর্ট মাত্র দু’দিনের জন্য বুক করা হয়েছিল। আর মাকে বলা হয়েছিল এক সপ্তাহ শ্যুট হবে গোয়ায়। কিন্তু মা আর ফিরল না।’’ জানা গিয়েছে, যশোধরার জন্য ১১০ কোটি টাকার সম্পত্তি রেখে গিয়েছেন অভিনেত্রী।
হিসারের টিকটক তারকা এবং রিয়্যালিটি টিভি শো ‘বিগ বস’-এর প্রতিযোগী সোনালির রহস্যমৃত্যু হয় গত ২৩ অগস্ট। উত্তর গোয়ার হাসপাতালে তাঁকে মৃত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে হৃদ্রোগ বলে মনে করা হলেও ময়নাতদন্তে জানা যায়, শরীরে ‘ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন’ রয়েছে।ঘটনার এক দিন আগেই ব্যক্তিগত সহকারী সুধীর সাঙ্গওয়ান এবং সুধীরের সঙ্গী সুখবিন্দর সিংহকে নিয়ে গোয়ায় এসেছিলেন সোনালি। ওই দু’জন তাঁকে রাসায়নিক মাদক-মিশ্রিত পানীয় খাইয়েছিলেন বলে তদন্তে জানা গিয়েছে। সুধীর এবং সুখবিন্দর-সহ মোট পাঁচ জন এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন। তার মধ্যে মাদক পাচারের অভিযোগে ধরা হয়েছে রামা মন্দ্রেকর নামে এক জনকে।গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সবন্ত মঙ্গলবার জানিয়েছেন, তাঁর সরকার হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী এবং পুলিশের ডিজিকে ‘গোপন রিপোর্ট’ জমা দিয়েছে। গোয়া পুলিশের একটি দল তদন্তে হরিয়ানায় গিয়ে কিছু বয়ান রেকর্ড করবে।তদন্তে আসা গোয়ার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘যেখানে দরকার পড়বে, সেখানে যাওয়া হবে।’’ হরিয়ানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেছেন, ‘‘গোয়া পুলিশের তদন্তকারীরা সোনালির পরিবারের সদস্যদের বয়ান নিচ্ছেন। আমরা তাঁদের সহযোগিতা করছি। তদন্তের জন্য তাঁরা যে সব জায়গায় যেতে চান, আমরা সঙ্গে যাব।”মঙ্গলবার সোনালির পরিজন হিসারের পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের অভিযোগ, সুধীরের এক সহকারী সোনালির মৃত্যুর পরে তাঁর খামারবাড়ি থেকে নজর-ক্যামেরার ডিজিটাল ভিডিয়ো রেকর্ডার, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য নথি চুরি করে পালান। শিবম নামে সেই অভিযুক্তকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল।