ডিঙ্কা, সোহিনী ও সপ্তর্ষি, পুটু পিসি
‘খড়কুটো’ ও ‘শ্রীময়ী’। ‘স্টার জলসা’-র দুই জনপ্রিয় ধারাবাহিক। দুই-ই লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। প্রতি সপ্তাহে টিআরপি নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এরই মাঝে বিপদে পড়ল অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত ও অভিনেতা সপ্তর্ষ মৌলিকের দাম্পত্য। সোহিনী ও সপ্তর্ষি যথাক্রমে এই দু’টি ধারাবাহিকের দুই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। ধারাবাহিকের লড়াইয়ের আঁচ পড়ল দম্পতির দৈনন্দিন জীবনেও!
তবে না, তার জন্য বিবাহ-বিচ্ছেদ বা ছাড়াছাড়ি অথবা মান অভিমানের পালা পর্যন্ত ভেবে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। উচ্চ প্রশংসিত দুই মঞ্চাভিনেতা একে অপরের স্বার্থে ও মশকরার জন্যই রোজের এই ঝগড়ার অবতারণা করেন। আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে দৈনন্দিন দাম্পত্য জীবন নিয়ে পর্দা ফাঁস করলেন অভিনেতা সপ্তর্ষি মৌলিক ওরফে সকলের প্রিয় ‘ডিঙ্কা’।
টক্কর রোজ চলে। ধরা যাক, সোহিনী এক দিন একটি দৃশ্যে অভিনয় করার পর খুব সন্তুষ্ট। প্রথমেই সপ্তর্ষিকে মেসেজ করে জানালেন, ‘‘আজ যা অভিনয় করেছি না! তোকে টক্কর দিয়ে দিলাম!’’ পর দিন সপ্তর্ষি দারুণ অভিনয় করেছেন! খুব খুশি তিনি। পরিচালক ‘কাট’ বলার সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রীকে মেসেজ, ‘‘এ দিনের এপিসোড দেখো! তার পর বলো!’’
এ ছাড়া যে দিন টিআরপি তালিকা প্রকাশ পায়, সে দিন একে অপরকে মেসেজ করে জানান, ‘‘আজ আমরা প্রথম, তোরা/তোমরা দ্বিতীয়।’’ বাড়ি পৌঁছানোর জন্য তর সয় না কারও। সপ্তর্ষি জানালেন, ‘‘আমি হার স্বীকার করে নিই। সত্যিই তো ‘খড়কুটো’-র টিআরপি এখন সর্বোচ্চ। আর যে যাই বলুক, টিআরপি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওটা একটা মানদণ্ড। মেনে তো চলতেই হবে।’’ কিন্তু এ কথাও ঠিক যে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে নিয়ে অত্যন্ত গর্বিত। আর প্রেমের টানেই দু’জন দু’জনকে প্রতিযোগিতায় সামিল রাখেন।
তবে ডিঙ্কা কিন্তু এ সবের মাঝে একটি কথা বার বার বললেন। ‘‘আমার অভিনয় শিক্ষার গুরু কিন্তু সোহিনী। সে কথা সবসময়ে স্বীকার করি আমি।’’ জানালেন অভিনেতা। কিন্তু নিজের অভিনয় চর্চাকে আরও চাঁচাছোলা রূপ দিতে একটি পন্থা অবলম্বন করেন সপ্তর্ষি। এতে তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়ে। তাঁর সামনে যেই অভিনয় করুন না কেন, ক্যামেরা রোল হতে বা মঞ্চে ঢুকেই তিনি নিজেকে সেরা বলে মনে করেন। ‘‘সামনে যদি অস্কারজয়ী শিল্পীও দাঁড়িয়ে থাকেন, তাতেও আমার কাছে সেই মুহূর্তে আমিই সেরা।’’ সপ্তর্ষির এই কথা থেকে স্পষ্ট, এ ভাবেই তিনি নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যান।
কিছু দিন আগে সোহিনী সেনগুপ্ত আনন্দবাজার ডিজিটালে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময়ে জানিয়েছিলেন, ধারাবাহিকে কাজ করার সিদ্ধান্তের পেছনে লীনা গঙ্গোপাধ্যায় ও সপ্তর্ষি, দু’জনের ভূমিকাই তাৎপর্যপূর্ণ। ‘ডিঙ্কা’-র কথাতেও বোঝা গেল, স্কুল সামলে, নাটকের দল সামলে ধারাবাহিকে কাজ করার কথা কোনও দিন ভাবেননি সোহিনী। সপ্তর্ষি তাঁকে রাজি করিয়েছিলেন। পাশাপাশি লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পুটু পিসি’ চরিত্রটি তাঁকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। আর তাই আজ এই দম্পতি সমানতালে কাজ করে চলেছেন। ‘পুটু পিসি’ ও ‘ডিঙ্কা’ আজ তাই দর্শকের কাছে সমান ভাবে প্রিয়।