কুণাল ঘোষ-সোহিনী সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে এসে নদিয়ার মফস্সল শহরে আশ্রয় নিয়েছে এক মাওবাদী নেত্রী। তাকে আশ্রয় দিয়েছে তার হিতৈষীরা। ছদ্ম পরিচয়ে সেই মফস্সলে দিনযাপন চলছে মাওবাদী নেত্রীর। আর তাকে ধরতে পুলিশও পাল্টা কৌশল নিয়েছে। ওই মহল্লাতেই স্পেশাল ব্রাঞ্চের এক অফিসারকে পাঠিয়ে দিয়েছে তারা। যাকে দেখতে পুলিশের মতো নয়। সে থাকছে ছদ্ম পরিচয়ে। জেলে বন্দি থাকা ‘বিপ্লবী বন্ধু’দের মারফত মাওবাদী নেত্রীর কানে খবর পৌঁছেছে, তাকে পুলিশ নজরদারির মধ্যে রেখেছে। পুলিশের ‘টার্গেট’ ছদ্ম পরিচয়ে থাকা মাওবাদী নেত্রী এবং যারা তাকে আশ্রয় দিয়েছে তারা। আর তরুণী নেত্রীর লক্ষ্য পুলিশ। তাকে চিহ্নিত করা এবং এলাকা থেকে সরে যাওয়া। তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের উপন্যাসের এই রোমহর্ষক প্রেক্ষাপটেই তৈরি হতে চলেছে ওয়েব সিরিজ় ‘লহু’। এই সিরিজ়ের খবর আগেই দিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। প্রথমে সিরিজ়ের পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় গল্প নিয়ে খুব বেশি খোলসা করতে চাননি। মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন অন্যান্য কলাকুশলীও। তবে এখন জানা গিয়েছে, এই সিরিজ়ে সোহিনী সরকারকে দেখা যাবে মাওবাদী নেত্রীর চরিত্রে।
সোহিনীর বিপরীতে এই প্রথম জুটি বাঁধছেন এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভ। বাংলাদেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাবে এই ওয়েব সিরিজ়টি। আগামী ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু শুটিং। কলকাতা ছাড়াও শিলংয়ের বিভিন্ন জায়গায় শুটিং হওয়ার কথা। ইতিমধ্যেই সোহিনী জানিয়েছেন, ধুন্ধুমার অ্যাকশন থাকবে সিরিজ়টিতে। সেই সঙ্গে পরিমাণ মতো রোমাঞ্চও।
কুণাল আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমার উপন্যাস ‘পথ হারাব বলেই’-এর স্বত্ব কেনা হয়েছে। ছবির স্বার্থে গল্পে কিছু বদল হতে পারে। কিন্তু মূল বিষয়— মাওবাদী নেত্রী আর এক দুঁদে পুলিশ অফিসারের। এক দিকে পুলিশ খুঁজে পেতে চাইছে ওই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাওবাদী নেত্রীকে। আর নেত্রীও ছদ্ম পরিচয়ে থাকা পুলিশকে চিহ্নিত করতে মরিয়া। কারণ তাকে হিতৈষীদের চিনিয়ে দিতে হবে কে পুলিশ।’’ কুণাল আরও বলেন, ‘‘এই উপন্যাস লিখতে আমার বন্দিজীবনের বড় ভূমিকা রয়েছে। আমি জেলে থাকতে দেখেছি, বন্দি মাওবাদীরা জেল থেকে কী ভাবে কাজ করেন।’’
উপন্যাসে নদিয়ার শহরতলিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন মাওবাদী নেত্রী। ছবিতে সেই জায়গার বদল হলেও হতে পারে বলে জানিয়েছেন কুণাল। ছবিতে কি শুধুই অ্যাকশন? না কি প্রেমও রয়েছে? পরিচালক রাহুল বলেছেন , ‘‘এটা আমার একটা প্রেম-বর্জিত কাজ। ‘কিশমিশ্’, ‘দিলখুশ’-এর পর অন্য রকম কাজ করতে চাইছিলাম। বড় পর্দায় শুরুর কাজ দুটোই ছিল প্রেমের ছবি। তাই প্রেমের গল্পে একটু ক্লান্তি এসেছে। এ ছাড়াও নিজেকে ভাঙতে চাইছি, দেখতে চাইছি আমি আর কী কী করতে পারি। তাই সিরিজ়টা করছি। তবে এতটুকু বলতে পারি এটা এক জন মা-বাবার গল্প।’’ কুণালের লেখা ‘পথ হারাব বলেই’-এর প্রেক্ষাপটে তৈরি হতে চলা ওয়েব সিরিজ় ঠিক কোন কোন বাঁক ধরে এগোয়, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে মুক্তি পর্যন্ত।