জানানো অবধি হয়নি, কিন্তু শ্রোতাবন্ধুদের আহ্বান করে বোকা বনে গিয়েছেন জয়তী! ছবি—সংগৃহীত
‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’ সিরিজ়ের জন্য গান গেয়েছিলেন সঙ্গীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী। এ দিকে ওটিটিতে সিরিজ় মুক্তির পর চালিয়ে দেখলেন, তাঁর গাওয়া গানটি বাদ দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে সঙ্গীত পরিচালক অমিত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী, ইক্সিতা মুখোপাধ্যায় গেয়েছেন সেই গান। জয়তীকে জানানো অবধি হয়নি, কিন্তু শ্রোতাবন্ধুদের তাঁর কণ্ঠে গানটি শোনার আহ্বান করে বোকা বনে গিয়েছেন জয়তী। সেই অবমাননার জায়গা থেকেই ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি বুধবার। গায়িকা লেখেন, ‘‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেলে আমার একটি গান আছে বলে জানতাম। অনেক আশা নিয়ে দেখতে বসে দেখলাম গানটি আমার কণ্ঠে নেই।’’
বুধবার সমাজমাধ্যমে পোস্ট দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে অনেকেই ফোন করেছিলেন জয়তীকে। আনন্দবাজার অনলাইন ছাড়া কারও ফোন ধরেননি তিনি। বৃহস্পতিবার আর একটি দীর্ঘ পোস্ট করে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে সবার কৌতূহল মেটানোর চেষ্টা করলেন গায়িকা। জানালেন, প্রতিবাদ করতে চাননি, কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বলা তাঁর বক্তব্য ছিল না। কারও সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনাও করতে চাননি। কিন্তু তাতেও কি পেলেন উল্টো প্রতিক্রিয়াই?
বৃহস্পতিবার জয়তী ফেসবুকে লিখেছেন, “আমি বিভিন্ন খবরে জানলাম যে আমার ফোন না ধরা বা কোনও ভাবে যোগাযোগ না করতে চাওয়াটা আমার দুর্বলতা হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে। এটা ঠিক নয়। যাদের বোঝার ভুল হচ্ছে তাদের উদ্দেশ্যেই আবারও এই পোস্ট দিচ্ছি।”
বৃহস্পতিবার জয়তীর ফেসবুক পোস্ট। ছবি: সংগৃহীত।
এর পর গায়িকা লেখেন, “ইন্দুবালা ভাতের হোটেল সিরিজ-এ যে সিনটি দেখিয়ে আমাকে গাওয়ানো হয়েছিল সেই সিনটি প্রথম ৪টি এপিসোড এর মধ্যেই দেখানো হয়ে গেছে। আমাকে দিয়ে ২ বার গানটি ওই একই সিনের জন্য গাওয়ানো হয়েছিল। প্রথম বার পছন্দ না হওয়ায় দ্বিতীয় বার আমি গেয়েছিলাম। তখন সেই গাওয়া ‘ওকে’ করা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই আমি ভেবেছিলাম সেই গান থাকবে।”
এর পর তাঁর কন্ঠে সেই গান না শুনতে পেয়ে মর্মাহত হন জয়তী। তাঁর বক্তব্য, “আমাকে এই বাদ দেওয়ার কথাটি জানালে কি এমন অসুবিধে হত? এটুকু বোধ এবং নৈতিকতা নিশ্চই আমরা আশা করতে পারি? দাবি এটুকুই ছিল আর এখনও তাইই আছে।”
তবে তাঁর প্রথম পোস্টটির পর থেকেই জলঘোলা হচ্ছে। পরিচালক দেবালয় ভট্টাচার্য বলেন, “২৪ মার্চ মুক্তি পাবে এই সিরিজ়ের বাকি অংশ, একেবারে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, সেটা তো তার পরেই জানাতে পারব। খুব অল্প হলেও কিন্তু আমি জয়তীদির গানটি রেখেছি।” সেই বক্তব্য ‘সান্ত্বনা পুরস্কার’ বলেই মনে হয় জয়তীর, এতে তিনি আরও অপমানিত বোধ করেন। লিখেছেন, “এই সিরিজের ডিরেক্টর বা মিউজিক ডিরেক্টর বা যিনি গেয়েছেন তার প্রতি আমার কোনও অভিযোগ নেই, ছিলও না। একজন ডিরেক্টর এর এই স্বাধীনতা অবশ্যই থাকবে একথাও ঠিক কিন্তু তা বলে আমাকে একবার জানানো হল না, এইটা অন্যায় নয় এমনটা মানতে পারা মুশকিল..... তাই নয় কি???”
জয়তী তাঁর খারাপ লাগার জায়গাটি স্পষ্ট করতে চান আবার। লিখেছেন, “ যাঁরা সিরিজটি দেখে আমার গানের অপেক্ষায় ছিলেন তাঁদের কাছে আমি মিথ্যেবাদী হয়ে যেতাম, সেই গ্লানি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চেয়েছি।...এই জগতে সত্যিকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করতে গেলে অনেকখানি মানসিক শক্তি লাগে। আমি এখনও তার জন্য প্রস্তুত হতে পারিনি।”