ইমন চক্রবর্তী।
এই প্রথম সঙ্গীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী সাইবার বুলিং-এর মুখোমুখি। সবাই তাঁর কাজ নিয়ে কথা বলে। নতুন গান শোনার অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু কোনও দিন তাঁকে ‘ভোগ’ করার কদর্য ইঙ্গিত সোশ্যাল পেজে কেউ দেয়নি।
জনৈক নেটাগরিক শিল্পীর ইনস্টাগ্রামে লিখেছে, ‘‘তোমার দেহের প্রতিটা ইঞ্চি ভোগ করব, প্রতিটা পশমে আদর করব!’’ তারকাদের প্রতি সাধারণের আগ্রহ বা তাঁদের ঘিরে আকর্ষণ জন্মানো অস্বাভাবিক নয়। অভিনেত্রীরা এই ধরনের মন্তব্য হামেশাই দেখতে পান তাঁদের সোশ্যাল পেজে। সম্ভবত এই প্রথম এত কুৎসিত ভাষায় আসক্তি প্রকাশের স্পর্ধা দেখানো হল গানের দুনিয়ার কোনও শিল্পীকে।
পোস্ট ঘিরে তাই সবাই সোচ্চার, বাংলা কি ভুলতে বসেছে শিল্প-সংস্কৃতি?
ইমন যদিও সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিবাদী হয়েছেন সোশ্যাল পেজে, লিখেছেন-- ‘‘মেয়েদের একটু সম্মান করতে শিখুন! বলতে বাধ্য হচ্ছি, আপনার মা, বোনকে কেউ এই ধরনের কথা বললে আপনার কেমন লাগতো সেটা একটু বুকে হাত দিয়ে ভাবুন!’’
আরও পড়ুন- খড়কুটোর তিনকন্যা রিয়েল লাইফেও প্রাণবন্ত, সামনে এল নাচের ভিডিয়ো
এর পরেই অনুরোধ জানান তাঁর বাকি অনুরাগীদের, ‘‘আপনারা কি অসভ্যতা আটকাতে এঁকে ব্লক করবেন? দয়া করে নালিশ জানাবেন? উনি কী করবেন সেটা বলেছেন। আপনারা কী করতে পারেন দয়া করে দেখিয়ে দিন!!’’ এ প্রসঙ্গে ইমন আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, ‘‘সত্যিই হতবাক! যদিও এখন এমন লোকজনেই শহর ভরা। এঁরা পোশাক দেখে এই ধরনের মন্তব্য করেন না। এঁদের মানসিকতাই বিকৃত।’’
A post shared by Iman Chakraborty (@iman_chakraborty) on
ইমনের মতে, তিনি যা বলার বলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনর্থক কাদা ছোড়াছুড়িতে আগ্রহী নন। যুক্তি, সোশ্যাল পেজের অশালীনতার জবাব সেখানেই দেওয়া উচিত। দিয়েওছেন তিনি। একটি ফেক প্রোফাইল থেকে এই মন্তব্য এসেছে বলে দাবি তাঁর। ইনস্টাগ্রামে মুখ খুলতেই শিল্পী পাশে পেয়েছেন অনুরাগীদের। জনৈক নেটাগরিক ইমনকে সমর্থন জানিয়ে লিখেছেন, ‘‘ইমন, এরকম জন্তু জানোয়ার ব্লক করতে করতে ক্লান্ত হয়ে যাবে। তুমি আবার উত্তরও দিয়েছ। ওকে একটু মিষ্টি করে নিজের পাড়ায় ডেকে নিতে পারতে, তারপর তোমার বন্ধুরাই ওর পশমের মাফলার উপহার দিত তোমায়।’’
আরও পড়ুন- খড়কুটোর তিনকন্যা রিয়েল লাইফেও প্রাণবন্ত, সামনে এল নাচের ভিডিয়ো
যাঁর গানে ইমনের জাতীয় পুরস্কার জয়, কী বলছেন সেই সুরকার-গীতিকার-শিল্পী অনুপম রায়? ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ‘‘এখনকার নেট দুনিয়ায় এ রকম ঘটনা আকছার ঘটছে। মহিলাদের লক্ষ্য করে এই ধরনের মন্তব্য বেশি আসে। তিনি যদি তারকা হন তা হলে দ্রুত টার্গেট হয়ে যান। শুধু বলিউড নয়, টলিউডও এই সমস্যায় ভুগছে।’’
অনুপমের অভিযোগ রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি। দাবি, যে ভাবে তাঁরা প্রকাশ্যে একে অন্যকে ‘ঘৃণা’ ছুঁড়ে দিচ্ছেন তাতে এই ধরনের মানসিকতা প্রশ্রয় পাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনও সেন্সরশিপ না থাকায় দোষ করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন সবাই। ফলে, অশালীনতার এত বাড়-বাড়ন্ত।
প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেই এই ধরনের অশালীনতার মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়। তাঁর ছবি দেখে কদর্য ইঙ্গিত করেছিলেন বাংলাদেশের এক নেটাগরিক। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে অভিনেত্রী নালিশ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনারের কাছে।