Silajit Majumder

Silajit-Srijit: অ্যালবামের নাম ব্যবহারের আগে ফোন করেননি কেন: শিলাজিৎ।। শিলুদা ফোন ধরে গালিগালাজ করুন: সৃজিত

‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’ নামবিভ্রাট নিয়ে সৃজিত-শিলাজিৎ তরজা শুরু। কী বললেন দুই শিল্পী?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ২১:১২
Share:

‘এক্স ইজ ইক্যুয়াল টু প্রেম’ নিয়ে সৃজিত-শিলাজিৎ তরজা

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’-এর পোস্টার মুক্তি পেতেই নামবিভ্রাটে জড়ালেন পরিচালক। ঠিক ২১ বছর আগে এই একই নামে শিলাজিৎ মজুমদারের একটি গানের অ্যালবাম প্রকাশ পেয়েছিল। সেই নিয়ে তরজা শুরু দুই শিল্পীর মধ্যে। আনন্দবাজার অনলাইনকে শিলাজিৎ জানালেন, তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত নাম ব্যবহার করার আগে এক বার তাঁর সঙ্গে কথা বলে নিতে পারতেন সৃজিত। তাঁর জবাবে সৃজিত জানালেন, তিনি ফোন করেছিলেন। কিন্তু গীতিকার তাঁর ফোনে সাড়া দেননি। যদিও পরিচালকের বক্তব্য, সৌজন্যের খাতিরে ফোন করছিলেন তিনি। অনুমতি নেওয়ার জন্য নয়।

Advertisement

কী ঘটল দুই শিল্পীর মধ্যে? কী জানালেন তাঁরা?

২০০০ সাল। ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’ গানের অ্যালবাম মুক্তি পায়। সুরকার, গীতিকার এবং গায়ক শিলাজিৎ মজুমদার। তার পরে ২১ বছর কেটে গিয়েছে। এই ২১ বছরে সেই অ্যালবামের ‘ঝিনটি’-র মতো একাধিক গান এখনও মানুষের ঠোঁটে। অন্য দিকে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবির ঘোষণা হল সম্প্রতি। আগামী প্রজন্মের প্রেমের এই ছবির নাম ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’। অর্জুন চক্রবর্তী, মধুরিমা বসাক, অনিন্দ্য সেনগুপ্ত, শ্রুতি দাস অভিনয় করবেন শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস প্রযোজিত এই ছবিতে। প্রথম পোস্টার মু্ক্তি পেতেই রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে নেটমাধ্যমে। এরই মাঝে শিলাজিৎ তাঁর ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন। সরাসরি কারও নাম না নিয়ে তিনি জানালেন, অনেক পরিশ্রম করে পাশ করানো সেই নাম এখনও লোকে ‘খাচ্ছে’। তা দেখে তিনি খুশি। শিলাজিতের অনুরাগীরাও সেই পোস্টে পরিচালক সৃজিতের সমালোচনায় মেতেছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন গায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘‘আমি খুশি। বিখ্যাত মানুষরা আমার দেওয়া নাম ব্যবহার করছেন, তার মানে আমার মতো ছোট গীতিকার এখনও তাঁদের মাথার মধ্যে বাস করে।’’ শিলাজিৎ সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিলেন, সৃজিতের ছবিতে তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত নাম ব্যবহার করার জন্য তিনি কোনও কৃতিত্ব চান না। টাকার প্রসঙ্গ তুললে তিনি বলেন, ‘‘সৃজিতের কাছ থেকে আমার কোনও টাকাপয়সাও চাই না।’’ কিন্তু সৃজিতকে উদ্দেশ্য করে তাঁর বক্তব্য, ‘‘হেমলক সোসাইটির সময় সেই পরিচালক ততটাও বিখ্যাত হননি। তাই নিজের দ্বিতীয় ছবিতে গান গাওয়ানোর জন্য আমার কাছে এসেছিলেন। কিন্তু এখন তো তিনি বিশাল বড় মাপের মানুষ। আমার প্রয়োজন কেন পড়বে? আমার অ্যালবামের নাম নিয়েও তো আমাকে জানাননি কিছু। কেনই বা জানাবেন!’’

শিলাজিৎ মজুমদারের গানের অ্যালবামের পোস্টার

সৃজিত অবশ্য আনন্দবাজার অনলাইনকে অন্য কথাই বললেন। তাঁর কথা থেকে জানা গেল, ‘এক্স ইক্যুয়ালস টু প্রেম’ ছবির নাম তিনি পেশ করেছিলেন ইমপা (ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন)-র কাছে। সেখান থেকে কোনও বাধা আসেনি। অনুমতি পাওয়ার পরেই তিনি এই ছবির নামকরণ করেন। এই প্রসঙ্গেই একটি উদাহরণ দেন সৃজিত। ‘গ্যাংস্টার’ ছবিতে গীতিকার প্রসেন ‘তোমাকে চাই’ গান লিখেছিলেন। ২০১৭ সালে ‘তোমাকে চাই’ বলে একটি ছবিও মুক্তি পেয়েছিল। সৃজিতের কথায়, ‘‘সেই সময়ে প্রযোজকরা কি কবীর সুমনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন? এটা তো একটা শব্দবন্ধ। সেটা যে কেউ ব্যবহার করতে পারে। এটা নিয়ে কারও কোনও অসুবিধা থাকতে পারে না। কারণ বাংলা ভাষার শব্দের উপর কারও সত্ব নেই।’’ সৃজিত জানালেন, সৌজন্যের খাতিরে তিনি শিলাজিৎদাকে ফোন করেছিলেন। শনিবার শিলাজিতের পোস্ট দেওয়ার পরে তো বটেই, তার আগেও তিনি গীতিকারকে ফোন করেছিলেন বলে জানালেন। কিন্তু ফোন ধরেননি শিলাজিৎ। তবে সৃজিতের কথায়, ‘‘আমি যে ছবির এই নামকরণ করেছি শুধুমাত্র এই কথা জানানোর জন্যই ফোন করেছিলাম। অনুমতি নেওয়ার জন্য নয়। কারণ আমার আর শিলুদার সম্পর্কটাই সে রকম নয়। ২০০৭ সাল থেকে চিনি আমি তাঁকে। আমি ভেবেছিলাম তিনি খুশি হবেন তাঁর দেওয়া নাম ব্যবহার করা হয়েছে শুনে। কিন্তু আমার ফোন না ধরলে আমি কেমন করে জানাব তাঁকে?’’

শিলাজিৎ জানিয়েছেন, ‘‘সৃজিত সম্ভবত আমাকে ফোন করছিলেন। কিন্তু আমি নম্বর চিনতে পারিনি। কিন্তু নম্বর চিনলেও ধরতাম কিনা, সেটা একটা প্রশ্ন। কারণ আমি বিখ্যাত মানুষজনের থেকে দূরত্ব রাখতেই পছন্দ করি। আর সৌজন্যের খাতিরে ফোন করার কী দরকার? সৃজিত সম্ভবত এই কথাগুলো বলতেন ফোন ধরে, ‘আরে শিলুদা, তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম’ বা ‘আমার ছবিতে তোমার জন্য একটা গান ভেবেছি!’ কিন্তু আমার কিছু চাই না, এতটুকু বলতে পারি।’’

সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবির পোস্টার

এর উত্তরে কী বললেন সৃজিত? সৃজিত জানিয়েছেন, গান নিয়ে নতুন করে কিছু ভাবার দরকার নেই। তাঁর ছবির গানের রেকর্ডিংও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে যদি কখনও শিলাজিতের শৈলীর গান বানানো হয় ছবির জন্য, তিনি অবশ্যই তাঁর কাছেই যাবেন। সৃজিতের কথায়, ‘‘শিলুদার গানের শৈলী অন্য ধরনের। যে কোনও গান কী ভাবে গাওয়াব?’’

সৃজিত চান, গীতিকারের এই অভিমান ভেঙে যাক। কারণ যাই হোক না কেন, ‘শিলুদা’ তাঁর খুব কাছের মানুষ। ফোন ধরে যদি শিলাজিৎ তাঁকে গালিগালাজ করতেন, তা হলে বরং খুশি হতেন পরিচালক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement