তরুণ এক অভিনেতার এ হেন মর্মান্তিক পরিণতি বিচলিত করেছে সুজিতকে।
সবাই সবটা পারে না। রবিবার দুপুরের পর থেকে খানিক চুপ করে গিয়েছিলাম। সুশান্ত কেন পারল না? ও রকম সম্ভাবনাময় অভিনেতা। হাসিতেই তো ওর জীবনের বেঁচে থাকার আনন্দ আছে। তবে? ওর কোনও গডফাদার ছিল না। পটনার মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে সেখান থেকে মুম্বইয়ের স্টার। এই গ্ল্যামার, চারপাশ, আলো, অন্ধকার— সবটা হাতের তালুতে ধরে রাখতে পারা কঠিন কাজ। এর জন্য পথপ্রদর্শক চাই। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে গাইডেন্স মাস্ট। এই প্রেশারের সঙ্গে কেমন করে বাঁচতে হয় সেটা সুশান্তকে কেউ শিখিয়ে দেয়নি। আসতে পারে ব্যর্থতা, একাকিত্ব... কিন্তু ওই সময়টাই সবচেয়ে সত্যি নয়। তার পরেও অনেক কিছু আসবে। থাকবে।
ছোট ছেলেমেয়েরা যেমন বাবা-মা পরিবারের বা বড় মানুষের দেখানো পথে বড় হয় তেমনই সুশান্তের সে রকম কোনও মানুষের দরকার ছিল। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এটা লাগে। যাতে বাইরে থেকে মুম্বইতে লড়াই করতে আসা ও কোথাও হোঁচট খেলে ওর হাতটা কেউ টেনে তুলতে পারে। দুর্ভাগ্য, সুশান্ত সে রকম কাউকে পায়নি। তাই বোধহয় এই কাজ করতে বাধ্য হল। মুম্বইতে থাকার মাসুল দিতে হল ওকে।
আমি ঠিক এই কারণেই মুম্বইয়ে থাকতে চাইনি কোনও দিন। ওখানে থাকলে চোখ ধাঁধিয়ে যেতেই পারে। মনে হতে পারে, কোথায় রাস্তা? খাদই বা কোথায়? সবসময় বোঝা যায় না। যারা পারে তারা পারে। আমি নিজে ওই প্রেশার নিতে চাইনি। খুব দামি গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে ভোর হলেই কলকাতার কোনও এক মাঠে সদলবলে ফুটবল খেলতে পারার মধ্যেই আমার আনন্দ। বরাবর পার্টি, নাইট আউট এ সবের বাইরে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চেয়েছি আমি। সেলিব্রিটি, ব্র্যান্ডের পেছনে ছোটাই যায়, কিন্তু তার ফলে তৈরি হওয়া পরিস্থিতির সঙ্গেও লড়াইয়ের মানসিকতা গড়ে তুলতে হয়। সুশান্তকে কেউ বলে দেয়নি, শেখায়নি এগুলো। কেউ যদি ওকে বলে দিত বাইরের আনন্দ না খুঁজে ভেতরের আনন্দ খোঁজো... তা হলে?
আমি আর ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না...
আরও পডু়ন: সুশান্তের আত্মহত্যার পিছনে পেশাগত রেষারেষি! তদন্ত হবে, জানালেন মন্ত্রী
আরও পডু়ন: অপূর্ণই থেকে গেল সুশান্তের এই ইচ্ছেগুলি, ৩৪-এ সব শেষ