(বাঁ দিকে) শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শ্রদ্ধা জানাতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পৌঁছলেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, জিনিয়া সেন এবং উইন্ডোজ় প্রযোজনা সংস্থার সদস্যেরা। সেখান থেকে আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে কথা বললেন প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতা। তাঁর কথায়, “দেখলাম, অন্তিম শয়ানে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। লাল গোলাপের মালা, পাপড়িতে সাজানো তাঁর শেষশয্যা। একটা যুগ অস্তমিত।” শিবপ্রসাদ জানেন, কমরেডের অন্তিম সাজ মানেই দলীয় লাল পতাকা আর টকটকে লাল গোলাপ। তাই শ্রদ্ধা জানাবেন বলে তিনিও লাল গোলাপ বেছে নিয়েছিলেন।
শেষ বারের মতো বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে দেখতে তিনি ফিরে গিয়েছেন অতীতে। তাঁর কথায়, “বার দুয়েক একেবারে সামনাসামনি হয়েছি। সেই স্মৃতিই এখন মনে পড়ছে। আমি তখন একটি বেসরকারি চ্যানেলের কর্মী। ওখানে একটি টক শো-তে তিনি আমন্ত্রিত অতিথি।”একপ্রস্ত শুটিংয়ের পর ছোট্ট অবসর। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ল্যাপেল, মাইক সরিয়ে একটু খোশমেজাজে। অভ্যাসবশত ধূমপানের জন্য সিগারেট, লাইটার বার করেছেন। তার পরেই সজাগ। জিজ্ঞেস করলেন, সেটে বসে ধূমপানের অনুমতি আছে কি না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে কে নিষেধ করবে? সকলে একবাক্যে মেনে নিয়েছিলেন। ব্যতিক্রম নন্দিতা রায়। তিনিও তখন ওই চ্যানেলে। নরম গলায় জানিয়েছিলেন, ধূমপান করতে গেলে সেট থেকে বেরিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় যেতে হবে। প্রযোজক-পরিচালক জানালেন, বুদ্ধবাবু অনুরোধ মেনে সে দিন তা-ই করেছিলেন। উঠে বাইরে গিয়ে ধূমপান করে সেটে ফিরেছিলেন।
দ্বিতীয় বারের বুদ্ধদেব-শিবপ্রসাদের সাক্ষাৎ নন্দনে। সেখানে সেই বেসরকারি চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে গিয়েছিলেন। আমন্ত্রণ জানিয়ে যখন শিবপ্রসাদ এবং তাঁর সঙ্গীরা বেরিয়ে আসছেন তখন বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। বাধ্য হয়ে শিবপ্রসাদেরা বাইরে দাঁড়িয়ে। বৃষ্টি থামার অপেক্ষায়। প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সেখান দিয়ে যাওয়ার সময় শিবপ্রসাদদের দেখে ভিতরে গিয়ে বসতে বললেন। সঙ্গে গরম চা আর বিস্কুটের ব্যবস্থাও করে দিয়েছিলেন! সে কথা মনে করে শিবপ্রসাদের দাবি, “সৌজন্য আর আন্তরিকতার জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি ছিলেন তিনি।” নন্দিতা-শিবপ্রসাদের ছবি দেখেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য? জবাবে পরিচালকের বক্তব্য, “জানি না দেখেছেন কিনা। আমাদের অনেক বার ইচ্ছে হয়েছিল, ওঁকে আমন্ত্রণ জানাব। সব সময় ব্যক্তিত্বের একটা বলয় ঘিরে থাকত তাঁকে। তাই ভয়ের চোটে ওঁর কাছে যেতে পারিনি।”